জেলা প্রতিনিধি, সিলেট:
ঈদুল আজহার বাকি দুই সপ্তাহেরও কম। প্রতি বছর এই ঈদকে কেন্দ্র করে জমে ওঠে কোরবানির পশুর হাট। সারাদেশের ন্যায় বিয়ানীবাজারেও শুরু হয় কোরবানীর পশুর হাটের তোড়জোড়। দেশের নানাপ্রান্ত থেকে পশু আনা-নেয়া শুরু হয়। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। চলমান বন্যায় তছনছ করে দিয়েছে সব। খামারিরা থেকে শুরু করে ক্রেতা, সবাই বন্যার সাথে এখনো রীতিমত যুদ্ধ করছেন। আসন্ন ঈদুল আযহার কোরবানির হাটেও সেই প্রভাব থাকবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
বিয়ানীবাজারে সাধারণত ঈদের ১০-১৫ দিন আগে থেকে স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটগুলো সাজানোর প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা। এখানকার পৌরশহরের একমাত্র পশুর হাট অস্থায়ীভাবে কোরবানীর ঈদের আগে বসে। এছাড়াও বারইগ্রাম, আছিরগঞ্জ এর একাংশ, বৈরাগীবাজার, দুবাগ, চারখাই ও রামদা বাজারে স্থায়ী পশুর হাট বসানো হয়। কোরবানীর ঈদকে ঘিরে এসব স্থায়ী পশুর হাটেও প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা। তবে এবার সেই প্রস্তুতিতে ভাটা রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার রমজানের পর থেকে গরুর দাম বাড়তি। কোরবানির হাটেও সেই প্রভাব থাকবে। পাশাপাশি চলমান বন্যার প্রভাবও পড়বে পশুর হাটে। অর্থাৎ গরুর দাম এবার বেশি হতে পারে। সাধারণত এ সময়ে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পশু এনে জড়ো করতেন। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। এখনো পর্যন্ত মৌসুমী ব্যবসায়ীরা পশু ব্যবসায় বিনিয়োগ করার ঝূঁকি নেননি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানির ঈদের আর বেশী সময় না থাকলেও চারখাই, দুবাগ, রামদা ও বৈরাগীবাজারে পশুর হাটের জায়গায় বন্যার পানি ওঠেছে।
বারইগ্রাম বাজারের ইজারাদার বাদল বলেন, কোরবানীর পশুর হাট নিয়ে আমরা ভিশন চিন্তিত। বন্যার এই সময়ে পশু কেনাবেচা নিয়ে আমরা শংকিত। তিনি বলেন, এখনো কোরবানির হাট বলতে যা বোঝায় তা শুরু হয়নি। সপ্তাহখানেক পরে হাট জমে উঠবে। তিনি বলেন, এছাড়া এমনিতেই গরুর খাবারের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের দামও বেড়েছে। তাই গরু-ছাগলের দামও বাড়বে।
পশুর খামারি ফারুক আহমদ বলেন, দেশের অন্যান্য স্থান থেকে গরু ব্যবসায়ীরা আসতে পারছেন না। আমরাও পশু আনা-নেয়া করতে পারছিনা। তিনি বলেন, আমরা কোরবানীর সময়ে জামালপুর ও কুড়িগ্রাম থেকে দেশি ছোট সাইজের গরু কিনি। সেখানেও বন্যা। এবার গরুর চাহিদা অনুযায়ী সাপ্লাই কম।
রাশেদুল ইসলাম বাবু নামে স্থানীয় এক গরু ব্যবসায়ী বলেন, গরু লালন-পালনে খরচ বেড়েছে। হাটেই নিয়মিত ৩ জন রাখালসহ ৫-৬ জনের শ্রম যাচ্ছে। প্রতিদিন ৬০০-৭০০ টাকা দিতে হয় রাখালদের। গরুর দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। তিনি বলেন, চাহিদা বেশি থাকে ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর। তাই এবার বিশেষ চাহিদার এসব গরুর দাম বাড়তি থাকবে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক আশিক নূর বলেন, পৌরশহরের অস্থায়ী পশুর হাট স্কুল মাঠেই হবে। অন্যগুলো পানিতে তলিয়ে থাকায় বিকল্প স্থান খোঁজা হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি