এস এ শফি, সিলেট :
জ্বালানি সংকটের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে যাচ্ছেন সিলেটের পেট্রোল পাম্প মালিকরা। আগামী ২২ জানুয়ারি (রোববার) থেকে এ ধর্মঘট শুরু হবে।
শনিবার নগরের দক্ষিণ সুরমায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও পেট্রোল পাম্প অ্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি জুবায়ের আহমদ চৌধুরী বলেন, শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টানা বৈঠকের পর আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা আগামী বুধবার থেকে পাম্পগুলোতে আর তেল তুলবো না। ফলে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত বিক্রি করবো, তখন পাম্পের তেলও শেষ হয়ে যাবে, তাই নতুন করে জ্বালানি না কিনে ধর্মঘটে যাব।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন স্থানীয় পরিশোধনাগার বন্ধ থাকা, রেলের ওয়াগন সংকট ও শীত মৌসুমে চাহিদা বাড়ায় এই সংকট বেড়েছে। জ্বালানি তেল সংকট নিরসনে সিলেটের পরিশোধনাগারগুলো চালুর দাবিতে ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। কিন্তু নানা অজুহাতে বন্ধ রাখা হয়েছে শোধনাগারগুলো।
জুবায়ের আহমদ বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় সিলেটের ব্যবসায়ীদের আশুগঞ্জ, শ্রীমঙ্গলের আমদানিকারকদের কাছ থেকে পরিবহন খরচ বহন করে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এতে তেলের মানও ভালো মিলছে না, উপরন্তু পরিবহন ব্যয় বাড়ছে।
চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বিভাগের ১১৪টি পেট্রোল পাম্প কম তেল নিয়ে চলছে। আর শীত মৌসুমে সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে ডিজেলের। ১০ লাখ লিটার চাহিদার বিপরীতে ডিজেল পাচ্ছেন মাত্র তিন লাখ লিটার। আর পেট্রোল-অকটেন তিন লাখ লিটারের স্থলে মাত্র ৫০/৬০ হাজার লিটার পাচ্ছেন।
অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ‘গত তিন বছর থেকে স্থানীয় গ্যাস ফিল্ড থেকে গ্যাসের সঙ্গে তেল উত্তোলন হলেও সেটা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়। সিলেটের ব্যবসায়ীরা সেই সুবিধা ভোগ করতে পারেন না। এ নিয়ে সিলেট থেকে জাতীয় পর্যায়ে কেউ কথাও বলেন না। যে কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এমতাবস্থায় সমস্যা সমাধান না হওয়ায় ২২ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও পেট্রোল পাম্প অ্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটি।’
এ বিষয়ে পদ্মা ও যমনুা জ্বালানি কোম্পানি সিলেট ডিপোর দায়িত্বশীলদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জ্বালানি সংকটের সমাধানের ক্ষমতা তাদের হাতে নেই। জ্বালানি আসে চট্রগ্রাম থেকে। সেখান থেকে নিয়মিত তেলের ওয়াগন না আসলে তারা সরবরাহ করতে পারেন না। তিনি চট্রগ্রামেও সংকটের কথা জানান।
আরও পড়ুন
চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট চলছে, চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
বান্দরবানে সেনা অভিযানে ২ কেএনএফ সদস্য নিহত: আইএসপিআর
ভোলায় অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছে ১৪টি দোকান