নিজস্ব প্রতিবেদক:
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দীর্ঘদিন ধরে এক ডজন উড়োজাহাজ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিমানবন্দরের রপ্তানি কার্গো ভিলেজের বিশাল জায়গাজুড়ে প্রায় এক দশক ধরে উড়োজাহাজগুলো পড়ে আছে। ওসব উড়োজাহাজের ফ্লাইট অপারেশন এখন পুরোপুরি বন্ধ। বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) পরিত্যক্ত ওসব উড়োজাহাজ সরিয়ে নিতে কয়েক দফা চিঠি পাঠিয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিমান মালিকরা তাতে সাড়া দিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে পরিত্যক্ত অকেজো বিমানগুলো বিমানগুলো নিলামের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বেবিচক। বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা বিমানগুলোর বিষয়ে বেবিচক একাধিকবার তাগিদ দিয়েও কোনো সাড়া না পাওয়ায় ইতোপূর্বে নিলামের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু কয়েকজন বিমান মালিক বেবিচকের বকেয়া পরিশোধে কয়েক মাস সময় চেয়েছিল। কিন্তু ওই সময় পেরিয়ে গেলেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি ঘটেনি। বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ৮টি, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ২টি, জিএমজি এয়ারলাইনসের একটি ও এভিয়েনা এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ। পরিত্যক্ত বিমানগুলোর দখল করে রাখা জায়গায় কমপক্ষে ৭টি উড়োজাহাজ পার্কিং করা যাবে। আর বেবিচক তা থেকে প্রাপ্য অর্থ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে উড়োজাহাজগুলো আবারো নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেবিচক। কারণ নিলাম হলে পার্কিং চার্জ ও সারচার্জ বাবদ বকেয়া টাকা আদায়ের পাশাপাশি পার্কিংয়ের জায়গাও ফাঁকা হবে। সূত্র জানায়, বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা বিমানগুলোর পার্কিং এবং সারচার্জ বাবদ প্রায় সাড়ে ৮শ’ কোটি টাকা বেবিচকের পাওনা হয়েছে। তার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া জিএমজি এয়ারলাইনসের কাছে সর্বোচ্চ বকেয়া পড়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে বেবিচকের বকেয়া রয়েছে ৩৬০ কোটি টাকা। জিএমজি এয়ারলাইনস ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট স্থগিত করে। আর রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কাছে বেবিচকের বকেয়ার পরিমাণ ২০০ কোটি টাকা। ওই প্রতিষ্ঠানটিও ২০২০ সালের মার্চে বন্ধ হয়ে যায়। যদিও তার আগেই সংস্থাটি বেশ কয়েকটি রুটে বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। তাছাড়া পার্কিং চার্জ ও সারচার্জ বাবদ কর্তৃপক্ষের কাছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বকেয়া ১৯০ কোটি টাকা। সূত্র আরো জানায়, পরিত্যক্ত বিমানগুলোর রেজিস্ট্রেশন বেবিচক আগেই বাতিল করেছে। তারপর দফায় দফায় বিমানবন্দর থেকে বিমানগুলো সরিয়ে নিতে নোটিশ দেয়া হয়েছে। বছরখানেক আগে বকেয়া আদায়ে উড়োজাহাজগুলো নিলামে বিক্রির উদ্যোগও নেয়া হয়েছিল। তখন কয়েকজন মালিক বকেয়া পরিশোধে ৬ মাস সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময় পার হলেও তাদের সাড়া নেই। সেজন্য ফের বিমানগুলো নিলামে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এদিকে এ প্রসঙ্গে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, বিমানগুলো সরিয়ে নিতে অনেক বার চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে বিমান প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো জবাব দেয়নি। তাদের কাছে পাওনা অর্থও পরিশোধ করেনি। বারবার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। এখন সিভিল এভিয়েশন আইন অনুযায়ী পরিত্যক্ত বিমানগুলো বাজেয়াপ্ত করে দ্রুত নিলাম আয়োজন করা হবে। ইতোমধ্যেই নিলামের প্রক্রিয়া নির্ধারণে কর্মপদ্ধতি ও সুপারিশমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি