নিজস্ব প্রতিবেদক:
তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) পাশাপাশি সরকারের কাছেও আসছে। এখন থেকে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার চাইলে প্রয়োজনে ট্যারিফ বা মূল্য নির্ধারণ করতে পারবে। সোমবার (২৮ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (সংশোধন) অধ্যাদেশে ছোট একটি সংশোধন আনা হচ্ছে। বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে সরকার চাইলে ট্যারিফ নির্ধারণ করতে পারবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশে ২০২২ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদের এখন বিইআরসি (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন) এগুলো (দাম সমম্বয়) সব হ্যান্ডেল করে। কিন্তু বিইআরসির কিছুকিছু জায়গায় একটু সমস্যা হয়, যেমন ৯০ দিন পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত না দিয়ে থাকতে পারে। কারণ আইনে বলা আছে বিইআরসি ৯০ দিনের মধ্যে এগুলো সব শুনানি নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। অনেক সময় আমাদের ইমিডিয়েট প্রয়োজন আসে, অনেক সময় তারা ঠিকভাবে ইয়ে (সমন্বয়) করতে পারে না। এখানে সংশোধনী আনা হচ্ছে। তাহলে কী মন্ত্রণালয় এটি যে কোন সময় করতে পারবে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। যেমন এখন ধরুন ৯০ দিন সময় নিয়ে ওনারা (বিইআরসি) শুনানি নেন। একটা ইমার্জেন্সি আসলো। আবার অনেক সময় দাম কমে গেল কিন্তু বিইআরসি ৯০ দিন ধরে দাম কমাবে। সরকার হস্তক্ষেপ করে একটা নোটিফিকেশন দিয়ে দাম কমিয়ে নিয়ে আসতে পারবে। স্বাভাবিকভাবে দাম সমন্বয়ের কাজ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনই করবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার এ ক্ষেত্রে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবে। বিইআরসি কাজগুলো করবে কিন্তু স্পেশাল যদি কোনো সিনারি হয় তখন সরকার হস্তক্ষেপ করে সেই দামের বিষয়টা হ্যান্ডেল করবে। এদিকে বেসরকারিভাবে জ্বালানির আমদানির সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে সরকার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট জ্বালানি সংকট নিরসনে এমন উদ্যোগ সরকার নিচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে জ্বালানি বিভাগকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ এর খসড়া অনুমোদনের সময় মন্ত্রিসভার সদস্যরা এ বিষয়ে আলোচনা করেন। সেই আলোচনার প্রেক্ষিতেই এমন চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জ্বালানিসহ অন্যান্য এনার্জি বেসরকারিভাবে আমদানির ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা নিয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে দুটি উপায় হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, বেসরকারি আমদানিকারকেরা আমদানি করে নিজেরাই বাজারে বিক্রি করলে বেশি ভালো হবে নাকি তারা আমদানিকৃত জ্বালানি তেল পরিশোধন করে তা বিপিসির কাছে বিক্রি করবে-পরে তা আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, তবে যেটা করতে হবে তা হলো-ক্রুড অয়েল যারা আনবে, বিটুমিনসহ অন্যান্য যে উপজাত পণ্য আসবে এগুলো হয় তারা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করবে অথবা বাইরে রপ্তানি করবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, এ ক্ষেত্রে যেটা রিফাইনড হলো সেটা আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য কিনা, তা বিএসটিআইকে মনিটরিং করতে হবে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এসব বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনায় রাখতে বলা হয়েছে এবং খুব শিগগির সিদ্ধান্তে যেতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি