অনলাইন ডেস্ক :
আগের দিনই বাংলাদেশের জার্সি গায়ে সিলেটে ম্যাচ জয়ের নায়ক হয়েছেন সাকিব আল হাসান। রোববার তাকে দেখা গেল ঢাকায় কালো-সবুজ গাউন গায়ে। ২২ গজে ব্যাট উঁচিয়ে ধরেছেন তিনি অনেকবার। এবার সমাবর্তনের মঞ্চে উঠে উঁচিয়ে ধরলেন হ্যাট। মুখে তার চওড়া হাসি। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার, বিশ্ব ক্রিকেটে রাজত্ব করা অলরাউন্ডার এখন আনুষ্ঠানিকভাবে একজন গ্র্যাজুয়েট! সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে শনিবার ৮৯ বলে ৯৩ রানের ইনিংস খেলার পর বল হাতে দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব। দলকে জেতানোর পরদিন ঢাকায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর ২১তম সমাবর্তনে উপস্থিত হন তিনি। গ্র্যাজুয়েটদের তালিকায় তার নাম দেখা যায় ‘খন্দকার সাকিব আল হাসান’ হিসেবে। আগের দিন ম্যাচ খেলা বাংলাদেশ দলের কোনো আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম নেই এ দিন। এই ফাঁকে সাকিব পৌঁছে যান সমাবর্তনে। সেই ২০০৯-১০ সেশনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে ভর্তি হয়েছিলেন সাকিব। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট রাঙিয়ে সেই ১৯ বছর বয়স থেকে জাতীয় দলে খেলছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর থেকেই হয়ে উঠেছেন দলের অবিচ্ছেদ্দ অংশ। ২২ বছর বয়সে দেশের অধিনায়কও হয়ে গিয়েছেন। ক্রিকেটে মাঠে দাপুটে পথচলার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পথে সেভাবে এগোতে পারেনি। অবশেষে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে তিনি বিবিএ সম্পন্ন করলেন। ক্রিকেট মাঠে ২২ গজে বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যান ও বোলারদের সামনে বুক চিতিয়ে লড়াই করেন যিনি, সেই সাকিব সমাবর্তনের দিন মাইক্রোফোনের সামনে ছিলেন নার্ভাস। “আমি প্রশ্নোত্তর পর্ব ভালো পারি। তবে বক্তৃতা ভালো পারি না। বক্তৃতায় আমার খুব সমস্যা হয়। আমি খুবই নার্ভাস। এমন মনে হচ্ছে যেন, টেস্ট অভিষেকে যখন ক্যাপটা পেয়েছিলাম, তখন যে অনুভূতি ছিল, আজকে এরকমই মনে হচ্ছে (সমাবর্তনের) হ্যাট পেয়ে।” ক্রিকেট মাঠে তার অর্জনের শেষ নেই। আইসিসি অলরাউন্ডারদের র্যাঙ্কিংয়ে তার দাপট সেই ২০০৯ সাল থেকে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক ‘প্রথমের’ জন্ম তার হাত ধরে। রেকর্ড বইয়ের অসংখ্য পাতায় তার নাম। তবে পড়াশোনার আঙিনায় আনুষ্ঠানিক ডিগ্রি পেয়ে আপ্লুত সাকিব সমাবর্তন বক্তৃতায় বললেন তার গর্বের কথা। “সত্যি কথা বলতে, ২০০৯ সালের দিকেও, জাতীয় দলে যখন ৩ বছর হয়ে গিয়েছে আমার ক্রিকেট খেলার, তখনও আম্মা যখন ফোন করত, জিজ্ঞেস করত যে পড়াশোনার কী অবস্থা। আজকে আমি খুবই খুশি, খুবই আনন্দিত এবং খুবই গর্বিত যে, অবশেষে আমার স্বপ্ন একটা পূরণ হলো। খেলার মাঠে হয়তো বেশ কিছু অর্জন আছে আমার, তবে এটা সবসময় আমার স্বপ্ন ছিল।” “খুব বেশি কিছু বলার নেই। সবাইকে দেখে খুব ভালো লাগছে। আমি নিশ্চিত, আপনাদের জীবন সামনে এগিয়ে যাবে। শুধু একটা কথাই বলব, যখন আপনারা স্বপ্ন দেখবেন, স্বপ্নটা বড় দেখবেন এবং স্বপ্নের একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করে সততার সাথে কাজ করবেন। আমি নিশ্চিত আপনাদের সবার স্বপ্ন পূরণ হবে। আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশকে সামনের দিবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।”
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা