নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে ফার্নেস অয়েল সঙ্কটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। মূলত ডলার সঙ্কটে ফার্নেস অয়েল আমদানির ঋণপত্র খুলতে পারছে না বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনও (বিপিসি) বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চাহিদা অনুযায়ী ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে পারছে না। ফলে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে না পারায় বেসরকারি বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বিপিসির সঙ্গে যোগযোগ করছে। বিপিসি বলছে, হঠাৎ ফার্নেস অয়েলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিপিসির মজুত ফুরিয়ে আসছে। সংস্থাটির হাতে এই মুহূর্তে ২৯ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল মজুত আছে। প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন চাহিদা ধরলে এই মজুত দিয়ে মাত্র আর ১০ দিন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চলবে। এ অবস্থায় লোডশেডিং আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র জানায়, ফার্নেস অয়েল থেকে দেশে এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে কমপক্ষে ৬ হাজার মেগাওয়াট। বর্তমানে ফার্নেস অয়েলভিত্তিক প্রায় সব বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল রয়েছে। বিপিসি বলছে, এ অবস্থায় ১০ দিন পর কমপক্ষে ৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাবে। বর্তমানে পিডিবির কাছে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বিদ্যুৎ বিক্রির বকেয়া বিল ১৮ হাজার কোটি টাকা।
ফলে ওসব প্রতিষ্ঠান চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। জ¦ালানির জন্য ওসব প্রতিষ্ঠানের ভরসা এখন বিপিসি। কিন্তু বিপিসি বলছে, ২৫ জুনের আগে নতুন করে আর তেল আসছে না। শিডিউল অনুযায়ী ২০ জুন ফার্নেস অয়েলবাহী জাহাজ চট্টগ্রামে আসার কথা রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, বিপিসি এতোদিন শুধু সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য পিডিবির কাছে ফার্নেস ওয়েল বিক্রি করতো। বেসরকারি মালিকরা নিজেরা ফার্নেস অয়েল আমদানি করতো। কিন্তু চলমান ডলার সংকটে আমদানি কমে গেছে। ২০ জুন জাহাজ এলেও সবকিছু ঠিকঠাক করে বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছাতে আরো ৪-৫ দিন লাগবে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপিএ) সাবেক সভাপতি ইমরান করিম জানান, ফার্নেস অয়েলের মজুত কমে আসার বিষয়টি সত্য। এ মুহূর্তে তাদের চরম তারল্য সংকট রয়েছে। ফার্নেস অয়েল আমদানি করার মতো সামর্থ্য নেই অধিকাংশ মালিকের। পিডিবির কাছে বকেয়া ১৮ হাজার কোটি টাকা। পর্যাপ্ত ডলারও নেই। সরকার যদি রেশনিং করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, তাহলে বেসরকারিভাবে আমদানি করা ফার্নেস অয়েলের যে মজুত রয়েছে, তা দিয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে। আর যদি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে হয়, তাহলে এই মজুত দিয়ে সর্বোচ্চ ১০-১২ দিন চলবে। বেসরকারি উদ্যোগে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে নতুন জাহাজ আসার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি