নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর বাজারগুলোতে দফায় দফায় বাড়ছে রসুনের দাম। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আমদানি করা এক কেজি রসুন কিনতে এখন ক্রেতাদের দুইশো টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে। রসুনের বাড়লেও কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম। অন্যদিকে, চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের সবজি। সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে পাকা টমেটো ও গাজরের দাম। তবে বেগুন, বরবটি দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে। আর আগের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ মাছের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও ইলিশের দাম কিছুটা বেড়েছে। শুক্রবার (৩রা জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি করছেন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, যা তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। আর দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। রসুনের এমন দাম বাড়ার বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. মিলন বলেন, রসুনের বাজার খুব গরম। হুটহাট দাম বাড়ছে। গত সপ্তাহে এক কেজি আমদানি করা রসুন ১৬০ টাকা বিক্রি করেছি। এখন আমাদের কিনতে হচ্ছে ১৭০ টাকার ওপরে। এ রসুন ১৯০ টাকার নিচে বিক্রি করার সুযোগ নেই। কারওয়ানবাজারে ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, বাজারে এখন দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের রসুনের সরবরাহ কম। আবার আমদানি ব্যয় বেড়েছে। এ কারণেই রসুনের এমন দাম বেড়েছে। তবে আমাদের ধারণা কয়েকদিনের মধ্যে রসুনের দাম কিছুটা কমে যাবে। রসুনের দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। যা এক সপ্তাহে আগে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। পেঁয়াজের দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী গৌতম বলেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম অনেক কমেছে। আবার আমাদের দেশেও পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে ভালো মানের পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম এখন একটু কমতির দিকে। এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের মতো সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন গাজর। ব্যবসায়ীরা এক কেজি গাজর বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। গাজরের পাশাপাশি সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পাকা টমেটোর দাম। এক কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গাজর ও টমেটোর দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী শরিফ হাসান বলেন, এখন গাজর ও টমেটোর সিজন না। আগে মজুত করে রাখা কিছু গাজর, টমেটো এখন পাওয়া যাচ্ছে। এর সরবরাহ অনেক কম। এ কারণে দাম বাড়তি। সামনে টমেটোর কেজি একশো টাকা হয়ে যেতে পারে। গাজর ও টমেটোর দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম কমেছে। গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কমে এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে করলা। কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচ কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ব্যবসায়ীরা বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। আর সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা। ঈদের আগে কেজি ৭০০ টাকা উঠে যাওয়া গরুর মাংসের দামেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা বিক্রি করছেন। তবে মহল্লার সাপ্তাহিক ব্যবসায়ীরা গরুর মাংসের কেজি বিক্রি করছেন ৭২০ টাকা কেজি। মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে পরিবর্তন আসেনি। তবে ইলিশ মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৭০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা। ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি