নিজস্ব প্রতিবেদক:
নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার (২৮ নভেম্বর) শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে নৌযান মালিক ও শ্রমিকদের সংগঠনের বৈঠকের পরে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এদিন বিকেলে বিজয়নগরে শ্রম ভবনে এ বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বিআইডব্লিউটি, শিপিং করপোরেশন, নৌযান মালিক ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, বৈঠকে মালিক শ্রমিকরা তাদের দাবি জানিয়েছেন। আমরা তাদের দাবি ও সমস্যাগুলো দেখছি। একমাসের মধ্যে শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি নির্ধারণে কমিটি করেছি। আর এই একমাস শ্রমিকদের অন্তর্বতীকালীন ভাতা প্রদানের জন্য মালিকপক্ষকে বলেছি। তিনি বলেন, এরমধ্যে মাঝখানের একটি পক্ষ বিশৃঙ্খলা করেছে। কয়েক জায়গায় হামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার ও মামলা হয়েছে। সেটাও আমরা দেখবো। সে মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তাতে আমরা সহযোগিতা করবো বলে শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেছি। মন্নুজান সুফিয়ান আরও বলেন, নৌমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে শ্রম মন্ত্রণালয় এবং মালিক-শ্রমিকদের মিলে এসব দাবি নিরসনে একটি কমিটি হচ্ছে। একমাসের মধ্যে সব সমস্যা সমাধান হবে। ত্রিপাক্ষিকভাবে আমরা কাজ করবো। বৈঠকে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলম কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমরা ১০ দাবি নিয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি। আমাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সভা হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো নির্ধারণে একমাসের মধ্যে কমিটি গঠন ও মামলা প্রত্যাহারসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে আশ্বস্ত করা হয়েছে। আমরা মনে করি দ্রুত সেগুলো ব্যস্তবায়ন হবে। শাহ আলম বলেন, এই মুহূর্ত থেকে সব শ্রমিককে কাজে ফিরতে আহ্বান করছি। যাত্রীবাহী লঞ্চের শ্রমিকদেরও যথাযথভাবে যাত্রী পারাপারের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। নৌযান শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ও কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণসহ বিভিন্ন দাবিতে গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করেছেন নৌযান শ্রমিকরা। কর্মবিরতির কারণে সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেল পর্যন্ত সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। নৌযান শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- নৌযান শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা। ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাস দেয়া। বাল্কহেডের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা। বাংলাদেশের বন্দরগুলো থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করা। চট্টগ্রাম বন্দরে পোতাশ্রয় নির্মাণ ও চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করা। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাইপলাইনে জ¦ালানি তেল সরবরাহের চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা। কর্মস্থলে ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ