November 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, March 27th, 2022, 7:37 pm

ডাবল সেঞ্চুরি হলোনা এনামুলের, নাসিরের ব্যাটে ঝড়

অনলাইন ডেস্ক :

ডাবল সেঞ্চুরি ছিল দৃষ্টি সীমানায়। কিন্তু প্রবল সম্ভাবনা জাগিয়েও দুইশ স্পর্শ করা হলো না এনামুল হকের। ১৬ রানের জন্য ধরা দিল না বড় এক অর্জন। তার এই আক্ষেপের দিনে ঝড় তুললেন নাসির হোসেনও। শতরানের জয় পেল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ম্যাচে রোববার (২৭ মার্চ) শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে ১১১ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ৩৮৮ রান করে প্রাইম ব্যাংক। যা এবারের আসরের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। প্রিমিয়ার লিগে সব মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৭-১৮ মৌসুমে প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ৩৯৩ রান করেছিল আবাহনী। বিশাল রান তাড়ায় কখনও জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে না পারা শাইনপুকুর ৮ উইকেটে করে ২৭৭ রান। ওপেনিংয়ে নেমে ১৮৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা এনামুল। ১৪২ বলের ইনিংসটি সাজান তিনি ৮ ছক্কা ও ১৮ চারে। নাসির ৫ ছক্কা ও ৩ চারে অপরাজিত থাকেন ৩২ বলে ৬১ রান করে। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এনামুলের ১৮৪ বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের তৃতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৮-১৯ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগে দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন সৌম্য সরকার। আবাহনীর হয়ে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাবের বিপক্ষে খেলেছিলেন অপরাজিত ২০৮ রানের ইনিংস। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে আবাহনীর বিপক্ষে ২০১৭ সালে রকিবুল করেছিলেন ১৯০ রান। চলতি প্রিমিয়ার লিগে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন এনামুল। এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচ খেলে করলেন দুটি করে ফিফটি ও সেঞ্চুরি। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে খেলতে নেমে এনামুল করেন আত্মবিশ্বাসী শুরু। ম্যাচের প্রথম দুই বলে আসাদউজ্জামানকে মারেন চার। এই পেসারের পরের ওভারের প্রথম বলে পুল করে উড়িয়ে ফেলেন সীমানার বাইরে। এরপর কেবল এগিয়ে যান সামনে, আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ফিফটিতে পা রাখেন তিনি ৩৭ বলে। খুনে ব্যাটিংয়ে ৭৬ বলে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন এনামুল। লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে যা তার চতুর্দশ সেঞ্চুরি। শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে তার উদ্বোধনী জুটি শতরান স্পর্শ করে ৮০ বলে। যেখানে অগ্রণী ছিলেন এনামুলই। শাহাদাতকে ফিরিয়ে ১৬২ রানের জুটি ভাঙেন সিকান্দার রাজা। জিম্বাবুয়ের স্পিনিং অলরাউন্ডারকে ফিরতি ক্যাচ দেন ৫ চার ও এক ছক্কায় ৪৭ রান করা শাহাদাত। পরে অভিমান্যু ঈশ্বরনকে বোল্ড করে দেন রাজা। এক প্রান্তে নিজের মতো খেলে যান এনামুল। আগের সেরা ১৫০ রান ছাড়িয়ে যান ১২০ বলে। তার রান যখন ১৮২, তখনও বাকি ১০ ওভার। যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন তিনি, মনে হচ্ছিল ডাবল সেঞ্চুরি কেবল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু তা হতে দেননি আসাদউজ্জামান। এলবিডব্লিউ করে থামান এনামুলকে। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় থাকা মোহাম্মদ মিঠুনকেও পরে বিদায় করেন আসাদউজ্জামান। অন্য প্রান্তে ঝড় তোলেন নাসির। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ২৭ বলে ফিফটি করেন তিনি, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে যা তার ৩৩তম। বড় রান তাড়ায় ৪২ রানেই তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে শাইনপুকুর। যেখানে যুব বিশ্বকাপজয়ী বাঁহাতি স্পিনার রকিবুল হাসানের শিকার দুটি। কিছুক্ষণ দলকে টানলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি মাহিদুল। তার স্টাম্প এলোমেলো করে দেন রেজাউর রহমান। এরপর প্রতিরোধ গড়েন রাজা ও সাজ্জাদুল হক। দুইজনেই পঞ্চাশে পা রাখেন ৫৪ বলে। তাদের ১১৮ রানের এই জুটি ভাঙেন রকিবুল। তার বাঁহাতি স্পিনে বোল্ড হয়ে ফেরেন ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ৫৬ রান করা সাজ্জাদুল। রাজা এগিয়ে যান আরও অনেকটা পথ। সম্ভাবনা জাগান সেঞ্চুরির। কিন্তু তার আশা ভেঙে দেন মেহেদি হাসান। এই অফ স্পিনারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ৪ ছক্কা ও ৯ চারে ৯৮ রান করে সাজঘরে ফেরত যান রাজা। এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেনি শাইনপুকুর। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে ৪৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন রকিবুল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৫০ ওভারে ৩৮৮/৫ (এনামুল ১৮৪, শাহাদাত ৪৭, অভিমান্যু ৩০, মিঠুন ৩৮, নাসির ৬১*, কাপালী ৮, মেহেদি ১*; আসাদউজ্জামান ১০-০-৮৮-২, আলাউদ্দিন ১০-১-৬৯-১, হাসান মুরাদ ৯-০-৭৩-০, রাহাতুল ৭-০-৪০-০, সাজ্জাদুল ১-০-১২-০, নাঈম ৪-০-৩৫-০, রাজা ৮-০-৪১-২, আনিসুল ১-০-১৫-০)
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৭৭/৮ (অভিশেক ১৮, আনিসুল ১৮, তাসামুল ৩, মাহিদুল ২৭, রাজা ৯৮, সাজ্জাদুল ৫৬, নাঈম ১৩, আলাউদ্দিন ৭, রাহাতুল ২৮*, হাসান মুরাদ ৩*; মনির ১০-০-৪৮-১, রবিউল ৬.৩-০-৪১-০, রকিবুল ১০-১-৪৫-৪, কাপালী ৬-০-৫০-১, মেহেদি ১০-০-৫০-১, রেজাউর ৭-০-৪০-১, শাহাদাত ০.৩-০-৩-০)
ফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ১১১ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: এনামুল হক