অনলাইন ডেস্ক :
চীনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চল গেল মাসের তীব্র গরমের পর আরও কয়েক সপ্তাহ অবিরাম তাপদাহের মুখে রয়েছে। সাংহাইয়ের মতো বড় বড় শহরগুলোতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার চাহিদা বাড়ছে, তার মধ্যে ভয়াবহ এই গরম বিদ্যুৎ গ্রিডগুলোর ওপর তুমুল চাপ সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থার রয়টার্স। আগামী তিনদিন চীনের দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় পুড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা এমনকী ৪০ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে যেতে পারে, শুক্রবার (২রা জুন) এমনটাই বলেছে দেশটির আবহাওয়ার পূর্বাভাসদাতারা। উত্তর গোলার্ধে পুরোপুরি গ্রীষ্ম আসার আগেই এশিয়ার অনেক অংশের মতো চীনও কয়েক সপ্তাহ ধরে চরম তপ্ত আবহাওয়া দেখছে। সোমবার সাংহাই শতাধিক বছরের মধ্যে মে মাসের সবচেয়ে উষ্ণতম দিন কাটিয়েছে। দক্ষিণের প্রদেশগুলোও ফোসকা পড়া গরমে পুড়ছে।
বাড়ি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার চাহিদা বাড়ায় বিদ্যুৎ গ্রিডগুলোকে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। “এমনটা হবে তাতে আমি বিস্মিত নই, এটা যে খুব বাজেরকমের হবে, সেটাতেও বিস্মিত নই; কিন্তু বিস্মিত এটা যেভাবে হচ্ছে, তাতে। “সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা একটার পর একটা রেকর্ড ভাঙছে। এটা অবিরাম চলছে,” চীনের তাপদাহ নিয়ে বলেছেন নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী সারাহ পারকিনস-কার্কপ্যাট্রিক। গুয়াংডংয়ের মতো দক্ষিণের উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। চীনে দুটি গ্রিড অপারেটর প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তার মধ্যে সাউদার্ন পাওয়ার গ্রিড সম্প্রতি পিকটাইমে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের পরিমাণ ২০ কোটি কিলোওয়াট ছাড়িয়ে যেতে দেখেছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হাইনানে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের পরিমাণ প্রথমবারের মতো ৭০ লাখ কিলোওয়াট পেরিয়ে গেছে; রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়েছে গুয়াংসিকেও, জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। ইউনান ও গুইঝৌর মতো দক্ষিণের অন্যান্য প্রদেশগুলোতেও সামনের দিনগুলোতে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। চীনজুড়ে জুনের তাপমাত্রা গত বছরের মতোই থাকতে পারে; তবে সাংহাইসহ ইয়াংসি রিভার ডেল্টার বিভিন্ন এলাকা এবং সিচুয়ান ও ইউনানের মতো দক্ষিণপূর্ব চীনের কিছু অংশে তাপমাত্রা গত বছরের তুলনায় ১-২ ডিগ্রি বেশি হতে পারে, শুক্রবার (২রা জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেছেন চীনের ন্যাশনাল ক্লাইমেট সেন্টারের উপপরিচালক গাও রং।
গত বছর গ্রীষ্মে ভয়াবহ গরমের কারণে চীনের কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের ব্যবহার রেশনিং করতে বাধ্য হয়েছিল। টানা খরার মতো পরিস্থিতির কারণে সেবার জলবিদ্যুতের পরিমাণও কম ছিল তাদের। সিচুয়ানের মতো চীনের বড় বড় অনেক প্রদেশই জলবিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। চীনের মধ্যঞ্চলসহ কোথাও কোথাও টানা বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টি গমের জন্যও বিপদ হয়ে এসেছে। দেশটির শস্যভা-ার খ্যাত হেনান প্রদেশে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অন্তত ৪ জুন পর্যন্ত দেখা যেতে পারে, বলছে আবহাওয়া পূর্বাভাস।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু