জেলা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রবাসীদের প্রেমের ফাঁদে আটকে মুক্তিপণ আদায় চক্রের ৬ সদস্য গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ।
মঙ্গলবার ১৬ আগস্ট রাতভর অভিযান চালয়ে পৌর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
বুধবার ১৭ আগস্ট বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মো: শাহীন এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, ১। আবদুল আহাদ (৩৪), পিতা- রেনু মুন্সি, সাং- ঘাটুরা, ২। মো: সাজন(৩১), পিতা- রবি বাবুর্চি, সাং- মধ্যপাড়া নয়াপুকুরপাড়, ৩। ববিতা বেগম (৩০), স্বামী- আহাদ মিয়া, সাং- ঘাটুরা, ৪। লিপি আক্তার (১৮), পিতা- কবির মিয়া, সাং- মজলিশপুর, ৫। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরএলাকার ফুলবাড়িয়া বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন পশ্চিমপার্শ্বে শেরপুর আবাসিক এলাকায় থেকে সাংবাদিক পরিচয়ধারী (সহ সম্পাদক, তিতাস বার্তা) মো: মশিউর রহমান(৪৩), পিতা- মো: মোস্তাফিজুর রহমান, মাতা- রেনুয়ারা বেগম, সাং- ভাদুঘর উত্তর, সর্ব থানা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, ও ৬। মক্ষিরানী জহুরা বেগম (২২) (কোলে ৩ বছরের মেয়ে বাচ্চা শান্তা রয়েছে), স্বামী- খায়রুল ইসলাম, সাং- চাতলপাড় (আটপাড়া), থানা- নাসিরনগর, বর্তমান- ফুলবাড়িয়া বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন পশ্চিমপার্শ্বে শেরপুর আবাসিক এলাকা, থানা- সদর, সর্ব জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
উল্লেখ্য সোমবার ১৫ আগষ্ট বিকাল অনুমান ৫ টায় সরাইল থানাধীন কালিকচ্ছ এলাকা থেকে অরুয়াইল নিবাসী জনৈক সৌদি প্রবাসী মো: শাকিল মিয়া (২৫), পিতা- মো: রৌশন আলী, সাং- অরুয়াইল, ও ১৬ আগষ্ট দুপুর ১ টায় অরুয়াইল বাজারের সৌদি প্রবাসী সোবাহান মিয়া, পিতা- হাজী কাঞ্চন মিয়া, সাং-অরুাইল, থানা- সরাইল, সর্ব জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়াদ্বয়কে যথাক্রমে ভিকটিম সোবাহান মিয়কে শহরতলীর ঘাটুরা গৌতমপাড়া মুন্সিবাড়ি এলাকায় ও একই কায়দায় ভিকটিম শাকিলকে জেলা শহরের ফুলবাড়িয়া বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন পশ্চিমপার্শ্বে শেরপুর আবাসিক এলাকার এক বাসায় নিয়ে মহিলা সহ একরুমে আটকে তাকে উলঙ্গ করে ভিডিও ধারণ ও মারপিট করে ও হত্যার হুমকি দেয়,
এ ঘটনা অপহরণকারী একজন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকের কার্ড দেখিয়ে ভিডিও ধারণ করে অনলাইনে ছেড়ে দিবে বলে ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের আত্মীয় স্বজনদের নিকট থেকে জোর পূর্বক বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করে এতে দুটি নম্বরে কয়েক ধাপে ৬০ হাজার টাকা আদায় করে অপহরণকারীরা।
মঙ্গলবার ১৬ আগস্ট বিকেলে অপহরণকারীরা ঐ দুই প্রবাসীকে ছেড়ে দেন। দুজন ফিরে এসে সরাইল থানা পুলিশের কাছে ঘটনা খুলে বলেন যে ফোনের মাধ্যেমে অরুয়াইল এবং কালিকচ্ছ এলাকা থেকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সরাইল বিশ্বরোড এলাকায় নিয়ে এসে জোরপূর্বক সিএনজিতে উঠিয়ে অপহরণ করে ও পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা দেন। সরাইল থানা পুলিশ জেলার উর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় ভিকটিমদ্বয়র তথ্য মতে অপরাধী চক্রকে সনাক্ত ও গ্রেফতারে জোর অভিযানে নামে।
এ সময় আসামি আবদুল আহাদের নিকট থেকে ভিকটিম শাকিলের সেমসাং গেলাক্সি এ ৭২ প্রো মোবাইল, মুল্য ৫০,০০০/= টাকা। মুক্তিপনের আদায়কৃত ৪৩৫০/= টাকা, আসামি জহুরা এর নিকট থেকে মুক্তিপনের আদায়কৃত ৫,০০০/= টাকাসহ অপহরণকারীদের নিকট থেকে মুক্তিপন আদায় করার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন বিকাশ নাম্বার সম্বলিত মোট ৯টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন আরো জানান, চক্রটি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, ইমো, হায়াটস অ্যাপ,ম্যাসেঞ্জারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রবাসীদের প্রেমের ফাদে ফাঁসিয়ে মুক্তিপণ আদায় করা। এই চক্রের সাংবাদিক পরিচয়ধারী মশিউর রহমানের মোবাইলের অনেকগুলো অশ্লীল ভিডিও পাওয়া গেছে। অপর অপরাধী সাজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে সাতটি মামলা রয়েছে। এসব ঘটনায় তাদের বিরূদ্ধে আইনগত ব্যবস্থ গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ
সাইবার আইনের মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে, গ্রেপ্তাররা মুক্তি পাচ্ছেন
সাবেক এমপি সুজনের জামিন না মঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ