অনলাইন ডেস্ক :
অনেক আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে লিগ শিরোপা। তেমন কিছু চাওয়া-পাওয়ার কিছু ছিল না পিএসজির। তবে মেসের জন্য ছিল বাঁচা-মরার লড়াই। গোলবন্যায় ভাসিয়ে তাদেরকে পরের বিভাগে নামিয়ে দিল মাওরিসিও পচেত্তিনোর দল। নাটকীয়ভাবে পিএসজিতে থেকে যাওয়া কিলিয়ান এমবাপে করলেন হ্যাটট্রিক। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা নেইমার পেলেন জালের দেখা। গোল করে ফরাসি ক্লাবটিতে নিজের সাফল্েয ভরা ক্যারিয়ারে ইতি টানলেন আনহেল দি মারিয়া। লিগ ওয়ানের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে শনিবার রাতে ৫-০ গোলে জিতেছে পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধের বেশিরভাগ সময় একজন কম নিয়ে খেলা মেস তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ আগে পিএসজিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো এমবাপের সঙ্গে আলো ছড়িয়েছেন বিদায়ী ম্যাচ খেলা দি মারিয়া। শক্তি-সামর্থ্েয বেশ পিছিয়ে থাকা দলটিকে শুরু থেকে চাপের মধ্েয রাখে পিএসজি। এগিয়ে যাওয়ার পর তাদের আর ভাবতে হয়নি। আক্রমণের ঝাপটায় মেসকে উড়িয়ে রাঙিয়ে রাখল ২০২০-২১ মৌসুমের শেষটা। ঘরের মাঠে চতুর্থ মিনিটেই গোলের জন্য প্রথম শট নেয় পিএসজি। দি মারিয়ার দূরপাল্লার শটটি সহজেই ফেরান মেস গোলরক্ষক। অষ্টাদশ মিনিটে লিওনেল মেসির আড়াআড়ি শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। তিন মিনিট পর ডি-বক্সের মাথা থেকে শট লক্ষ্েয রাখতে পারেননি নেইমার। ২৩তম মিনিটে দি মারিয়ার শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক। ফিরতি বলে প্রেসনেল কিম্পেম্বের শট ঠেকান এক খেলোয়াড়। পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় পিএসজি। দি মারিয়ার চমৎকার পাস ডি-বক্সে ধরে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে এড়ান এমবাপে। দুই জন খেলোয়াড় চেষ্টা করেন গোললাইনের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে, সফল হননি। তাদের একজনের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে জাল খুঁজে নেন ফরাসি তারকা। চার মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এমবাপে। মেসির রক্ষণচেরা পাস ডি-বক্সের মাথায় পেয়ে যান তরুণ ফরোয়ার্ড। এবারও এগিয়ে আসেন গোলরক্ষক, তাকে আবার পরাস্ত করে কাছের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন এমবাপে। ৩২তম মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করেন নেইমার। নিজেদের অর্ধে মেস বল হারালে পেয়ে যান মেসি। তিনি খুঁজে নেন দি মারিয়াকে। আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডারের সামনে একাই ছিলেন গোলরক্ষক। পেছন থেকে বুবাকার কুইয়াত স্লাইড করলে পেয়ে যান নেইমার। চমৎকার ফিনিশিংয়ে বাকিটা সারেন তিনি। ৪৩তম মিনিটে হ্যাটট্রিক হয়ে যেতে পারত এমবাপের। তবে দূরের পোস্টের একটু বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায় তার শট। হ্যাটট্রিকের জন্য অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাকে। ৫০তম মিনিটে ডি-বক্সে ঢোকার সময় কুইয়াতের কাছে বল হারিয়ে ফেলেন তিনি। দ্রুত শট না নিয়ে দেরি করে ফেলেন মেসের ডিফেন্ডার। বল পুনরুদ্ধার করে তৃতীয়বারের মতো গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এমবাপে। আসরে এটি তার ২৮তম গোল। দুই মিনিট পর চতুর্থ গোলও পেতে পারতেন এমবাপে। মেসির পাস পেয়ে গোলরক্ষককে এড়াতে পারেননি তিনি। ফিরতি বলে শট না নিয়ে খুঁজে নেন অরক্ষিত নেইমারকে। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের শট গোললাইন থেকে ফেরান দিলান ব্রন। ৫৮তম মিনিটে নেইমারকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন বুবাকার ত্রাওরে। বাকি সময়ে মেস খেলে ১০ জন নিয়ে। তিন মিনিট পর এমবাপের শট ব্যর্থ হয় পোস্ট লেগে। ৬৭তম মিনিটে ফের পোস্টে লাগে বল। এমবাপের বাড়ানো বল বুক দিয়ে নামিয়ে বুলেট গতির শট নেন মেসি। পোস্ট কাঁপিয়ে ফেরা বল পেয়ে যান দি মারিয়া। ফাঁকা জালে বল পাঠাতে তার ¯্রফে একটা টোকা দরকার ছিল। প্যারিসের ক্লাবটির হয়ে নিজের শেষ ম্যাচে গোল করে আপ্লুত হয়ে পড়েন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার। মুখে হাসি, চোখে জল নিয়ে উদযাপন করেন গোল। এর কিছুক্ষণ পর মাঠ ছাড়েন দি মারিয়া। পিএসজির সব সদস্য দাঁড়িয়ে ‘গার্ড অব অনার’ দেন তাকে। সতীর্থদের সবাইকে আলিঙ্গন করে সমর্থকদের তুমুল করতালির মধ্েয ডাগ আউটে যান তিনি। গ্যালারিতে তখন তার স্ত্রীর চোখেও ছিল জল। ২৬ জয় ও আট ড্রয়ে ৮৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শেষ করল পিএসজি।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা