অনলাইন ডেস্ক :
দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেলের নেতৃত্বে জার্মানি বিশ্বমঞ্চে যথেষ্ট সম্মান ও সম্ভ্রম আদায় করতে পারলেও প্রয়োজনীয় ও সাহসী সংস্কারের অভাবে দেশটির অনেক ক্ষেত্র বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগের ধীরগতি থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর বেহাল অবস্থার উন্নতি থমকে ছিল। ২০২১ সালের শেষে ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বে তিনটি দলের জোট সরকার জার্মানির লাগাম ধরার পর অনেক ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের আশা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। সেই ‘অগ্রসর হওয়ার জোট’ সেই লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচিও ঘোষণা করেছিল। ২০২২ সালের শেষে তার কতটুকু বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে? ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো জার্মানিও গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার ফলে বিহ্বল হয়ে পড়েছে। সব হিসাব গোলমাল করে ইউরোপের একটি দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে ওঠায় শলৎসের সরকারকেও দ্রুত এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, যা কিছুকাল আগেও প্রায় অকল্পনীয় ছিল। জার্মান সংসদে এক ভাষণে ‘যুগান্তকারী পরিবর্তনের’ উল্লেখ করে শলৎস সেনাবাহিনীর সংস্কারের জন্য এক হাজার কোটি ইউরো অঙ্কের এককালীন ব্যয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র সরবরাহ না করার অতীত নীতি ত্যাগ করে ইউক্রেনের জন্য একের পর এক অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি। বছরের পর বছর ধরে জ¦ালানির ক্ষেত্রে রাশিয়ার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কাটিয়ে জার্মানির সরকার প্রায় রাতারাতি বিকল্প নীতি গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। বিশেষ করে গ্যাসের জোগান নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মতো দেশ থেকে জাহাজে করে তরল গ্যাস আমদানির পথ প্রশস্ত করেছে। এ ছাড়া জ¦ালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০২২ সালে পরমাণু শক্তি পুরোপুরি ত্যাগের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত কয়েক মাসের জন্য মুলতবি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চ্যান্সেলর শলৎস। ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে অভূতপূর্ব মূল্যস্ফীতির ধাক্কা থেকে সাধারণ মানুষ ও শিল্প-বাণিজ্যজগতকে কিছুটা অন্তত রেহাই দিতে জার্মানির সরকার দুই হাজার কোটি ইউরো অঙ্কের বিশাল আর্থিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শুধু জার্মানির জন্য এমন ‘একলা চলো রে’ নীতির কারণে ইউরোপের দেশগুলো ক্ষুণ্ণ হলেও অবিচল থেকেছেন শলৎস। ফ্রান্সের সঙ্গে জার্মানির নিবিড় সমন্বয়ের ঐতিহ্যেও বারবার ভাঙন ধরেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নীতির ক্ষেত্রে কিছু প্রতিশ্রুতিও পালন করতে পেরেছে জার্মানির সরকার। নূন্যতম মজুরির হার বাড়ানো, গর্ভপাতসংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, বেকার ও সামাজিক ভাতা প্রণালীর সংস্কার, গাঁজার ক্ষেত্রে আইনি বৈধতার পাশাপাশি জার্মানির নাগরিকত্ব ও অভিবাসন আইনের ব্যাপক সংস্কারের পথে এগোচ্ছে শলৎসের সরকার। সূত্র : ডয়চে ভেলে
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু