নিজস্ব প্রতিবেদক:
সড়কে গাড়ির সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বিগত ২০১০ সালে দেশে ১৪ লাখ ২৩ হাজার ৩৬৮টি রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যানবাহন ছিল। এক যুগ পর ওই সংখ্যা ৫১ লাখ ১০ হাজার ৭৮৬টিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন দেয়া নিয়ে এখনো কোনো ধরনের সীমা নির্ধারণ করেনি। ফলে গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করলেই তা মিলছে। ফলে দেশের বিভিন্ন সড়কে বাড়ছে যানজট। আবার গাড়ির তুলনায় দক্ষ চালকও কম। ওই কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনাও। আবার রাস্তায় বৈধ গাড়ির পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশন বিহীন অবৈধ গাড়িও বেড়েছে। তাতেও সড়ক, পরিবেশ ও জনজীবনে চাপ বাড়ছে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের সড়কে প্রতিদিন গড়ে নতুন ৫০টি প্রাইভেটকার এবং ১৪০৯টি করে মোটরসাইকেল বাড়ছে। তাছাড়া প্রতিনিয়ত বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, অটোরিকশা, ট্রাকের সংখ্যাও বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দেশের সড়কে প্রায় এক লাখ গাড়ি বেড়েছে। বিআরটিএ থেকে চলতি বছরের শুরুর দুই মাসেই ৯৬ হাজার ৮৭৮টি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে মোটরসাইকেল রয়েছে ৮৪ হাজার ৫৮৩টি, প্রাইভেটকার ৩ হাজার ১২৩টি, বাস ৬৪০টি, ট্রাক ৯৩৫টি, জিপ ১ হাজার ৬৫৪, মাইক্রোবাস ১ হাজার ৩২৫টি, পিকআপ ১ হাজার ৭৫১টি, কাভার্ড ভ্যান ৯২১টি।
সূত্র জানায়, দেশে এখন নিবন্ধন পাওয়া ৩ লাখ ৬ হাজার ১৪৮টি অটোরিকশা আছে, মোটরসাইকেল ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪৮৮টি, প্রাইভেটকার ৩ লাখ ৮৫ হাজার ১১৩টি, মাইক্রোবাস ১ লাখ ৯ হাজার ৬৯৪টি, পিকআপ ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬০৪টি, ট্রাক ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৩টি, বাস ৪৯ হাজার ৬৭৩টি, কাভার্ড ভ্যান ৪১ হাজার ৭৯৪টি।
এদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, বিআরটিএ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যানবাহনের নিবন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। দেশের কোন সড়কে কী ধরনের গাড়ি চলছে, কী পরিমাণ গাড়ি চলছে তা নিয়ে কোনো গবেষণা নেই। বরং বন্যার পানির মতো শহরে গাড়ি বাড়ছে। এর ফলে সরকার যে পরিমাণ পাচ্ছে, তারচেয়ে অনেক বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। গাড়ি বাড়ায় দুর্ঘটনাও বাড়ছে। আর ওই সংখ্যাটা যখনই ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যাবে তখন বিশৃঙ্খলা তৈরি হবেই।
অন্যদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব খন্দকার মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, সড়কে কী পরিমাণ গাড়ি আছে এবং সড়কের ব্যবস্থাপনাটা কেমন হবে ওই দুটো বিষয় যদি সমন্বয় না করা যায় তাহলে যানজটের কবল থেকে মুক্তি মিলবে না। ঢাকায় কী পরিমাণ যানবাহনের ক্যাপাসিটি রয়েছে তা নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। আর ক্যাপাসিটির বাইরে একটি যানবাহনও যেন নিবন্ধন না পায় তাও নিশ্চিত করা জরুরি।
গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেয়ার বিষয়ে বিআরটিএ’র পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব ই রব্বানী জানান, গাড়ি কেনার পর বৈধ কাগজপত্র নিয়ে যারা আসছেন তাদেরই বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশন দেয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কোনো সংখ্যা বিবেচনা করা হচ্ছে না। এমন কোনো নির্দেশনাও নেই। যারাই আবেদন করছেন, কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের রেজিস্ট্রেশন দেয়াা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকার থেকে যদি কোনো নির্দেশনা আসে তবে সেটা নিয়ে বিআরটিএ কাজ করবে।
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২