November 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, July 7th, 2023, 8:31 pm

আজীবন মনে রাখার মতো কাজ করতে হবে: মাহফুজ

অনলাইন ডেস্ক :

দীর্ঘ আট বছর পর অভিনয়ে ফিরলেন। নতুন চলচ্চিত্রে অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ।চয়নিকা চৌধুরীর নির্মাণে ‘প্রহেলিকা’ চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে কাজ করেছেন। ছোটপর্দার রোমান্টিক নায়ক হিসেবে অনেকের আইডল তিনি। চলচ্চিত্রেও সফল। একাধিক চলচ্চিত্রে একটা পর্যায়ে অভিনয় করেছেন। পেয়েছেন একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। কথা বললেন বর্তমান ঈদ বাজার ও নিজের অভিনয় জীবন প্রসঙ্গে। অভিনেতারা কী সত্যিই নতুন করে ফেলে। নাকি সারাজীবনই এই শিল্পের অনুসঙ্গ হয়ে থাকে? পুরোপুরি একমত আপনার সঙ্গে। দেখুন, আমি যে আট বছর পর্দায় থাকিনি। সেটিও দর্শকের জন্যই। যাতে চলচ্চিত্রে দর্শকরা নতুনভাবে আমাকে খুঁজে নেয়। তাই বিগত এই আট বছরের ব্রত কিন্তু আমার দর্শকের জন্যই। প্রহেলিকা, প্রিয়তমা, সুড়ঙ্গ, ক্যাসিনো, লাল শাড়ি, পাঁচটি ছবির ঈদ এবারে। অভিনয় ক্যারিয়ার হিসেবে সবচেয়ে অভিজ্ঞ আপনি। তো বাকিদের সঙ্গে এই নতুন ফাইটটা দিতে কেমন লাগছে? নতুন পুরনো আসলে কোনো বিষয় না।

আবার প্রতিযোগিতা করছি না, সবাই একসঙ্গে কাজ করছি সেটিও আমি বলবো না। কারণ সেটা বলা যায় ফ্রি মিডিয়ায়। মানে ধরুন, আমি ইউটিউবের জন্য নাটক করলাম বা টিভির জন্য টেলিফিল্ম। কিন্তু সিনেমা তো আপনাকে দর্শক টাকা দিয়ে দেখছে। তাই আমিও তখন একটি প্রডাক্ট। সেই বাজারে নামলে আপনিও বাণিজ্যিক উপকরণ। আর বাণিজ্যে প্রতিযোগিতা থাকবেই। তাই বলতে পারেন, সবার সঙ্গেই একটা প্রতিযোগিতার ভেতরেই আপনি পড়ে যাবেন। তবে তা হতে হবে সুস্থ পর্যায়ের। ভালো লাগার বিষয় হলো বাকি ছবিগুলোও ভালো মানের ছবি। এটা সবার জন্যই ইতিবাচক। কিন্তু এত বছর পর ফেরার ছবিটা কেন চয়নিকা চৌধুরী? কেন অন্য কেউ নয়? আপনি তাকে দীর্ঘদিন চেনেন বলে কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চাননি? হুমম, এটা বলতে পারেন। কারণ আমি চয়নিকা চৌধুরীর নির্মাণ প্রসঙ্গে জানি। আর সত্যিই আমি এতোদিন পর ফিরেছি, খুব হিসাব করেই। তার মানে পুরো প্রোডাকশনের কাস্টিং থেকে শুরু করে সবকিছুই আপনার নিয়ন্ত্রণে ছিল… নিয়ন্ত্রণ শব্দটা ঠিক না। তবে পরামর্শ ছিল।

যেমন ছবির শুরুতে পরীমনি ছিল। এরপর বুবলী এলো। এসবই আমরা আলোচনা করেই নিয়েছি। কিন্তু বুবলী তো কমার্শিয়াল হিরোইন। যদি এভাবে বলি শাকিব খানের নায়িকা হিসেবে পর্দায় তার ক্যারিশমা দেখানো সুযোগ কমই থাকে। সেক্ষেত্রে এটা কী এক ধরনের এক্সপেরিমেন্ট ছিল? কারণ সকলেই ভেবেছিল টিভি মিডিয়ার কেউ হয়তো আপনার নায়িকা হবে আমি ওটিটি’তে বুবলীর একটি কাজ দেখে তার প্রতি আমার আস্থা বাড়ে। এরপর অন দ্য সেট তাকে মনে হয়েছে খুবই ভালো একজন অভিনেত্রী। বুবলীকে শুধু ঐ নায়িকা বিশেষণে আটকে রাখলে ভুল হবে। আপনি একাধিক ইন্টারভিউতে শাকিবের প্রশ্নে তার প্রশংসা করেছেন। একই সঙ্গে আপনি তাকে ফোনও করেছেন। এই সহাবস্থান প্রসঙ্গে বলুন- দেখুন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য শাকিব খানকে লাগবেই। সে একজন পরীক্ষিত আর্টিস্ট এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য।

তবে শাকিবের আরও বৃহৎ ক্যানভাসে কাজ করতে হবে। শিল্পীর জন্য আজীবন মনে রাখার মতো কাজ জরুরি। চলচ্চিত্রে অনেকেই ধারণা করেন, আপনারা অনিয়মিত। সেই পীড়ন আপনাদের নেই। আপনারা একটি ছবি রিলিজ করবেন, আবার দীর্ঘদিন পাওয়া যাবে না। এ প্রসঙ্গে আপনার অবস্থান ও পরিকল্পনা জানতে চাই- আমি আপনার অভিযোগ মানছি। একইসঙ্গে এটাও বলতে চাই, আমি কিন্তু আট বছর অপেক্ষা করেছি একটি ছবি রিলিজের জন্য না। আমার পরিকল্পনা সুদূর প্রসারি। আমার হারানোর কিন্তু কিছু নেই। দেওয়ার রয়েছে অনেক। আমি দর্শকদের আকুল ভালোবাসায় আজকের মাহফুজ। তাদের কাছে আমি ঋণী। সেই ঋণের দায় আমার এখন ভালো চলচ্চিত্রে কাজ করা। গত কয়েক বছরে প্রায় ৮০ জনেরও অধিক তারকা দেশ ছেড়ে আমেরিকা পাড়ি দিয়েছেন। আপনি ব্যবসায়িকভাবে সফল না হলে তেমনই আরেকটা উদাহরণ কী হতো? এটা আমার পক্ষে সম্ভব না। যারা গিয়েছেন তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত এবং তাদের সেই অধিকার আছেই।

কিন্তু আমি বিদেশে কাজে যেতে পারবো। থাকা সম্ভব না। শিল্পীরা এখন অনেকেই রাজনীতিতে আসছেন। নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। অনেকেই ভেবেছিলেন আপনি অনেক আগেই আসবেন… না, কখনোই না। আমার সুযোগ ও প্রস্তাবনা যে আসেনি তা না। কিন্তু আমি মনে করি শিল্পী হিসেবে আমার অবস্থানটা আগে এবং দেশের জন্য এই অবস্থান নিয়েও কাজ করা যায়। আমি কাউকে খাটো করছি না, তবু বলছি একজন শিল্পীর অবস্থান অনেক উচ্চতায়। আমরা মাঝে মাঝে তা বুঝতে পারি না। আপনি প্রবাসীদের নিয়ে এদেশের সবচেয়ে বড় সিরিজটি নির্মাণ করেছেন। এখন আপনি পুরোদস্তুর সিনেমার মানুষ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের বাংলা সিনেমার বিপণন শুরু হলো না। অথচ সবচেয়ে বড় বাজারটা সেখানেই। এ বিষয়ে আপনার মতামত শুনতে চাই- না, এ বিষয়ে শুধু মতামত না। আমি এই কাজটি যেভাবে হোক করতে চাই এবং এটা খুবই জরুরি। ওরা আমাদের কাজ দেখার জন্য মুখিয়ে আছে। প্রহেলিকা নিয়ে সেই পরিকল্পনা মোতাবেকই এগুচ্ছি।