November 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, July 12th, 2022, 8:01 pm

সবজি বিক্রেতা তৃণমূল কাউন্সিলর

অনলাইন ডেস্ক :

ভোর হলেই একজন কাউন্সিলর গলায় গামছা জড়িয়ে এলাকার বাজারে বসে যান সবজির পসরা সাজিয়ে। তবে সকালবেলার বিক্রি শেষে খুচরা ব্যবসায়ী থেকে তিনি আবার জনপ্রতিনিধির ভূমিকা নেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এই নেতার নাম শিপুল সাহা। বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে। তিনি ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়ার বাসিন্দা ছিলেন শিপুল। বাবা জহর সাহা ছিলেন ডাল মিলের শ্রমিক। আট বছর বয়স থেকে হাওড়া রেলস্টেশনে শসা বিক্রি করতেন জহর। রুটিরুজির টানে তিনি দুর্গাপুর আসেন ১৯৮২ সালে। তার দুই বছর পর সপরিবারে শিপুলরাও দুর্গাপুরে আসেন। স্টেশন চত্বরে ফুটপাতে ফল বিক্রি করতেন শিপুলের বাবা। থাকতেন শ্রমিকনগরে একটি ভাড়া বাড়িতে। কোনো রকমে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করেন শিপুল। সেটাও খুচরা ব্যবসা করতে করতেই। শিপুল বলেন, ‘আমার নিজস্ব বাড়ি নেই। স্ত্রী, দুই সন্তান এবং বাবা আমার শ্বশুরবাড়িতে থাকে। মেয়ে বারাসাতের একটি কলেজে মনস্তত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করছে। ছেলে স্কুলে পড়ে। ‘শিপুলের কথায়, ‘ছোট থেকে ব্যবসা করেছি। এখনো ভোররাতে ঘুম থেকে উঠি। সবজি নিয়ে চলে যাই বাজারে। সকাল থেকে ১০টা পর্যন্ত বিক্রি করি। এরপর বাড়ি এসে গোসল সারি। পূজা করি। খাওয়াদাওয়া করে চলে যাই দলীয় কার্যালয়ে। ১টা পর্যন্ত সেখানে থাকার পর যাই পুরসভায়। আবার বিকেলে ব্যবসা করি। সন্ধ্যা ৭টার পর দলীয় কার্যালয়ে চলে যাই। তার মধ্যে সময় করে এলাকা ঘুরে মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনি। ‘গত পাঁচ বছরের কাউন্সিলর শিপুল। তিনি বলেন, ‘এলাকাবাসীকে সেরা পরিষেবা দিতে সব রকম চেষ্টা করেছি। তবে শতভাগ কাজ করে উঠতে পারিনি। সামনের ভোটে দল টিকিট দিলে আবার লড়ব। কাউন্সিলর হলে এলাকার অসমাপ্ত কাজ শেষ করব। ‘শিপুল বলেন, ‘শ্রমিকনগর স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্য হয়ে সামাজিক কার্যকলাপ করতাম। ১৯৯২ সালে রাজনৈতিক জীবন শুরু করি কংগ্রেসে। ১৯৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল তৈরি করার পর থেকেই তার সঙ্গে আছি। ‘২০১৭ সালে প্রথম ভোটে লড়া। ১৩০০ ভোটে জয়ী হয়ে কাউন্সিলর হন শিপুল। সবজি দোকানি-কাউন্সিলরের কথায়, ‘প্রথমে কাউন্সিলর হিসেবে ৬,৭০০ টাকা মাসিক ভাতা পেতাম। কয়েক বছর ধরে ৯,৮০০ টাকা ভাতা পাই। সবজি বিক্রি না করলে তো সংসার চলবে না। ছেলে-মেয়ের পড়াশোনাও হবে না। তাই সকালবেলা রুটিরুজি জুটিয়ে তার পরে জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের কাজ করি। ‘শিপুল আরো বলেন, ‘সবজি বিক্রি আমার পেশা। পেশাকে কখনো ছোট করে দেখি না। ভবিষ্যতেও সবজিই বিক্রি করব। ‘সূত্র : আনন্দবাজার