বর্ষার মৌসুমে এবার বৃষ্টির দেখা নেই। তাই খুলনায় বীজতলা কৃষি জমিতে নদীর পানি ব্যবহার শুরু করছে খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই মাসের শেষ দিকে হতে থেমে থেমে মাঝারী বা ছিটে ফোটা বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম বা মাঝামাঝি সময়ে নিম্নচাপ হতে পারে, সেই সময়ে ভারী বৃষ্টি হতে পারে এমনটি আশা করছেন আবহাওয়া অফিস।
তবে ভরা মৌসুমে কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা না পেয়ে হতাশায় কৃষকসহ মৎস চাষিরা। সেই সঙ্গে গরমে ভোগান্তি পড়েছে সাধারণ মানুষ। তবে সব থেকে বেশি বিপাকে রয়েছে পাট চাষি, তারা পাট জাক দিতে পারছে না।
মৎস ঘেরে পানির অভাবে মাছ বড় হচ্ছে না। নিয়মিত খাবার পেলেও বর্ষার পানির সঙ্গে মাছের বড় হওয়ার একটি যোগ আছে বলে জানান মৎস চাষিরা।
তাছাড়া নলকূপ থেকে পানি উঠিয়ে মৎস খামারে দিতে হচ্ছে। এতে করে তাদের মাছ চাষের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
তাছাড়া জেলার আমন চাষসহ অন্যান্য ফসলি জমি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা। তবে একেবারে আশা না ছেড়ে বৃষ্টি অপেক্ষার প্রহর গুণছেন কৃষকেরা।
এদিকে, কৃষি কর্মকর্তারা আশাঙ্কা করছেন যে এমন উষ্ণ আবহাওয়া যদি চলমান থাকে আর ছিটে ফোঁটা বৃষ্টি হয়। তাহলে কৃষি উৎপাদন মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এ বছর বৃষ্টির দেখা নেই এটা এখন বৈশ্বিক সমস্যা। জুলাই-আগস্ট মাসে মোট ৬শ’মিলিমিটারের মত বৃষ্টিপাত হয়েছে। যে কারণে আমরা ফসলের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কিত আছি। তবে এর বিকল্প হিসেবে আমরা নদীর পানি ব্যবহার করবো। ইতোমধ্যে আমরা পানি পরীক্ষা করেছি। খুলনা কয়রা ও দাকোপ উপজেলা ছাড়া অন্যান্য নদীর পানি ব্যবহার উপযোগী।
তিনি বলেন, এ অঞ্চলের নদীর পানি ২ ডিএস এর নিচে আছে তবে ৪ ডিএস ওপরে থাকলে অতিরিক্ত পানি লবণাক্ত থাকে। যে কারণে আমরা বিকল্প নদীর পানি ব্যবহার শুরু করেছি। লক্ষ্য হিসেবে পাঁচ হাজার হেক্টর বীজতলার ফসলী আবাদের জমিতে পানি দেয়া হবে। এর মধ্যে ১০৯ হেক্টর জমিতে নদীর পানি সুইচ গেটের মাধ্যমে খালে ও বিলে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এভাবে পানির সঙ্কট মোকাবিলা করতে হবে। তবে কয়রা ও দাকোপে খাল ও বিলের পানি ব্যবহার ছাড়া কোন উপায় দেখছি না। এছাড়া মাটির তলোদেশের পানি বেশি লবণাক্তের কারণে এই বিকল্প উপায় ব্যবহার করছি। তবে আমরা আশাবাদী লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবো।
এ ব্যাপারে খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের আঞ্চলিক আবহাওয়া কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ মাসে শেষের দিকে বৃষ্টির সম্ভবনা আছে। এছাড়া ছিটে ফোটা দুই এক পশলা বৃষ্টি হতে পারে। তবে আকাশ এখন মেঘমুক্ত। সেপ্টেম্বর মাসে নিম্নচাপ হলে মাঝারী বা ভারী বৃষ্টি হওয়ার আশাঙ্কা আছে। মূলত মৌসুমী বায়ু এখনও সক্রিয় নেই যে কারণে বৃষ্টি হচ্ছে না।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি