অবশেষে ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুটি নির্মাণে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতুর আদলে হবে চট্টগ্রামের কাক্ষিত কালুরঘাট রেল সেতু। পদ্মা সেতুর মত দ্বিতল ডিজাইনে কালুরঘাট সেতুর ওপরে দুই লেনের সড়ক ও নিচে ট্রেন চলাচল উপযোগী করে নকশা প্রণয়ণের কাজ চলছে। রেল সেতুতে ব্রড ও মিটার গেজ ট্রেন চলাচল উপযোগী রেল লাইন বসানো হবে।
বুধবার দুপুরে পূর্বাঞ্চলীয় রেলের সদর দপ্তরের (সিআরবি) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সেতুর প্রাথমিক সমীক্ষা শেষে সেতু নির্মাণের স্থান, নকশা, ব্যয় ও নির্মাণকাল নিয়ে প্রাথমিক প্রস্তাবনা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছে দাতা সংস্থা কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক।
সভায় জানানো হয়, নতুন ডিজাইনে সেতুটি নির্মাণের জন্য আগের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি ব্যয় করতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরেই কালুরঘাট সড়ক কাম রেল সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হতে পারে।
বৈঠক শেষে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘কালুরঘাট সেতু নিয়ে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক ফিজিবিলিটি স্টাডি করছে। আমাদের জানানো হয়েছে, ব্রিজের ওপরের ডেকে থাকবে সড়ক, নিচের ডেকে থাকবে রেললাইন। উভয়ই ডাবল লাইন হবে। রেল ডাবল লাইন হবে, সড়কও ডাবল লাইন। পদ্মা সেতুর আদলে আগামী বছরের শুরুতে এই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় হাজার ৩৪১ কোটি টাকা। সেতুটির ৭৮০ মিটারের ওপরে চলবে গাড়ি আর নিচে ট্রেন। দুটিই হবে ডাবল লাইনের। ফলে ট্রেন-গাড়ি একই সময়ে যেতেও পারবে, আসতেও পারবে। প্রাথমিকভাবে ব্রিজের দৈর্ঘ্য আমাদের বলা হয়েছে ৭৮০ মিটার, বায়াডাক্ট ৫ দশমিক ৬২ মিটার। স্প্যান হবে ১০০ মিটার। ব্রিজের উচ্চতা হবে ১২ দশমিক ২ মিটার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী মাসে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক ফাইনাল ফিজিবিলিটি স্টাডি রিপোর্ট জমা দেবে। এরপর টেন্ডার হবে। আমাদের টেন্ডার শেষ করতে প্রায় ছয় থেকে আট মাস সময় লাগবে। তারপর ইডিসিএফ ফান্ড দেবে। ফান্ড দিলে কাজ শুরু হবে। টেন্ডারের পর সেতুটি নির্মাণের প্রায় চার বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের খরচ ছয় হাজার ৩৪১ কোটি টাকার মতো বলা হয়েছে।’
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে কাজ শুরুর সময় থেকে চার বছর। আর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একনেকে অনুমোদন, দরপত্রসহ আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে তারা সেতুর কাজ শুরু করতে পারবে। সেক্ষেত্রে সেতুটি নির্মাণ শেষ হতে বর্তমান সময় থেকে পাঁচ বছর অর্থাৎ ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে।
এ সময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও প্রকল্প পরিচালক গোলাম মোস্তফা, ইউশিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার কোণ উক পার্ক, কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. গোলাম মোস্তফা, ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্টস লিমিটেডের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মো. আনোয়ারুল হক, ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্টস লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মো. রিয়াজুর রহমান ও সংশ্লিষ্ট রেলওয়ের কর্মকর্তারা।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি