অনলাইন ডেস্ক :
জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি টেলিফোনে আরও নিবিড় যোগাযোগ ও সহায়তার অঙ্গীকার করেছেন। ইউক্রেনের সৈন্যরা জার্মানিতে অস্ত্র প্রশিক্ষণ শুরু করে দিয়েছে। জার্মানি ও ইউক্রেনের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলার পর থেকে দুই সরকারের মধ্যে যোগাযোগ আরও নিবিড় হচ্ছে। ইতোমধ্যে কিয়েভ সফর করেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক। জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগের প্রেসিডেন্ট বেয়ার্বেল বাসও ইউক্রেনে গেছেন। জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার ও চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এখনো সে দেশে পা না রাখলেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখে চলেছেন। গত বুধবার জেলেনস্কি ও শলৎস প্রায় এক ঘণ্টা টেলিফোনে কথা বলেন। উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার হামলা শুরু হবার পর থেকে দুই সরকার প্রধান বেশ কয়েক বার টেলিফোনে কথা বলেছেন। জেলেনস্কি জার্মান প্রেসিডেন্ট ও চ্যান্সেলরকে কিয়েভ সফরের আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। রাশিয়ার হামলার শুরু থেকেই জার্মানি ইউক্রেনকে নানা সহায়তা দিয়ে আসছে, যদিও কিয়েভ বার বার আরও প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে। জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফেন হেবেস্ট্রাইট জানান,গত বুধবারের আলোচনায় দুই সরকার প্রধান আরও বাস্তবসম্মত ও স্পষ্ট সহায়তার উপর জোর দেন এবং পরস্পরের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগের অঙ্গীকার করেন।জেলেনস্কি জার্মান চ্যান্সেলরকে হিংসা বন্ধ করতে রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপের বিষয়েও বিস্তারিত জানান৷ শলৎস অবিলম্বে ইউক্রেনে হিংসা বন্ধ করে সে দেশ থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার ও সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার উপর জোর। জেলেনস্কির সঙ্গে সংলাপে স্বাধীন ইউক্রেনের প্রথম প্রেসিডেন্ট লেওনিদ ক্রাভচুকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন জার্মান চ্যান্সেলর। জেলেনস্কি নিজে এক টুইট বার্তায় লেখেন, চ্যান্সেলর শলৎসের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়েছি। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহায়তা, জ¦ালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, রুশ আগ্রাসনকারীর উপর আরও নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কথা হয়েছে। জার্মানির সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ ও আমাদের সংগ্রামে সে দেশের সমর্থনের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। জার্মানি থেকে সামরিক সহায়তার ধীর গতি সম্পর্কে সম্প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ইউক্রেনের অনেক নেতা। প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও অনেক অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম ইউক্রেনে পাঠাতে অনেক সময় লাগছে বলে অভিযোগ উঠছে। বুধবার থেকে ৬০ জন ইউক্রেনীয় সৈন্য জার্মানিতে ‘পানৎসারহাউবিৎসে ২০০০’ নামের কামান প্রণালী ব্যবহারের প্রশিক্ষণ শুরু করায় সেই ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। জার্মানি এমন সাতটি কামান ইউক্রেনে সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বার্লিনে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রি মেলনিক জার্মান চ্যান্সেলরের উদ্দেশ্যে জার্মান অস্ত্র কোম্পানিদের নিয়ে এক ‘যুদ্ধকালীন শীর্ষ বৈঠক’ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন, যেখানে অবিলম্বে ভারি অস্ত্র সরবরাহ তরান্বিত করা হবে। মেলনিকের মতে, এভাবে বুন্ডেসটাগে অনুমোদিত প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা সম্ভব। শলৎস নিজে কবে কিয়েভ সফর করবেন, সে বিষয়ে এখনো স্পষ্ট কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে যৌথ সফরের সম্ভাবনার কথা শোনা গেলেও তেমন কোনো পরিকল্পনা এখনো বাস্তবায়িত হয় নি। তবে জি-সেভেন গোষ্ঠীর বর্তমান সভাপতি হিসেবেও জার্মানি রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ এবং ইউক্রেনের সহায়তার বিষয়ে সমন্বয়ের উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইটালি ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু