অনলাইন ডেস্ক :
দীর্ঘদিন ধরে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে রান পাচ্ছেন না। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বাদ পড়েছিলেন টি-টোয়েন্টি দল থেকেও। তারপরও পরবর্তী ইভেন্টগুলোতে টিকে যান অভিজ্ঞতার কারণে। কিন্তু সেই সুযোগটা ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলেন কই? বরং এশিয়া কাপে চরম ব্যর্থতায় বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ক্যাচ মিস করে। প্রবল সমালোচনার মুখে অবশেষে কুড়ি ওভারের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। এমন ঘোষণায় হতবাক তার দীর্ঘদিনের সতীর্থ ও আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নিজের ফেসবুক পেজে আবেগঘন এক পোস্টে মুশফিকের সঙ্গে ছবি দিয়ে মাহমুদউল্লাহ লিখেছেন, ‘প্রিয় মুশফিক, তোমার ঘোষণায় আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। তবু তোমার টি-টোয়েন্টির অর্জন ও ক্যারিয়ারের জন্য অভিনন্দন জানাই। তোমার সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে খেলতে পারা ছিল আনন্দদায়ক। কাজের প্রতি তোমার যে নিষ্ঠা, তা যেকোনও ফরম্যাটে সবসময়ের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক হয়ে থাকবে।’ শুধু মাহমুদউল্লাহ নন, তরুণ ও সিনিয়র অনেক ক্রিকেটারই মুশফিকের বিদায়ে আপ্লুত। তরুণ ব্যাটার আফিফ হোসেন লিখেছেন, ‘আশা করি আপনার ভবিষ্যৎ যাত্রা আরও বেশি সফল হবে মুশফিকুর রহিম ভাই।’ জাতীয় দলের বাইরে থাকা ব্যাটার সৌম্য সরকার লিখেছেন, ‘মুশফিক ভাই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছেন।’ পেসার তাসকিন আহমেদ বলেছেন, ‘ধন্যবাদ, টি-টোয়েন্টির লিজেন্ড মুশফিকুর রহিম।’ ইয়াসির আলী রাব্বির চোখে একটি টি-টোয়েন্টি যুগের অবসান, ‘মুশফিক ভাই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। একটি টি-টোয়েন্টি যুগের শেষ।’ উইকেটকিপার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহানও লিখেছেন, ‘মাঠের ভেতর ও বাইরে আপনি সবসময় আমাদের অনুপ্রেরণা। শুভ হোক টি-টোয়েন্টি অবসর মুশফিকুর রহিম ভাই। অনাগত দিনগুলোর জন্য শুভ কামনা।’ তরুণ ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয় মুশফিকের একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘সমস্ত স্মৃতির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, মিস্টার ডিপেন্ডেবল! শুভ হোক টি-টোয়েন্টি অবসর।’ জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া পেসার রুবেল হোসেন মুশফিকের সঙ্গে নিজের হাস্যোজ্জ্বল ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘থ্যাঙ্ক ইউ মিস্টার ডিপেন্ডেবল। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা, কিন্তু এটাও সত্য আপনাকে বাংলাদেশ মিস করবে।’ সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার আতাহার আলী খান শুভকামনা জানিয়ে লিখেছেন, ‘মুশফিকুর রহিম টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। তার জন্য শুভকামনা জানাচ্ছি।’ সাবেক ব্যাটার শাহরিয়ার নাফিস মুশফিকের অবদানের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তোমার অবদানের জন্য ধন্যবাদ। ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা।’ ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাদ পড়ার পর মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে কেবল একটি ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন মুশফিক। ওই ম্যাচে ৩০ রান করেছিলেন। এরপর এশিয়া কাপে দুই ম্যাচেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মুশফিকের ভুল যেন নিয়মিত ঘটনা। ২০১৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের রানআউট মিস করায় ম্যাচটা হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। এমন বহু ঘটনা অহরহ আছে তার ক্যারিয়ারে। এশিয়া কাপে কুশল মেন্ডিসের সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেওয়া এবং রিভিউ নিতে না পারায় ক্রিকেট সমর্থকদেরও চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন চলমান এশিয়া কাপে। ২০০৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি দলের সদস্য মুশফিক বিদায়ের আগে খেলেছেন ১০২টি ম্যাচ। যা বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ৬ হাফসেঞ্চুরিতে ১১৫.০৩ স্ট্রাইক রেটে ১৯.৪৮ গড়ে ১ হাজার ৫০০ রান করে মুশফিক তার ক্যারিয়ার শেষ করলেন।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা