অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আশরাফ গনি সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া তালেবান জানিয়েছে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বানানোর পরিকল্পনা করছে তারা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারে আফগানিস্তানের সব জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা থাকবেন বলে তালেবানের একাধিক নেতা আশ্বাস দিয়েছেন। যদিও নতুন এ সরকারের মেয়াদ কত দিনের হতে পারে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। ২০০১ সালে নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বোমা হামলার পর অভিযোগের তির আসে তালেবানের দিকে। তালেবান নেতা ওসামা বিন লাদেনকে এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে পশ্চিমা দেশগুলো। এরপর আফগানিস্তান থেকে তালেবান হটাতে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী অভিযান শুরু করে। ২১ বছর ধরে চলা সেই অভিযান সমাপ্তির পথে। ৪ কোটি জনসংখ্যার দেশ আফগানিস্তানে ৪২ শতাংশ পশতুন, তারাই দেশটির সবচেয়ে বড় জাতিগোষ্ঠী। প্রধানত সুন্নি মুসলিম এই সম্প্রদায়ের লোকজন পশতু ভাষাভাষী, অষ্টাদশ শতক থেকে আফগান রাজনীতিতে তাদের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। তালেবান নেতারা জানিয়েছেন, তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে একজন ‘আমির উল মোমিনীন’ থাকবে, যিনি ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানকে নেতৃত্ব দেবেন। ভবিষ্যৎ সরকারের ধরন কি হবে, এবং কারা কারা মন্ত্রী হবেন তা ঠিক করতে একটি সুপ্রিম লিডারশিপ কাউন্সিল গঠিত হয়েছে। তারাই আইন, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ, তথ্য ও কাবুল বিষয়ক বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বেছে নেবেন। সরকার গঠনের লক্ষ্যে তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা বারাদার এখন আফগানিস্তানের রাজধানীতে অবস্থান করছেন। গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুবও কান্দাহার থেকেনি কাবুলে এসেছেন বলে জানিয়েছেন তালেবান নেতারা। সরকার গঠন নিয়ে এ দু’জনের মতামতের গুরুত্ব বেশি থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তালেবান নেতারা জানিয়েছেন, তারা নতুন সরকারে তাজিক ও উজবেক উপজাতি নেতাদের সন্তানসহ অনেক নতুন মুখ সামনে নিয়ে আসতে আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্র তাদের সমর্থিত আগের সরকারগুলোর প্রতিনিধিদের রাখতেও চাপ দিচ্ছে, যে কারণে পরবর্তী প্রশাসনেও আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও হাই কাউন্সিল ফর ন্যাশনল রিকনসিলিয়েশনের সাবেক প্রধান আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহকেও দেখা যেতে পারে, বলেছেন তারা।
২০২০ সালে দোহায় করা চুক্তি মেনে তালেবান আফগানিস্তানের ভূখ- ব্যবহার করে অন্য কোনো দেশে সন্ত্রাসী হামলার সুযোগ না দিতেও বদ্ধপরিকর, বলেছেন গোষ্ঠীটির এক নেতা।
আগের প্রশাসনে নারীরা যেভাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে নতুন সরকারও তা অব্যাহত রাখবে; বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নারীদের কাজ করার সুযোগ বেশি থাকবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ওই নেতা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও সমাজে উদাহরণ সৃষ্টিতে স্থানীয় পর্যায়ে বসানো হবে বিশেষ আদালত, বলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু