October 31, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, August 22nd, 2022, 3:23 pm

পাটের দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা

ফাইল ছবি

পাটের রাজধানী ফদিরপুরের বিভিন্ন হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে সোনালী আশ খ্যাত পাট। সংসারের দৈনন্দিন খরচ মেটাতে উৎপাদিত এই পণ্য বাজারে এনে কাঙ্খিত দাম না পেয়ে হতাশ চাষিরা।

জেলার সালথা, নগরকান্দা, বোয়ালমারীসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রতিটি হাটেই পাট উঠতে শুরু করেছে। তবে এবার সময় মতো পাট জাগের পানি না পাওয়ায় অধিক মূল্য দিয়ে ডিজেল চালিত সেলো মেশিন দিয়ে ভূগর্ভস্থল থেকে পানি তুলে জাগ দিতে হয়েছে। এতে চাষিদের খরচ বেড়েছে। অথচ পাটের এই ভরা মৌসুমে উৎপাদন খরচই তুলতে পারছে না তারা।

এদিকে, পাটের বাজার হিসেবে জেলায় প্রসিদ্ধ হাট কানাইপুর। সপ্তাহে শুক্র ও মঙ্গলবার এখানে বাজার বসে। তাই প্রান্তিক চাষিরা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে তাদের উৎপাদিত পাট নিয়ে আসে এখানে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এই বাজারে পাট উৎপাদন মৌসুমে প্রতি হাটে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার মণ পাট কেনা বেচা হয়। বর্তমানে কানাইপুর হাটে পাটের দর রয়েছে ২২শ থেকে ২৮শ টাকা। তবে দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা।

তবে পাট ক্রেতার বলছেন, পাটের গুণগত মান সঠিক নেই। পানি সমস্যার কারণে পাটের রং এবার নষ্ট হয়েছে। যে কারণে প্রকৃত মূল্যে পাট ক্রয় করতে পারছি না।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার পাটের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এর বিপরীতে জেলায় মোট ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে।

কানাইপুর বাজারের পাট নিয়ে আসা চাষি সত্তার মাতুব্বর, কালাম মোল্লাসহ বেশ কয়েক জন চাষি বলেন, যে দরের আশায় পাট নিয়ে হাটে এসেছি তা মিলছে না, পাটের উৎপাদন খরচ বাড়ছে, নিত্যপণের দাম বেড়েছে, কীভাবে সংসার চলবে।

বাজারের পাট বিক্রেতারা বলেন, যে কোনো মৌসুমের চেয়ে এবারের পাটে উৎপাদন অনেক বেশি হয়েছে। পাট জাগ দেয়ার পানি সংকটের জন্য আমরা বিপদে পড়েছি।

কানাইপুর বাজারের পাট ব্যসায়ী ও কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির বেলায়েত হোসেন বলেন, পাটের বাজারের জন্য কানাইপুর বেশ সুনাম রয়েছে, প্রান্তিক চাষিরা তাদের উৎপাদিত পাট বিক্রয়ের জন্য সরাসরি এই বাজারে নিয়ে আসে। কিন্তু এবারের পানি সংকটে পাটের সোনালী রং আসেনি, এতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি বলেন, এই বাজারে সরকারি ও বেসরকারি পাটকল কর্তৃপক্ষের এজেন্ট রয়েছে, তারা চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি পাট ক্রয় করে থাকে। কিন্তু এবারের পাটের ভালো রং না থাকায় চাষি পর্যায়ে দর পাচ্ছে না।

ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম বলেন, পাট উৎপাদনের সেরা ফরিদপুর । গোল্ডেন ফাইবারটি এ জেলাতে হয়। চাষিরা আবাদ ভালো করেছে, উৎপাদনও ভালো, কিন্তু পাটের জাগ দেয়ার সমস্যার কারণে রংটি আসেনি। যে কারণে চাষি পর্যায়ে দর ভালো পাচ্ছে না। এতে শুধু চাষি নয়, পাটের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত (ব্যবসায়ী, মিলকারখানা) সবাই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ল।

—ইউএনবি