নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর :
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ বলেছেন, সেশনজট প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য অভিশাপ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছরের সেশনজট ছিলো। গত এক বছরে সেশনজট প্রায় শুন্য হতে চলেছে। এটি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সাফল্য। আগামীতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছরের ডিগ্রি চার বছরেই সম্পন্ন হবে। এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লেখাপড়া শেষ করে ছাত্রছাত্রীরা তাদের নিজ নিজ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শ্রেণীকক্ষের সংকটসহ বিদ্যমান সমস্যাগুলি পর্যায়ক্রমে সমাধান হতে চলেছে। তাই শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে উন্নয়ন ও সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। আজ বুধবার সকালে প্রতিষ্ঠা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বেরোবির উপাচার্য আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে গেটের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। নতুন আরো একটি স্বতন্ত্র পরীক্ষা হল নির্মাণ করা হবে। বেশ কিছু ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছি। তিনি বলেন, এই বিশ^বিদ্যালয়ের কোন সমস্যাই আমার সৃষ্ট নয়। কিন্তু আমি সমাধানের জন্য দিন রাত আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এই বিশ^বিদ্যালয়টি আমাদের সবার। সুতরাং নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনসহ উন্নয়ন কার্যক্রমে সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক মাঠে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. মোঃ গাজী মাজহারুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সরিফা সালোয়া ডিনা বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সাফল্য অর্জনে সঠিক নেতৃত্ব দিয়েছেন বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ।
এসময় বেরোবির ট্রেজারার প্রফেসর ড. মজিব উদ্দিন আহমদ বলেন, সাফল্যের এই ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শুধু উত্তর জনপদেই নয় দেশের সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটি ২০২২ এর সদস্য সচিব ও ছাত্রউপদেষ্টা মোঃ নুরুজ্জামান খানের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনষদের ডিন মোঃ শরিফুল ইসলাম, জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আবু রেজা মোঃ তৌফিকুল ইসলাম, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ মতিউর রহমান, বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর চৌধুরী, গণিত বিভাগের অধ্যাপক কমলেশ চন্দ্র রায়, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ারুল আজিম, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, বেরোবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম, তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান, কর্মচারী ইউনিয়নের (চতুর্থ শ্রেণী) সভাপতি নূর আলম মিয়া।
এছাড়া দিবসটি উদযাপনে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সকালে প্রশাসন ভবনের দক্ষিণ গেটের সামনে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সরিফা সালোয়া ডিনা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ বিশ^বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রারকে সাথে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। পরে মহীয়সী বেগম রোকেয়ার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের স্মৃতি হিসেবে একটি বৃক্ষরোপণ করেন।
বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে বর্ণিল আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে পার্কের মোড় প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে ফিরে এসে শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ বর্ণিল শোভাযাত্রায় অংশ নেন। বিকেলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন
এইচএসসির ফল প্রকাশ শিগগিরই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে: বেরোবি উপাচার্য
তিন মাস পর ক্লাসে ফিরলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা