অনলাইন ডেস্ক :
রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর পরেই অবস্থান করিম বেনজেমার। তবে দুজনের মাঝে পার্থক্যটা বিশাল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও তাদের গোলের ব্যবধান অনেক। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত ছন্দে থাকলেও ফরাসি স্ট্রাইকার তাই খুব ভালো করেই জানেন, পর্তুগিজ তারকার রেকর্ড স্পর্শ করা তার পক্ষে অসম্ভব। তাই গোলের সংখ্যায় মনোযোগ না দিয়ে তিনি কেবল দলের জয়ে রেখে যেতে চান অবদান। আগামী ডিসেম্বরে ৩৫ বছর পূর্ণ হবে বেনজেমার। তবে তার পারফরম্যান্সে নেই তার ছাপ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি যেন হয়ে উঠছেন অপ্রতিরোধ্য। ২০২১-২২ মৌসুমে রিয়ালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল বেনজেমার। লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ছিলেন মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা। লা লিগায় ২৭ গোল করে জিতে নেন পিচিচি ট্রফি। আর ইউরোপ সেরার মঞ্চে করেন ১৫টি। মাদ্রিদের দলটির হয়ে গেল মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৬ ম্যাচে তার গোল ৪৪টি। ক্লাব ও জাতীয় দলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতিস্বরূপ বৃহস্পতিবার উয়েফার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জেতেন বেনজেমা। পরে ইউরোপিয়ান স্পোর্টস মিডিয়াকে (ইএসএম) বলেন, ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দল জেতানোর ভাবনা নিয়েই মাঠে নামেন তিনি। “৩৪ বছর বয়সে এসে এখন আমি আরও ভালো অনুভব করছি, আগের চেয়ে ভালো খেলছি। এটা সত্যি যে, ব্যক্তিগত দিক থেকে এই মৌসুম আমার ক্যারিয়ারের সেরা। তবে একটা জায়গায় কোনো পরিবর্তন হয়নি। ম্যাচ জিততে আমার কী করণীয়, সেটা ভেবেই আমি মাঠে যাই। দল নিয়ে ভাবি, নিজেকে নিয়ে নয়।” রিয়ালের সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের মূল নায়ক ছিলেন বেনজেমা। বারবার দলকে হারের দুয়ার থেকে টেনে আনেন তিনি। শেষ ষোলোয় পিএসজি ও কোয়ার্টার-ফাইনালে চেলসির বিপক্ষে করেন হ্যাটট্রিক, ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষেও সেমি-ফাইনালে দুই লেগ মিলিয়ে করেন তিন গোল। সব মিলিয়ে আসরে তার ১৫ গোলের ১০টিই ছিল নকআউট পর্বে। এ নিয়ে পঞ্চম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতলেন বেনজেমা। তবে এবারের জয় তার কাছে সবচেয়ে কঠিন ও উপভোগ্য। “যদিও প্রতিটি শিরোপার নিজস্ব ইতিহাস আছে এবং সবগুলোই আলাদা। তবে বলতে পারি যে আমার জেতা পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মধ্যে এটাই ছিল সবচেয়ে কঠিন। কোণঠাসা অবস্থা থেকে বারবার আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি এবং কখনও হাল ছেড়ে দেইনি, এসব কারণে আমার কাছে এবারেরটা সবচেয়ে উপভোগ্যও ছিল।” রিয়ালে রোনালদো থাকাকালীন সেভাবে কখনোই পাদপ্রদীপের আলোয় আসতে পারেননি বেনজেমা। ২০১৮ সালে পর্তুগিজ তারকা চলে যাওয়ার পর নিজেকে নতুনভাবে মেলে ধরেন তিনি। দলের মূল গোলদাতার দায়িত্ব পালন করছেন, সঙ্গে সতীর্থদের দিয়েও করাচ্ছেন গোল। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কিংবা রিয়ালে রোনালদোর গোলের রেকর্ড ছোঁয়া এখনও বহু দূরের পথ বেনজেমার জন্য। ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতায় সাবেক রিয়াল ফরোয়ার্ডের গোল ১৪০টি। ১২৫ গোল নিয়ে দুই নম্বরে আছেন লিওনেল মেসি। রবের্ত লেভানদোভস্কির সঙ্গে যৌথভাবে তালিকায় তিনে বেনজেমা। দুইজনেরই গোল ৮৬টি করে। আর রিয়ালের ইতহাসে রেকর্ড ৪৫০ গোল রোনালদোর। সেখানে ৩২৫ গোল নিয়ে দুই নম্বরে আছেন বেনজেমা। “ক্রিস্তিয়ানো আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। সে যখন এখানে ছিল তখন আমার ভূমিকা ভিন্ন ছিল। তবে সে চলে যাওয়ার পর বুঝলাম, গোল করার জন্য এখন আমি এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারিৃ” “এরপর থেকে যেখানে বদল এসেছে তা হলো আমার গোল সংখ্যায়। তবে আমি এখনও সেভাবেই খেলছি, যেভাবে খেলাটি খেলতে হয়। পরিসংখ্যান বলছে, রিয়াল মাদ্রিদ কিংবদন্তি থেকে বেশি দূরে না আমি। এটা আমাকে আত্মবিশ্বাস যোগায়। যদিও আমি জানি, ক্রিস্তিয়ানোর গোল স্পর্শ করা অসম্ভব।” অসম্ভবের পেছনে না ছুটে নিজের দল নিয়ে ভাবাকেই শ্রেয় মনে করেন বেনজেমা। “একারণে দলের জয়ে সাহায্য করতে মাঠে আমি কী করতে পারি, সেদিকেই কেবল মনোযোগ দিই। (গোল) সংখ্যা খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি শুধু শিরোপা কিংবা গোলের কথা ভেবে খেলি না।” “ফুটবল ভালোবাসি, এই কারণে খেলি। আমার অবশ্যই স্বপ্ন আছে, বিশ্বকাপ ও ব্যালন ডি’অর জেতা।”
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা