ইয়াছিন রনি, ফেনী:
২০১৮ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলি থানায় থাকাকালীন ছাত্রলীগ নেতা মামুন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৭ আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। যা আলাদা আলাদা ভাবে দন্ডিত হবে। অন্যদিকে, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ১ বছর কারাদন্ড ভোগ করবেন।
বুধবার (২০ এপ্রিল) সকালে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, কর্ণফুলীর শাহমীরপুর গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে মোঃ আজম (২৬), একই গ্রামের মৃত নুরুচ্ছাফা প্রকাশ সাহাব মিয়ার ছেলে মোঃ ফারুক প্রকাশ আশিক (২৬), আবু তাহের এর ছেলে আলী আজগর প্রকাশ হৃদয় (২০), মকুবল আহম্মদের ছেলে মো. ওমর উদ্দীন (২৪), মোঃ সৈয়দ এর ছেলে শওকত হোসেন প্রকাশ শাহনুর (২২), এস এম আশরাফুল আলম সুমন (২৫) ও মো. পারভেজ ২৭)। এরা দুজন পলাতক রয়েছে। তারা গ্রেফতার হওয়ার পর সাজা কার্যকর হবে । বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী আইয়ুব খাঁন ।
দ্রুত বিচার আদালতের মামলা নং-৫/২০ ও কর্ণফুলী থানার মামলা নং-৭২ (৯) ১৮, ধারা ৩০২ দন্ডবিধি। এ মামলায় ঘটনার বিস্তারিত স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন আসামি মো. ফারুক প্রকাশ আশিক ও আলী আজগর প্রকাশ হৃদয়।
চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি ফেনী দাগনভূঞা থানার ওসি মো. হাসান ইমাম তদন্ত করেন। তিনি বলেন, “আমি কর্ণফুলী থানায় কর্মরত থাকাকালে অল্প সময়ের মধ্যে পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই এবং তদন্ত করে মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করে কোর্টে চার্জশিট প্রদান করি। পুরো মামলাটি আমি নিজেই তদন্ত করি। সম্পূর্ণ তদন্ত শেষে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ৭ জনকে আসামি করে মামলার চার্জশিট দাখিল করি।”
তথ্যমতে, এ মামলার চার্জশিট প্রদান করেন ২০১৯ সালের ১১ মার্চ। চার্জ গঠন হয় ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি। মোট সাক্ষী ছিলেন ২৭ জন। সাক্ষী প্রদান করে ১৮ জন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ৪ বছর আগে ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুর গ্রামের জমাদর পাড়ায় দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ছাত্রলীগকর্মী মামুনুর রশীদ মামুনকে হত্যা করা হয়। ওই সময় মামুনের সঙ্গে থাকা আরেক ছাত্রলীগ কর্মী আজিজ গুরুতর আহত হন। ঘটনার এক দিন পর নিহত মামুনের বড় ভাই মোহাম্মদ ইয়াসিন বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী আইয়ুব খাঁন বলেন, মামলায় গ্রেফতার আসামীদের জবানবন্দি ও স্বাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দোষীদের দণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
নিহত মামুনের বড় ভাই মামলার বাদি মোঃ ইয়াছিন বলেন, আদালত সব কিছু বিবেচনা করে এ রায় প্রদান করেছেন। তাতে আমরা অসন্তুষ্ট নয়। হয়তো দুই তিন জনের যদি ফাঁসির রায় হতো স্বস্তি পেতাম।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি