জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় হাতি আনতে গিয়ে আক্রমণে কুলাউড়ার উপজেলার এক মাহুতের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৭ মে) সন্ধায় উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের চুঙ্গাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ বলছে, আজ সোমবার ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজারে সদর হাসপাতালে নিহতের মরদেহ প্রেরন করা হয়েছে৷ নিহত মাহুতের নাম রাসেল মিয়া (৪০)। সে কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলি গ্রামের মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে। রাসেলের সঙ্গে থাকা আরেক মাহুত চিনু মিয়া জানান, জুড়ীর চুঙ্গাবাড়ি এলাকায় তারা রোববার সন্ধার দিকে হাতি দিয়ে বাঁশমহালের কাজ করছিলেন। ওই সময় রাস্তা দিয়ে একটি বাঁশবোঝাই ট্রাক যাচ্ছিলো। তখন হাতির মাহুত রাসেল মিয়া রাস্তা পার না হওয়ার জন্য হাতিটিকে তার হাতে থাকা বল্লি দিয়ে হাতির শুরের মধ্য আঘাত করে আটকে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু হাতিটি তার শুরে আঘাত পাওয়ায় রাসেলকে শুর দিয়ে উপরের দিকে আছড়ে ফেললে একটি খালে পাথরের মধ্যে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত লাগলে তার মাথা ফেটে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: নুসরাত জাহান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রাসেল মিয়ার মামা গণি মিয়া বলেন, যতটুকু জেনেছি নর হাতিটি গত ১৫ দিন ধরে উন্মাদ হয়েছে। মাহুত রাসেলের সাথে থাকা লোকজন জানিয়েছে হাতিটিকে কয়েকদিন থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। হাতির মালিক আমাদের ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক রাসেলকে ৫ হাজার টাকা দিবেন মর্মে তাকে জুড়ী থেকে হাতি আনতে পাঠিয়েছেন। কিন্তু আমার ভাগনা ফিরলো লাশ হয়ে৷ পরিবারে তার স্ত্রী ছাড়া ৪ ছেলে-মেয়ে রয়েছে। এখন তাঁর পরিবার কিভাবে চলবো। পরিবারটি খুবই অসহায়। এখন যদি হাতির মালিক যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিয়ে পরিবারটির পাশে দাঁড়ায় তাহলে পরিবারটি উপকৃত হবে।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা: জাকির হোসেন বলেন, গতকাল রোববার দিবাগত রাত দুইটার সময় জুড়ীর থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে হাতির মালিক ও কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক বলেন, রাসেল মিয়া দীর্ঘদিন থেকে আমার মালিকানাধীন হাতির মাহুত (পরিচালক) হিসেবে কাজ করছেন। রোববার তিনি হাতি আনতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হাতির আক্রমণে মারা গেছেন৷ ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ বাড়িতে এসেছে৷ সোমবার সন্ধ্যা সাতটার সময় তার জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফনকাজ শেষ করা হবে। তিনি আরো বলেন, নিহতের পরিবারকে তাঁর পক্ষ থেকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে।
এদিকে জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের পরিবার থানায় একটি অভিযোগ দিলে তার প্রেক্ষিতে একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি