নিজস্ব প্রতিবেদক:
পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। দামের জন্য টিসিবির পেঁয়াজে আগ্রহ থাকলেও মান খারাপ হওয়ায় ক্রেতারা অন্য মালামাল নিলেও পেঁয়াজ নিতে চায় না। কারণ টিসিবির পেঁয়াজ অত্যন্ত নিম্নমানের। অনেক পেঁয়াজ পচা। ভালো পেঁয়াজের সঙ্গে খারাপ ও পচা মিলিয়ে বিক্রি করছে টিসিবির পরিবেশকরা। সেজন্যই টিসিবির পেঁয়াজ নিতে চায় না ক্রেতারা। আর টিসিবির পরিবেশকরা নিজেদের বরাদ্দের সব পণ্য বিক্রির জন্য পেঁয়াজ ছাড়া অন্যান্য পণ্য দিচ্ছে না। এ নিয়ে পরিবেশকের বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে ক্রেতাদের নিয়মিতই বসচা চলছে। পচা পেঁয়াজের কারণে কেউ নিতে না চাইলেও টিসিবি বাধ্যতামূলকভাবে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে পেঁয়াজ দিচ্ছে। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। ফলে পঁচা পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে পড়েছে টিসিবি। ভুক্তভোগী ক্রেতা এবং টিসিবি পরিবেশকদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে বাজারে দেশি পেঁয়াজ উঠায় পণ্যটির দাম অনেকটাই কমেছে। বর্তমানে বাজারে এক কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সেখানে টিসিবি ২০ টাকা কেজি দরে বিদেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছে। তারপরও টিসিবির পেঁয়াজ নিতে আগ্রহী নন ক্রেতারা। কারণ টিসিবি পরিবেশকদের গুদাম থেকে যে পেঁয়াজ দেয়া হয় তার একটা অংশই পচা। পরিবেশকরা বাধ্য হয়ে ক্রেতাদের কাছে সেগুলো বিক্রি করে। কারণ অবিক্রিত পেঁয়াজ টিসিবি ফেরত নেয় না। তখন পরিবেশককে লোকসান গুনতে হয়। টিসিবি ভালো পেঁয়াজ সরবরাহ করলে কিংবা অবিক্রিত থাকবে সেগুলো ফেরত নিলে ক্রেতাদের সাথে পরিবেশকদের সাথে ক্রেতাদের নিয়মিত ঝামেলা হতো না।
সূত্র জানায়, টিসিবির পরিবেশকরা গুদাম থেকে যে পেঁয়াজ পেয়ে থাকে তাতে মাঝে মাঝে ভালো পেঁয়াজ বেশি থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ পেঁয়াজই কালো দাগ পড়া। ওপরের অংশ ফেলে খেতে হবে। কিছু বস্তায় ভালো বড় পেঁয়াজ থাকে। পরিবেশকরা চেষ্টা করে সবাইকে ভালো-খারাপ মিলিয়ে দিতে। কিন্তু মানুষ টাকা দিয়ে নষ্টটা নিতে চায় না।
সূত্র আরো জানায়, টিসিবির প্রতি ডিলারকে বর্তমানে প্রতিদিন সাড়ে ৭০০ কেজি পেঁয়াজ, ২৫০ কেজি ছোলা, ৫০০ লিটার তেল, ৫০০ কেজি করে চিনি ও ডাল এবং ২৫০ কেজি খেজুর বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। টিসিবি খোলা ট্রাকের বিক্রয় কার্যক্রমে একজন ক্রেতাকে দুই লিটার তেল ২২০ টাকা, দুই কেজি চিনি ১১০ টাকা, দুই কেজি মসুর ডাল ১৩০ টাকা, চার কেজি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, দুই কেজি ছোলা ১০০ টাকা এবং এক কেজি খেজুর ৮০ টাকা প্যাকেজ হিসেবে নিতে হচ্ছে। প্যাকেজ মূল্য ৭২০ টাকা। পেঁয়াজ ছাড়া অধিকাংশ ক্রেতা প্যাকেজের অন্যান্য পণ্য নিতে আগ্রহী। কিন্তু ক্রেতাদের পেঁয়াজসহ প্যাকেজ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এদিকে এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ূন কবির জানান, সঙ্কটের আশঙ্কায় টিসিবি বেশ কয়েক মাস আগে পেঁয়াজ আমদানি করে। ওসব পেঁয়াজ বিক্রি না করে উপায় নেই। সব পেঁয়াজ বিদেশ থেকে ফ্রিজিং করে আনা। ওই পেঁয়াজ যখন বস্তা থেকে খোলা হয় তখন কিছুটা ভেজা থাকে। কোনো পেঁয়াজ পচা থাকলে সেটা বাদ দিয়ে বিক্রির জন্য পরিবেশকদের বলা হয়েছে। পচা পেঁয়াজ বেছে আলাদা করে বাকিগুলো বিক্রির নির্দেশনা দেয়া আছে। নষ্ট বা পচা পেঁয়াজ গ্রাহকদের কাছে বিক্রি না করার জন্য অতিরিক্ত পেঁয়াজও পরিবেশকদের দেয়া হয়।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ