নিজস্ব প্রতিবেদক , রংপুর :
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের গুঞ্জর খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় একটি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে এই কাজ অনিয়মের মাধ্যমে কাজ করছেন। স্থানীয় এলাকাবাসীরা এমন অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় সাধারণ জনগণ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসীসহ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তারা বিদ্যালয়টির ভবিষৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কারণ নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে বিদ্যালয়টি নির্মাণের ফলে ভবিষৎ ঝুঁকি রয়েছে।
স্থানীয়রা বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণ কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত পূর্বক কাজ বন্ধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ ও সরেজমিনে জানা গেছে, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের হাউদারপাড় বাজার এলাকায় অবস্থিত গুঞ্জর খাঁ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। দীর্ঘদিন যাবৎ শ্রেণী কক্ষ সংকট রয়েছে। এতে দিন দিন কমতে থাকে শিক্ষার্থীর সংখ্যার। এই পরিস্থিতিতে সরকারী ভাবে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। এর পরেই চলতি বছরের জুলাই মাসে বিদ্যালয়টির নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজ শুরু থেকেই স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাফা কন্সট্রাকশন অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। তারা ঢালাই কাজে কয়েক প্রকার বালুসহ নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে। এনিয়ে স্থানীয়রা এলাকাবাসীরা কয়েকবার তাদের বললেও ঠিকাদার কোন কর্নপাত না করেই নিজের ইচ্ছামত কাজ করে আসছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, ভবন নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এলজিইডি বিভাগের উধ্বর্তন কর্মকর্তার ইন্ধনে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় অনিয়ম-র্দুনীতি শুরু করে। তারা ঢালাইয়ে তিন প্রকার বালুর সংমিশ্রণে কাজ করাচ্ছে। ঢালাইয়ের সময় সঠিক নিয়মে সিমেন্ট ব্যবহার না, নি¤œমানের ইট ব্যবহারসহ অনিয়ম করছে। যা নিয়ে এলাকাবাসীরা পীরগাছা উপজেলায় এলজিইডি দপ্তরে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল ইসলামের সাথে একাধিকবার কথা বলেন। তিনি অভিযোগের বিষয়টি কোন কর্ণপাত করেননি। এনিয়ে স্থানীয়রা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকারী প্রতিষ্ঠানের কাজ অথচ অনিয়ম দুর্নীতিতে ভরা। অভিযোগ করেও কোন কাজ হচ্ছে না। এখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করবে। ভবন নির্মাণে এমন অনিয়ম হলে ভবিষৎ ঝুঁকি থাকবে। এর দায় নিবে কে!
সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডির অর্থায়নে DHK/GOB/2021/0065 স্বারকে ৮৭ লাখ আটাশ হাজার ২০০ টাকা ব্যায়ে নির্মাণাধীন ভবনটির গ্রেডবিম পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ইং শনিবার ঢালাইয়ের শাটারিংয়ের কাঠ খুলতে গেলে দেখা যায়, পুরো বিল্ডিংয়ে অসংখ্য যায়গায় গ্রেড বিমের মাঝামাঝি বেশ কিছু যায়গা ফাঁকা রয়েছে। পরে স্থানীয়রা নিম্নমানের কাজ হয়েছে মর্মে পুনরায় ভালো করে কাজ করার দাবি জানান। তারা পীরগাছা উপজেলা দায়িত্বরত এলজিইডি দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল ইসলামকে বিষয়টি অবগত করেন।
এব্যাপারে পীরগাছা উপজেলার এলজিইডি দপ্তরে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল ইসলামের সাথে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি দেখছি। যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রংপুরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। আমি সরেজমিন পরিদশন করবো। এঘটনায় যদি প্রধান শিক্ষকসহ যতবড় শক্তিশালী কেউ জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।###
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি