নিজস্ব প্রতিবেদক :
ধীরগতির উইকেটে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেতাই ব্যাটিং করলেও খুব পিছিয়ে ছিল না বাংলাদেশও। বরং মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের এ রকম উইকেটেই খেলতে অভ্যস্ত স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানরা দায়ও এড়াতে পারেন না। তবে অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৪-১-এ হারানোর আনন্দের কাছে ব্যাটিংয়ের বিষাদ ঘেঁষতেই দিলেন না সিরিজসেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন সংস্করণেই এক হাজার রান ও ১০০ উইকেটের ‘ডাবল’ পূর্ণ করার দিন-রাতে তিনি বরং বুঁদ হয়ে থাকলেন দুর্দান্ত বোলিংয়েই। যে বোলিং তাঁকে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। তবে সে জন্য এমন বোলিংয়ের ধারাবাহিকতার তাগিদ এই অলরাউন্ডারের কথায়, ‘সার্বিকভাবে আমরা প্রতিটি ম্যাচেই খুব ভালো বোলিং করেছি। আমার কাছে মনে জয়, পাঁচটি ম্যাচে বোলিংয়ের যে ধারাবাহিকতা ছিল, সেটি বিশ্বকাপ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারলে আমাদের পক্ষে ভালো কিছু করা সম্ভব।’ কিন্তু দেশের মাটিতেও এমন ব্যাটিং করে কি ব্যাটসম্যানরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপে যেতে পারবেন? সাকিব অবশ্য মনে করেন, জয়ের পর জয় দিয়ে এই আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিও পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব, ‘স্কোরকার্ড দেখে হয়তো অতটা আত্মবিশ্বাসী মনে নাও হতে পারে। তবে জিম্বাবুয়ে সিরিজ জয়, এখানে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়, এরপর নিউজিল্যান্ড সিরিজ আছে। এসব আমাদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে বিশ্বকাপের দিকে এগিয়ে চলার পথে। আমার মনে হয় ভালো প্রস্তুতিই হবে। ব্যাটসম্যানরা হয়তো অত বেশি রান করবে না। যেহেতু আমরা মন্থর, নিচু বাউন্স ও টার্নিং উইকেটেই খেলছি। কিন্তু দলের জয়ই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই আত্মবিশ্বাস থাকলে দলের মনোবল অনেক ভালো থাকে এবং জেতার যে মানসিকতা, তা তৈরি হয়।’ ব্যাটিংয়ের ব্যর্থতাও এই একটি সিরিজ দিয়ে বিচার করতে অনাগ্রহী সাকিব, ‘হয়তো প্রতি ম্যাচেই আমরা ১০-১৫ রান করে বেশি করতে পারতাম। একটি সময় ছিল, যেখানে এটি সম্ভব ছিল। তবু বলতে হয়, উইকেট এতটাই কঠিন ছিল যে ব্যাটসম্যানের জন্য খুবই কঠিন ছিল। ব্যাটসম্যানদের নিয়ে তাই বলার কিছু নেই। আর একটি সিরিজ দিয়ে কাউকে বিচার করাও ঠিক হবে না। কারণ ব্যাটসম্যানদের জন্য কন্ডিশন খুব কঠিন ছিল।’শধষবৎশধহঃযড় কঠিন কন্ডিশনেও অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে হারানোর ক্ষেত্রে দলগত পারফরম্যান্সের ফুল ফোটার সন্তুষ্টিও আছে এই সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১১৪ রান করার পাশাপাশি ৭ উইকেট নেওয়া অলরাউন্ডারের, ‘বড় বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলা হলে বাড়তি অনুপ্রেরণা থাকেই, যারা সাধারণত আমাদের দেশে নিয়মিত সফরে আসে না। যেহেতু জিম্বাবুয়েতে আমাদের ভালো একটি সিরিজ গিয়েছে এবং সবাই খুব অনুপ্রাণিত ছিল যে এই সিরিজটিতেও আমাদের ভালো করতে হবে। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কখনো সিরিজ জিতিনি এবং এটি একটি সুযোগ ছিল। তাই আমরা সবাই চেয়েছিলাম যেন দলগতভাবে ভালো করতে পারি। সেটিই হয়েছে।’ দলীয় সেই সাফল্য এসেছে দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারকে ছাড়াই। মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও লিটন কুমার দাসকে পাওয়া যায়নি এই সিরিজে। তারা ফিরলে দলের শক্তি যেমন বাড়বে, তেমনি দলে জায়গা পাওয়ার লড়াইও আরো জমাট হবে। দুয়ে মিলে বড় দল হওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হবে বলে মনে করেন সাকিব, ‘অবশ্যই এটি আমাদের বড় একটি প্লাস পয়েন্ট যে বেশ কয়েকজন নিয়মিত ক্রিকেটার ছাড়াও আমরা সিরিজটি জিততে পেরেছি। এটি আমাদের আরো বেশি অনুপ্রাণিত করবে এবং তারা যখন ফিরে আসবে দলে, তখন এই দলের শক্তি আরো অনেক বেড়ে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই এটি দলের পরিবেশও আরো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করে তুলবে। বড় দল হয়ে ওঠার জন্য যে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা দরকার, সেটি আমার মনে হয় এখন থেকেই শুরু হবে।’
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা