November 30, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, August 23rd, 2022, 7:54 pm

ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিল ইউনাইটেড

অনলাইন ডেস্ক :

মৌসুমে ভীষণ বাজে শুরুর পর আত্মবিশ্বাস থাকার কথা তলানিতে। এমন কঠিন অবস্থায় লড়াই আবার লিভারপুলের মতো দলের বিপক্ষে। হারানো মর্যাদা ফিরে পাওয়ার এবং নিজেদের জাত চেনানোর জন্য ‘হাইভোল্টেজ’ ম্যাচটিকেই বেছে নিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। চেনা আঙিনায় দারুণ এক জয়ে আভাস দিল ঘুরে দাঁড়ানোর। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সোমবার রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে ইউনাইটেড। জেডন স্যানচো দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান মার্কাস র‌্যাশফোর্ড। শেষ দিকে লিভারপুলের একমাত্র গোলটি করেন মোহামেদ সালাহ। নতুন কোচ এরিক টেন হাগের কোচিংয়ে এটাই ইউনাইটেডের প্রথম জয়। প্রথম দুই রাউন্ডের পারফরম্যান্স কিংবা পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান, কোনোটাই সুখকর ছিল না দল দুটির কারো জন্য। লিভারপুল করেছিল দুটি ড্র আর ইউনাইটেড হেরেছিল দুটিতেই। স্কোয়াডের গভীরতায় অবশ্য এগিয়ে ছিল সফরকারীরা। গত মৌসুমের মুখোমুখি লড়াইয়ের ফলও তাদের পক্ষে ছিল; দুই দেখায় ৫-০ ও ৪-০ গোলে জিতেছিল লিভারপুল। তবে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ইউনাইটেড শুরু থেকেই ছিল দারুণ উজ্জীবিত। গত মৌসুমে দলের সর্বোচ্চ স্কোরার ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও অধিনায়ক হ্যারি ম্যাকগুইয়ারকে বেঞ্চে রেখে মাঠে নামে স্বাগতিকরা। প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে তারা। দশম মিনিটেই গোল পেতে পারতো তারা। ব্রুনো ফের্নান্দেসের স্লাইড পাস ডি-বক্সে পেয়ে কোনাকুনি শট নেন অ্যান্থনি এলাঙ্গা, কিন্তু বল বাধা পায় পোস্টে। ছয় মিনিট পরেই অবশ্য এগিয়ে যায় তারা। গোছালো আক্রমণে বাঁ থেকে এলাঙ্গার পাস ডি-বক্সে ঠা-া মাথায় নিয়ন্ত্রণে নেন স্যানচো। সামনে প্রতিপক্ষের মিডফিল্ডার জেমস মিলনার ছুটে আসতে দেখে শট নিতে গিয়ে নেননি স্যানচো। সময় নিয়ে দ্বিতীয়বারে প্লেসিং শটে গোলটি করেন তরুণ ইংলিশ ফরোয়ার্ড। প্রথম ২৫ মিনিটের একটানা প্রতিপক্ষের চাপ সামলে ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নেয় লিভারপুল। ৪১তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল তারা; কোনোমতে রক্ষা পায় ইউনাইনটেড। মিলনারের কোনাকুনি হেড গোলমুখে ঠেকাতে গিয়ে নিজেদের জালেই জড়াতে বসেছিলেন ফের্নান্দেস, গোললাইনে দাঁড়ানো আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্তিনেসের গায়ে লেগে প্রতিহত হয় বল। দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুল ঘুরে দাঁড়াবে কী, উল্টো ৫৩তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে তাদের স্তব্ধ করে দেন র‌্যাশফোর্ড। এলাঙ্গার বদলি নামা অঁতনি মার্সিয়ালের থ্রু পাস মাঝমাঠের কাছে অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নেন তিনি। দারুণ গতিতে ডি-বক্সে ঢুকে জোরাল শটে কাছের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড। দুই মিনিট পর আবারও লিভারপুলের গোলমুখে হানা দেয় ইউনাইটেড। সতীর্থের উঁচু করে বাড়ানো বল ডি-বক্সে বুক দিয়ে নামিয়ে ফ্রেদ ছোট করে বাড়ান সামনে র‌্যাশফোর্ডকে। তার কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান আলিসন। দীর্ঘদিন ধরে ছন্দে না থাকায় র‌্যাশফোর্ডকে বারবার সমালোচনা সইতে হয়েছে। দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে নিজেকে মেলে ধরে যেন তিনি জানান দিলেন, এখনও ফুরিয়ে যাননি। ৭৫তম মিনিটে ডান দিক দিয়ে আক্রমণে শাণিয়ে তিন জনের মধ্যে দিয়ে বল বের করে নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। তবে তার উঁচু শট ক্রসবার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ৮১তম মিনিটে ব্যবধান কমিয়ে লড়াই আরও জমিয়ে তোলেন সালাহ। ট্রেন্ট-অ্যালেকজ্যান্ডার আর্নল্ডের কর্নারে জোরাল শট নেন ফাবিও কারবাইয়ো, গোলরক্ষক দে হেয়া ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি বল পেয়ে নিচু হেডে জাল খুঁজে নেন সালাহ। ব্যবধান কমায় নতুন নাটকীয়তার আভাস মিললেও কার্যত তার হয়নি তেমন কিছু। বাকি সময়ে নিশ্চিত আর কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি পুরো ম্যাচে মাত্র একটি শট লক্ষ্যে রাখতে পারা লিভারপুল। রোনালদোকে ৮৬তম মিনিটে র‌্যাশফোর্ডের বদলি নামান কোচ। স্বল্প সময়ে তিনি অবশ্য পারেননি উল্লেখযোগ্য কিছু করে দেখাতে। তবে দলের চাওয়া পূর্ণ হয়েছে শতভাগ। মিলেছে পূর্ণ পয়েন্ট। আর এই ৩ পয়েন্টে এক লাফে পয়েন্ট টেবিলে ১৯ থেকে ১৪ নম্বরে উঠেছে ইউনাইটেড। লিভারপুল ২ পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেছে ১৬ নম্বরে। ম্যাচ শুরুর আগে ইউনাইটেড পরিচয় করিয়ে দেয় রিয়াল মাদ্রিদ থেকে দলে টানা কাসেমিরোকে। আগামী সপ্তাহে পরের ম্যাচে সাউথ্যাম্পটনের মাঠে খেলবে রেকর্ড চ্যাম্পিয়নরা। ওই ম্যাচেই অভিষেক হতে পারে এই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্সিভ-মিডফিল্ডারের। ম্যাচের আগে ইউনাইটেডের মালিকপক্ষ গ্লেজার পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্লাবটির সমর্থকরা। পরিস্থিতি সামলাতে আসে পুলিশ। লিভারপুলকে হারানোর পর হয়তো কিছুটা শান্ত হবেন ভক্তরা।