November 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, July 8th, 2022, 9:10 pm

ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয়, যাত্রীচাপে ভোগান্তি

দরজায় কড়া নাড়ছে খুশির ঈদ। যে কোনো মূল্যে যেতে হবে বাড়ি। ট্রেনের ভেতরে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে, ইঞ্জিনের সামনের ফাঁকা অংশে উঠে পড়েছেন যাত্রীরা। রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশন থেকে শুক্রবার তোলা।

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ট্রেনে ঈদযাত্রার চতুর্থ দিনে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় লেগেছে। প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই মানুষের দীর্ঘ সারি। স্টেশনের প্রবেশপথেও যাত্রীদের গাদাগাদি। তবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার বালাই চোখে পড়েনি কোথাও। এ বিষয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষও যেন নির্লিপ্ত। ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত মঙ্গলবার ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়। প্রথম দুদিন কোনো শিডিউল বিপর্যয় না থাকলেও গত বৃহস্পতিবার কিছু ট্রেন বিলম্বে ছেড়েছে। তবে শুক্রবার (৮ জুলাই) সকাল থেকে প্রায় সব ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঈদযাত্রীদের। অধিকাংশ ট্রেনই নির্ধারিত সময়ের দেড়-দুই ঘণ্টা পর স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে। সকালে কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, ৯টা পর্যন্ত ছেড়ে যায়নি সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের নীলসাগর এক্সপ্রেস, সকাল ৭টার ধূমকেতু এক্সপ্রেস এবং ৮টা ১৫ মিনিটের সুন্দরবন এক্সপ্রেস।

 

দরজায় কড়া নাড়ছে খুশির ঈদ। যে কোনো মূল্যে যেতে হবে বাড়ি। ট্রেনের ভেতরে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে, ইঞ্জিনের সামনের ফাঁকা অংশে উঠে পড়েছেন যাত্রীরা। রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশন থেকে শুক্রবার তোলা।

 

দেখা যায়, উত্তরবঙ্গগামী নীলসাগর এক্সপ্রেসের প্রচুর যাত্রী সকাল থেকে ট্রেন ছাড়ার অপেক্ষা করছেন। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও ৯টায়ও তা স্টেশন ছাড়েনি। প্রায় চার ঘণ্টা পিছিয়ে সকাল ১০টার পর ট্রেনটি ছেড়ে যাবে বলে স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এছাড়াও সকালে কর্ণফুলী কমিউটার ও রংপুর এক্সপ্রেসসহ আরও বেশ কয়েকটি ট্রেন শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে। এসব ট্রেন ছেড়ে যেতে বিলম্ব হবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে সূত্র। এ বিষয়ে রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঘরমুখো মানুষ। প্ল্যাটফর্মে পরিবার-পরিজন ও মালপত্র নিয়ে ট্রেনের অপেক্ষায় অনেকে। সেখানে কথা হয় জয়পুরহাটগামী যাত্রী সামাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভোরে পরিবার নিয়ে স্টেশনে এসে শুনেছি, নীলসাগর এক্সপ্রেস দেরিতে ছাড়বে। ভোগান্তি আরও বাড়বে কি না, সে আশঙ্কায় আছি। একে তো ট্রেনে উঠতে পারবো কি না সে চিন্তা, তারপর আবার বাচ্চারা সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। এদিকে ঈদযাত্রায় উত্তরবঙ্গগামী বেরিশরভাগ ট্রেন কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে দেরিতে ছেড়ে যায়। ট্রেনের এই শিডিউল বিপর্যয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে ঘরমুখো মানুষ। সকাল সাড়ে ৯টায় ছেড়ে যায় রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস। অথচ এই ট্রেনটি ভোর ছয়টায় ছাড়ার কথা ছিল। অপরদিকে ভোর ৬টা ৪০ মিনিটের নীলসাগর এক্সপ্রেস কমলাপুর ছাড়ে সকাল ১০টায়। এছাড়া সকাল ৯টার রংপুর এক্সপ্রেস ১০টা পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশনের দুই নম্বর প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল। এ বিষয়ে স্টেশনের মাস্টার আফছার উদ্দিন বলেন, দেরিতে পৌঁছানোর কারণে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনগুলো ছাড়তে দেরি হচ্ছে। এ সমস্যা হচ্ছে শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলোর। খুলনা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন ট্রেন যথা সময়ে চলছে। এদিকে শুক্রবার (৮ জুলাই) কমলাপুর স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে গ্রামে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তাই ফাঁকা হচ্ছে নগরী। ছবিটি চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে তোলা।

 

প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই মানুষের দীর্ঘ সারি। কোথাও দাঁড়ানোর জায়গা নেই। আগামী ১০ জুলাই দেশে উদযাপিত হবে কোরবানির ঈদ। এর মধ্যে শুক্রবার (৮ জুলাই) সাপ্তাহিক ছুটি। আর ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হচ্ছে শনিবার থেকে। ফলে ঢাকা ছাড়তে শুরু করছে মানুষ। ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ১ জুলাই থেকে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। ১ জুলাই দেওয়া হয় রেলের ৫ জুলাইযের ট্রেনের টিকিট, ২ জুলাই ৬ জুলাইয়ের, ৩ জুলাই ৭ জুলাইয়ের, ৪ জুলাই ৮ জুলাইয়ের এবং ৫ জুলাই দেওয়া হয় ৯ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট। ঈদযাত্রার ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার। প্রথম দিন বিক্রি হয় ১১ জুলাইয়ের ফিরতি টিকিট। শুক্রবার (৮ জুলাই) দেওয়া হয় ১২ জুলাইয়ের টিকিট। এরপর ৯ জুলাই ১৩ জুলাইয়ের, ১১ জুলাই ১৪ এবং ১৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে। এর মধ্যে ১০ জুলাই ঈদ হলে ১১ জুলাই সীমিত পরিসরে কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে। তবে ১২ জুলাই থেকে সব ট্রেন চলাচল করবে।