অনলাইন ডেস্ক :
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিধ্বস্ত হওয়া দলকে ঢেলে সাজিয়ে মাঠে নামা ইতালিকে এবারও ধুঁকতে দেখা গেল। শুরুর হতাশাজনক অধ্যায় পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াল তারা, এগিয়েও গেল। পাল্টা জবাব দিতে অবশ্য দেরি করল না জার্মানি। বাকিটা সময়ে দারুণ চেষ্টা করেও নায়ক হতে পারল না কেউ। উয়েফা নেশন্স লিগে ইতালির বোলোনিয়ায় শনিবার রাতে ‘এ’ লিগের তিন নম্বর গ্রুপের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। লরেন্সো পেল্লেগ্রিনির গোলে পিছিয়ে পড়ার পর সমতা টানেন জসুয়া কিমিখ। পাঁচ দিনে খেলতে হবে ১৫টি ম্যাচ এবং সবকটিই প্রতিযোগিতামূলক। বিশ্রামহীন ঠাসা সূচি থেকে খেলোয়াড়দের কিছুটা নিস্তার দিতে ইতালি কোচ তিন দিন আগের ফিনালিস্সিমা ম্যাচের একাদশ থেকে ১০টি পরিবর্তন আনেন। নিয়মিতদের বাইরে রাখার প্রভাব পড়ে তাদের খেলায়। আত্মবিশ্বাসী শুরু করা জার্মানি প্রথম ২৫ মিনিটে বল দখলে রাখার পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করে। প্রতিপক্ষের রক্ষণকে ব্যস্ত রেখে এই সময়ে কয়েকটি শট নেয় তারা, তবে প্রতিটি পরীক্ষাই ভালোভাবে উতরে যায় ইতালি। লেরয় সানের লক্ষ্যভ্রষ্ট শটের পর ডান দিকের দুরূহ কোণ থেকে জোরাল শট নেন সের্গে জিনাব্রি, তবে সোজাসুজি শট ঠেকাতে বেগ পেতে হয়নি গোলরক্ষককে। খেলার ধারার বিপরীতে ৩৫তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত ইতালি। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি তাদের; জানলুকা স্কামাক্কার দূর থেকে নেওয়া নিচু শট পোস্টে বাধা পায়। তিন মিনিট পর সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন জিনাব্রি। বায়ার্ন মিউনিখ মিডফিল্ডার ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে উড়িয়ে মারেন। শুরুর ছন্দহীনতার পর প্রথমার্ধের শেষ দিকে ইতালির আক্রমণে ধার বাড়ে। বিরতির পরের শুরুটা বেশ ভালো করে তারা। ৪৭তম মিনিটে আরেকবার এগিয়ে যাওয়ার সহজ সুযোগ নষ্ট করেন স্কামাক্কা, এবার কাছ থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড নেন তিনি। খানিক পর তিনিই গোলরক্ষক সোজা ওভারহেড কিক নেন। ৭০তম মিনিটে অবশেষে মেলে গোলের দেখা। ডান দিক থেকে সতীর্থের ছয় গজ বক্সে বাড়ানো ক্রসে টোকায় বল জালে পাঠান পেল্লেগ্রিনি। তাদের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ অবশ্য একেবারেই স্থায়ী হয়নি। ৭৩তম মিনিটে প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণ ডি-বক্সে কয়েকবারের চেষ্টায়ও বিপদমুক্ত করতে পারেনি ইতালি। সেই সুযোগে ফাঁকায় বল পেয়ে জোরাল শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন কিমিখ। বাকি সময়ে আর কেউ কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। নেশন্স লিগের তৃতীয় আসরেও শুরুটা জয় দিয়ে করতে পারল না জার্মানি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সমান চারবার করে বিশ্বকাপ জয়ী এই দুই দলের গত কয়েক বছরের পথচলা ভীষণ সঙ্কটপূর্ণ। গত বছর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী ইতালির হতাশার পাল্লাই তুলনামূলক বেশি ভারী। ২০১৮ বিশ্বকাপে উঠতে না পারার ব্যর্থতা মুছে রবের্তো মানচিনির কোচিংয়ে একসময় অজেয় হয়ে ওঠে তারা। অসাধারণ সেই যাত্রাপথে জিতে নেয় ইউরো ২০২০। তবে এরপর আবারও পথ হারিয়ে দলটি ছিটকে পড়ে কাতার বিশ্বকাপের বাছাই থেকেও। সবশেষ গত বুধবার ফিনালিস্সিমায় কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়। আর রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া জার্মানি মাঝের সময়ে গেছে মূলত পালাবদলের মধ্যে দিয়ে। এই সময়ে তাদের ব্যর্থতা বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে এই নেশন্স লিগেই। প্রথম আসরে জয়শূন্য থাকা দলটি গত আসরে ৬ ম্যাচ খেলে মাত্র দুটিতে জিততে পারে। গত বছর দায়িত্ব নেওয়া হান্স ফ্লিকের কোচিংয়ে অবশ্য শুরুটা দুর্দান্ত করে তারা। তার হাত ধরে প্রথম আট ম্যাচের সবকটিতে জেতে দলটি। তারপর যদিও টানা দুটি ড্র করল জার্মানরা। গ্রুপ পর্বের পরের ম্যাচে আগামী মঙ্গলবার জার্মানি ঘরের মাঠে খেলবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ইতালিও খেলবে নিজেদের আঙিনায়, প্রতিপক্ষ হাঙ্গেরি। এ দিন গ্রুপের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে স্বাগতিক হাঙ্গেরি। ১৯৬২ সালের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের প্রথম জয় এটি।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা