জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ :
চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের মাজজান ,ফকিরপাড়া এবং বিনোদিয়া গ্রামের চারটি পয়েন্টের তীর সংরক্ষন বাধ ধবসে 20টি ঘরবাড়ি যমুনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । সর্বোচ্চ হারানো এসব মানুষগুলো কোন উপায় না পেয়ে পাশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাদে আশ্রয় গ্রহণ করেছে । বিলীন হয়ে যাওয়া বাড়িঘরের মানুষগুলো শুধু পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি । তাই তারা এখন অনাহারে-অর্ধাহারে মানবতার জীবনযাপন করছেন । এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাঙ্গন রোধে বালুভর্তি জিও বস্তা ফেললেও চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে । বিনোটিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম , আব্দুল হাকিম ,বেলাল হোসেন, বাতাসি বেগম , বুলবুলি খাতুন আজিরন নেছা জানান , দীর্ঘ 12 বছর ধরে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ বাধ সংস্কার করা হয় না । ফলে বাধটি দুর্বল হয়ে এর বিভিন্ন স্থানে ধস শুরু হয়েছে । এর মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ,বিনোদিয়া গ্রামের 5টি বাড়িঘর যমুনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । হুমকির মুখে পড়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি ও বিনোটিয়া জামে মসজিদ । এদিকে ভাঙ্গন আতঙ্কে এলাকাবাসীর খাওয়া ও রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে । পানি উন্নয়ন বোর্ড সঠিক সময়ে ব্যবস্থা না নেওয়ায় , ফকির পাড়া গ্রামের 3টি পাকা ঘর বাড়ি যমুনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । মাজজান গ্রামের কমলা বেগম , শারমিন খাতুন ,জয়পাল খাতুন , সাবানি বেগম জানান , এ গ্রামের 12 থেকে 15 টি বসতঘর চোখের সামনে বিলীন হয়ে গেছে । এখন তারা বন্যা নিয়ন্ত্রণ আশ্রয় বাদে আশ্রয় গ্রহণ করে একবেলা খেয়ে আর এক বলা না খেয়ে জীবন যাপন করছেন । দুইদিন পরে ঈদ অথচ তাদের মাঝে নেই কোনো ঈদের আনন্দ বরং তারা ঘরবাড়ি সর্বোচ্চ হারিয়ে এখন শুধু চোখের জল ফেলছেন ।যেন পরিবার গুলোর মাঝে ঈদ আনন্দের পরিবর্তে এখন শুধুই কান্নার রোল দেখা যাচ্ছে । এ বিষয়ে গালা ইউনিয়নের চেয়ারমান আবদুল বাতেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বনধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাসির জানান ভাঙ্গনরোধে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা শুরু হয়ে গেছে এবং আরো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে । শাহজাদপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন , ইতিপূর্বে আমরা যারা দুর্যোগের মধ্যে পড়ে তাদের টিয়ার দিয়েছি , চেয়ারম্যানদের ভিজিএফ দিতে নির্দেশ দিয়েছি এবং তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে এবং তারা আমাকে জানিয়েছেন । তিনি আরো জানান ঈদের আগের দিন তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে এবং বিষয়টি তিনি মাথায় রেখেছেন কিভাবে তাদের সহযোগিতা করা যায় ।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি