November 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, September 23rd, 2022, 7:07 pm

দুর্গাপূজা: এমন উৎসব যা বাংলাদেশকে এক করে

প্রেম ও সৌহার্দ্যের চেতনায় পরিপূর্ণ দুর্গাপূজা বাংলাদেশে একতার উৎসব। সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠ যেই হোক না কেন, এই উৎসবে মণ্ডপে ভিড় করার, ঢাকের (একটি বিশেষ বাজনা যন্ত্র) ধ্বনিতে নাচার ও মনোরম ভোগ নেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন না।

ফরিদপুর, নেত্রকোণা ও খুলনাসহ সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে হিন্দু দেবদেবীর প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত দিন পার করছেন ‘পাল’ নামে পরিচিত প্রতিমা কারিগররা।

১ অক্টোবর উৎসব শুরু হবে ষষ্ঠী উপলক্ষে দুর্গার অবতারণার মাধ্যমে এবং প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে উৎসব শেষ হবে ৫ অক্টোবর।

প্রতিমাগুলো যেন সময়মতো প্রস্তুত হয় তা নিশ্চিত করতে পালরা দিনরাত কাজ করে চলেছে। উৎসব দরজায় কড়া নাড়ছে বলে প্রতিমার কারিগররা প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা কাজ করছে।

ফরিদপুর জেলার প্রতিমা কারিগর সুকুমার পাল বলেন, ‘প্রতিমা তৈরির কাঁচামালের দাম অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিটি প্রতিমার জন্য ৪০ হাজার টাকা নিচ্ছি, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়।’

তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে সবকিছুর দাম বাড়লেও আমাদের আয় তেমন বাড়েনি।

এ ব্যাপারে জেলার বেলেশ্বরের বিশ্বজিৎ পাল জানান, শোভারামপুর বোর্ড অফিসের সামনে তিনি প্রতিমা তৈরি করছেন। এবছর প্রতিটি প্রতিমা তৈরি করতে তিনি ৫০ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন। মোট আটটি প্রতিমা তৈরি করছেন তিনি। এর মধ্যে ফরিদপুর শহরে একটি প্রতিমা তিনি গড়াচ্ছেন‌। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে তার প্রতিমা বেশি।

তিনি বলেন, এবছর জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণে এই টাকা নেবার পরও তার হাতে তেমন কিছু থাকবে না।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, জেলার ৯টি উপজেলার ৮২৯টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি জানান, ‘শান্তিপূর্ণ ও সফলভাবে পূজা উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

নেত্রকোণা জেলায় শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

নেত্রকোণা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জ্ঞানেশ চন্দ্র সরকার জানান, জেলায় এই বড় উৎসবের জন্য প্রায় ৫২৬টি পূজা মণ্ডপ স্থাপন করা হয়েছে। দুর্গা ও অন্যান্য প্রতিমার চূড়ান্ত ছোঁয়া দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভাস্কররা।

তিনি আরও বলেন, সব পূজা মণ্ডপে চলছে আলোকসজ্জা ও চূড়ান্ত সাজসজ্জার কাজ।

বহু বছর ধরে প্রতিমা তৈরির পেশায় নিয়োজিত নিখিল পাল বলেন, আমরা সারা বছর দুর্গাপূজার জন্য অপেক্ষা করি। অন্যান্য বছরের মতো এবারও বেশ কিছু প্রতিমা তৈরি করছি কিন্তু কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় খুব বেশি লাভের আশা করা কঠিন।

নেত্রকোণা পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম খান বলেন, শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপনের জন্য আমাদের স্বেচ্ছাসেবক পৌর এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে প্রস্তুত। এছাড়া পূজা আয়োজনে পৌরসভা সার্বিক সহযোগিতা করবে।

নেত্রকোণা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ জানান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রতিটি মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে বলা হয়েছে।

পূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাদা পোশাকের পুলিশসহ ইউনিফর্মধারী পুলিশ এলাকায় মোতায়েন থাকবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

খুলনা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক কৃষ্ণ পদ দাস জানান, কিশোরগঞ্জে মোট এক হাজার ২৫টি পূজা মণ্ডপ স্থাপন করা হয়েছে। এ বছর অতিরিক্ত ২৩টি মণ্ডপ স্থাপন করা হয়েছে।

দাস আরও জানিয়েছেন, সমস্ত তথ্য ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং আমরা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মণ্ডপ এলাকায় পুলিশ টহল বাড়ানোর জন্য তাদের অনুরোধ করেছি।

নগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল হালদার বলেন, প্রতিটি মণ্ডপে আলোকসজ্জার অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

—-ইউএনবি