জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার :
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় গভীর রাতে টিনের ঘরের সিঁধ কেটে মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীর সাড়ে তিন বছর বয়সী মাহবুব ইসলাম মাহিন নামে এক শিশুকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১০) মে রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কৌলা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। সিঁধ কেটে শিশু ঘর থেকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করতে অভিযানে মাঠে রয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় ও অপহৃত শিশু মাহিনের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাহিন উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা মর্তুজ আলীর পুত্র। মর্তুজ আলী সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী। মাহিন তার মা লিজা বেগমের সাথে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কৌলা গ্রামে নানা আকবর মিয়ার বাড়িতে থাকে। মঙ্গলবার রাতে মা লিজা ও খালা তামান্নার সাথে ঘুমিয়ে ছিলো। এ সময় ঘরের অন্য সবাইও ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ঘরের পিছনের টিনের বেড়ার নিচের মাটি খুঁড়ে কে বা কারা পাশের ঘরে খাটের নিচ দিয়ে প্রবেশ করে। মাহিনকে ঘুমন্ত অবস্থায় খাঁট থেকে তুলে ঘর থেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
মাহিনের নানি রোসনা বেগম বলেন, জন্মের পর থেকে আমার নাতিসহ মেয়ে লিজা আমাদের বাড়িতে থাকে। আমার মেয়ের স্বামী দুবাই প্রবাসী। আমরা সবাই রাতে ঘুমে ছিলাম। হঠাৎ আমার মেয়ের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে ওঠে দেখি আমার নাতি মাহিন ঘরে নেই। তখন আমার স্বামী সন্তানসহ ঘর থেকে বের হয়ে দেখি দুজন লোক কোলে করে মাহিনকে নিয়ে দৌঁড়ে সিএনজি অটোরিকশাতে ওঠছে। তখন আমাদের চিৎকারে আশেপাশের বাড়ির লোকজন বের হয়ে ওই গাড়িটি আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু দ্রুত গাড়িটি চলে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকার দুজন ব্যাক্তি জানান, এটা তাদের নিজেদের আত্মীয়ের মধ্যে কেউ হয়তো ঘটিয়েছে। বিষয়টি তাদের পারিবারিক হতে পারে।
রোসনা বেগম বলেন, আমার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে আমাদের বিরোধ ছিলো। তাঁর ছেলে মজনু সোমবার আমাদের বাড়িতে আসে। আমাদের ধারণা মজনু এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। মজনুর বাড়ি জুড়ী উপজেলার সাগরনালে।
মাহিনের নানা আকবর মিয়া বলেন, ঘটনার পর পুলিশকে খবর দিলে তারা আমার বাড়িতে এসেছে। আমার মেয়ে লিজাসহ থানায় নিয়ে এসেছি। অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের আত্মীয় মজনু এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
থানায় থাকাবস্থায় মাহিনের মা লিজা বেগম বলেন, আমার বাচ্চার কি হয়েছে আমি কিছুই বলতে পারবোনা।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, শিশুটি অপহরণের পর থেকে পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনার সাথে কারা জড়িত এবং কেন ঘটনাটি সেটি অপহৃত শিশু মাহিনকে উদ্ধার করার পর বিস্তারিত জানা যাবে। তদন্তের স্বার্থে এবং অপহরণে জড়িতদের আটকের জন্য এ মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছেনা। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সন্দেহভাজনদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। গতকাল রাত থেকে জুড়ী উপজেলার ফুলতলা, সাগরনালসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারবো।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি