October 5, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, July 6th, 2023, 9:39 pm

দেশে বড় হচ্ছে সিনথেটিক ড্রাগের বাজার

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্সেও নানা কৌশলে দেশে ঢুকছে সিনথেটিক ড্রাগের চালান। বড় হচ্ছে বাজার। ক্রিস্টাল মেথ, কুশ, ম্যাজিক মাশরুম কিংবা শয়তানের নিঃশ্বাস- সবক’টিই সিনথেটিক ড্রাগ! ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইনের মতো প্রচলিত মাদককে পিছে ফেলে তরুণ প্রজন্ম এখন সিনথেটিক ড্রাগে নতুন নেশায় মেতেছে। ফলে সিনথেটিক ড্রাগ ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত। অথচ প্রচলিত মাদকের চেয়ে সিনথেটিক ড্রাগ স্বাস্থ্যের জন্য কয়েক গুণ ক্ষতিকর। এসব মাদকের দামও বেশ চড়া। নানা কৌশলে অধিকাংশ মাদক সীমান্ত গলিয়ে ঢুকছে দেশে। তাছাড়া কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমেও বিভিন্ন দেশ থেকে সিনথেটিক ড্রাগ আসছে। সিনথেটিক ড্রাগ দেশে আনতে অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মাদক নিয়ন্ত্রণের প্রচলিত পদ্ধতি খুব বেশি কার্যকর নয়। অভিযান, গ্রেপ্তার ও কথিত বন্দুকযুদ্ধের মতো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হলেও মাদক কারবারিরা আগের মতোই সক্রিয়। তাছাড়া বেশ কিছু নতুন মাদক তালিকাভুক্ত না হওয়ায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। মাদকের হাজার হাজার মামলা হলেও সাজার নজির খুব কম। ছিনতাই, চুরি, খুন, ইভ টিজিংয়ের মতো অপরাধের মূল কারণ ওই মাদক। সূত্র জানায়, জাতিসংঘের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (ইউএনওডিসি) তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে যত মাদক ঢুকছে তার মাত্র ১০ শতাংশ ধরা পড়ে। ২০১৮ সালের ৪ মে থেকে দেশজুড়ে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করেছিল র‌্যাব। এরপর আলাদাভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালায় পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। কিন্তু স্কোপোলামিন নামে নতুন এক ধরনের মাদক এখন প্রায়ই ধরা পড়ছে। এটি ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ বা ডেভিলস ব্রেথ নামে পরিচিত। এটি ভয়ংকর হেলুসিনেটিক ড্রাগ। যা মস্তিস্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। মানুষের চেতনা কেড়ে সর্বস্ব লুট করতে এটি ব্যবহার করে দুর্বৃত্তরা।

একসময় এটি চিকিৎসাশাস্ত্রে রোগীকে অচেতন করার কাজে ব্যবহার করা হতো। এর ক্ষতির মাত্রা কোকেন থেকে বহু গুণ। তাছাড়া এর প্রভাব এতটাই ভয়ংকর যে নিঃশ্বাস, হ্যান্ডশেক, ঘ্রাণ, খাবার, চিরকুট, কোমল পানীয়, বাতাসে ফুঁর মাধ্যমে এই মাদক কারও শরীরে ঢুকতে পারে। এরপর মনের অজান্তে মানিব্যাগ, ঘড়ি, মোবাইল ফোন, মূল্যবান জিনিসপত্র এমনকি এটিএম কার্ডের পিন নম্বরও অন্যকে জানিয়ে দিতে পারেন ঘটনার শিকার ব্যক্তি। আরেকটি সিনথেটিক মাদক হলো সাইলোসাইবিন বা সাইকেডেলিক মাশরুম। এটি খেলে প্রচন্ড নেশা হয়। মানুষের মস্তিষ্কের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে এক ধরনের প্রভাব ফেলে।

তাছাড়া দেশে সম্প্রতি ক্রিস্টাল মেথ বা এলএসডির বাজারও বড় হচ্ছে। প্রায়ই সীমান্ত এলাকা থেকে ক্রিস্টাল মেথের বড় বড় চালান জব্দ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ বিষয়ে ডিএনসির মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবদুল ওয়াহাব ভূঞা জানান, এদেশে মাদক তৈরি হয় না। অন্য দেশ থেকে মাদক আসে। বিশেষ করে ইয়াবা ও আইস আসছে মিয়ানমার থেকে। মাদক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ডিজিটাল পদ্ধতিতে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আশা করা যায় মাদক নিয়ন্ত্রণে আসবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ মাদকের সঙ্গে জড়িত। তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে দিলে মাদক নিয়ন্ত্রণ আরও সহজ হবে।