সিলেটের জকিগঞ্জকে দেশের ২৮ তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেয়া হয়। জকিগঞ্জে ৬৮ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) গত জুন মাসে এটি আবিষ্কার করেছিল, কিন্তু জকিগঞ্জ উপজেলার অনানাদাপুর গ্রামে ড্রিল করা কূপ থেকে গ্যাস পুনরুদ্ধারের সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করার জন্য এতদিন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয় নি।
১৯৭৫ সালে বহুজাতিক শেল তেল কোম্পানি থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সিলেটের পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র দখলের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত উপলক্ষে ৯ আগস্ট জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস পালনের জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কারের এই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন গ্যাসক্ষেত্রে ৬৮ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদ রয়েছে যা আগামী ১২-১৩ বছরে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) উত্তোলনযোগ্য।
‘নতুন গ্যাসক্ষেত্রে সমগ্র রিজার্ভের মূল্য হবে এক হাজার ২৭৬ কোটি টাকা’, তিনি আরও যোগ করেন।
নতুন এই ক্ষেত্রে জীবাশ্ম জ্বালানির সঠিক অবস্থান খুঁজতে একটি থ্রিডি জরিপ করা হবে। এখন পর্যন্ত দেশে ২৭ টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এই গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে ২১ . ৪ প্রমাণিত মজুদ টিসিএফ রয়েছে, আরও ছয়টি টিসিএফ সম্ভাব্য মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে, প্রায় ১৮ টিসিএফ নেয়া হয়েছে। প্রমাণিত স্টক হিসাবে মাত্র তিনটি টিসিএফ বাকি আছে এবং সম্ভাব্য মজুদ আরও সাতটি টিএসএফ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে পুরো গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থাকে একটি অটোমেশনের আওতায় আনার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গ্যাসের লিকেজ ঠেকাতে ঢাকা শহরের পুরনো গ্যাস পাইপলাইনগুলো নতুন করে বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিসুর রহমান বলেন, ‘সরকার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় দুটি কোম্পানি থেকে গ্যাস আমদানি করছে এবং আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে অন্যান্য কোম্পানি থেকেও দেশীয় চাহিদা মেটাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই আমদানির জন্য স্থানীয় গ্যাসের দামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মূল্য কম রাখার জন্য ভর্তুকি হিসেবে ছয় হাজার ৩১২ কোটি টাকা প্রয়োজন, কারণ স্থানীয় গ্যাসের দাম প্রতি ৩-৫ ইউনিট ডলারের বিপরীতে আমদানি খরচ ৮-৯ ডলার।’
আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াসেকা আয়শা খান, একই কমিটির সদস্য খালেদা খান এবং বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ নার্গিস রহমান এবং বুয়েটের অধ্যাপক ড এম তামিম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবিএম আবদুল ফাতাহ, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) এবিএম আজাদ, হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালক মঞ্জুরুল কাদের, ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের (এফইআরবি) চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকার এবং এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন।
–ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি