নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন জ্বালানি সঙ্কটে কমে যাচ্ছে। ফলে বাজারে ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ ঘাটতিতে দাম বাড়ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চিয়তার শঙ্কা রয়েছে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ঠিকমতো কারখানা চালাতে পারছে না। পাশাপাশি উৎপাদন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিক সময়েও মাঝে মাঝে অস্থির হয়ে ওঠে আটা, ময়দা, চিনি ও ভোজ্য তেলের মতো নিত্যপণ্যের উৎপাদন ও বাজার। আর বর্তমানে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে কারখানাগুলোতে উৎপাদন দিনের একটা সময় বন্ধ থাকছে। আর নিত্যপণ্যের বাজারে তার প্রভাব পড়ছে। বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে বাজারে সব কোম্পানিরই আটা, ময়দা ও চিনির সরবরাহ কম। পাইকারী ব্যবসায়ীরা অগ্রিম টাকা জমা দিয়েও পর্যাপ্ত মালপত্র পাচ্ছে না। গ্যাস সঙ্কটের কারণে ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চিনি, আটা, ময়দাসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। আগে কারখানাগুলো সার্বক্ষণিক চালু থাকলেও গত এক-দেড় মাস থেকে একটা লম্বা সময় কারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ফলে উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে চাহিদা অনুযায়ী কোম্পানিগুলো পণ্য সরবরাহ দিতে পারছে না।
সূত্র জানায়, দেশে ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী কারখানাগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে যাচ্ছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চিনি কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা আটা ও ময়দা কেজিতে নতুন করে ৫ টাকা বেড়েছে। এখন খোলা আটা কেজি ৬০ টাকা এবং খোলা ময়দা কেজি ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিল্পে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে শুধু যে রপ্তানি পণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে তা নয়, অভ্যন্তরীণ চাহিদার পণ্য উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে এখনই গুরুত্ব দিয়ে ভোগ্য পণ্য উৎপাদনকারী বড় কারখানাগুলোতে আলাদা লাইনের মাধ্যমে হলেও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা জরুরি।
সূত্র আরো জানায়, খোদ রাজধানীতেই এখন দৈনিক ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। যারা ক্যাপটিভ পাওয়ার (গ্যাস দিয়ে নিজস্ব উৎপাদিত বিদ্যুৎ) দিয়ে কারখানা চালাচ্ছে তাদের অবস্থা আরো খারাপ। তারা গ্যাস সঙ্কটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে কারখানাও ঠিকমতো চালু রাখতে পারছে না। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাইস মিল, আটা, ময়দা ও তেলের কারখানাগুলোকে অবশ্যই লোড শেডিংয়ের বাইরে রাখা প্রয়োজন। তা না হলে ভোগ্য পণ্যের উৎপাদন ব্যাহত হয়ে সঙ্কট দেবে। ভোগ্য পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে হলে কারখানাগুলো চালু রাখতেই হবে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি