নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদের আগে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। ফলে ৭০০ টাকার নিচে এখন গরুর মাংসের কেজি পাওয়া যাচ্ছে না। গরুর মাংস ও ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম। সেই সঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। তবে সবজি কিনতে ক্রেতাদের চড়া দাম দিতে হচ্ছে। শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী গরুর মাংসের কেজি বিক্রি করছেন ৭০০ টাকা। কোনো কোনো ব্যবসায়ী ৭১০ টাকা কেজিতেও গরুর মাংস বিক্রি করছেন। আর মহল্লার সাপ্তাহিক ব্যবসায়ীরা গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৭২০ থেকে ৭৩০ টাকা। এ ছাড়া একটি সুপারশপে গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭২৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংসের কেজি ছিল ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা। রামপুরায় ৭৩০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি করা ফরজ আলী বলেন, বাজারে ৭০০ টাকা কেজি যে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে তা পানিতে ভেজানো। আমাদের মাংস টাটকা। একফোটা পানি নেই। এই মাংসের স্বাদ অন্যরকম। বাজারের মাংসে এই স্বাদ পাওয়া যাবে না। বাজার থেকে ৭০০ টাকা দিয়ে গরুর মাংস কেনার থেকে আমাদের মাংস সাড়ে ৭০০ টাকা দিয়ে কেনা লাভ। তারপরও আমরা ৭৩০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। খিলগাঁওয়ে ৭০০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি করা খায়রুল হোসেন বলেন, কয়েকদিন ধরে গরুর খরচ বেড়ে গেছে। এ কারণে মাংসের দাম বেড়েছে। যদি পরিস্থিতি এমন থাকে সামনে গরুর মাংসের কেজি সাড়ে ৭০০ টাকা হয়ে যেতে পারে। গরুর মাংসের পাশাপাশি বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। তবে সোনালি মুরগির কেজি গত সপ্তাহের মতো ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. ইউনুস বলেন, আর কয়েকদিন পরই ঈদ। ঈদের আগে আজ (গতকাল) শেষ গতকাল শুক্রবার। তাছাড়া বাজারে এখন মুরগির সরবরাহ কম। আমাদের ধারণা এ কারণেই ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। ঈদের পর মুরগির দাম কিছুটা কমতে পারে। এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে হুট করে বেড়ে যাওয়া গাজরের দামে এ সপ্তাহে কোনো পরিবর্তন আসেনি। গত সপ্তাহের মতো গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। গাজরের মতো অপরিবর্তিত রয়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। গত সপ্তাহের মতো ব্যবসায়ীরা বেগুনের কেজি বিক্রি করছেন ৫০ থেকে ৭০ টাকা। শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। এছাড়া পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। সজনের ডাটার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী শামছুল আলম বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। বরবটি, বেগুন, পটল, শসা সবকিছু গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের পর বেগুন, পটলের দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে অন্যান্য সবজির দাম কমার সম্ভাবনা কম। এদিকে মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি