অনলাইন ডেস্ক :
ইনিংসে ফিফটি কেবল একটি, শিহাব জেমসের। তবে ব্যাট হাতে অবদান রাখলেন বাকিরাও। তাই লড়ার মতো রান পেল বাংলাদেশ। ডেভিড টিজারের পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস ও অন্যান্যের চেষ্টায় ম্যাচ জমিয়ে তুলল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে পেরে উঠল না তারা। খুলনায় রোববার দ্বিতীয় যুব ওয়ানডেতে ১৪ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। ২৬৮ রানের পুঁজি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তারা থামিয়ে দেয় ২৫৪ রানে। বৃষ্টিবিঘিœত প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেরে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ফেরাল সমতা। বাংলাদেশকে আড়াইশ ছাড়ানো সংগ্রহ এনে দেওয়ার পথে ১ ছক্কা ও ৬ চারে ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন শিহাব। ৩ চারে ৪১ রান করেন আদিল বিন সিদ্দিক। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন আরিফুল ইসলাম। ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৪৮ রান করার পর বল হাতে তার শিকার ৩৩ রানে ২ উইকেট। এই পারফরম্যান্সে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই।
শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আদিলের সৌজন্যে ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ। দুই জনের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৬০ রান। রিজওয়ানের বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। অনেকটা সময় উইকেটে কাটিয়েও তেমন কিছু করতে পারেননি আশিকুর রহমান। দলের রান একশ পার হওয়ার পর ১ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। আদিল ফেরার পরের ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন আহরার আমিন। ১১২ রানে ৪ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন আরিফুল ও শিহাব। ফিফটির সম্ভাবনা জাগানো আরিফুলের বিদায়ে ভাঙে তাদের ৫৬ রানের জুটি। এরপর জাকারিয়াকে নিয়ে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি গড়েন শিহাব। তাদের ৬৫ রানের যুগলে আড়াইশর কাছে পৌঁছে যায় বাংলাদেশের রান। শিহাব ফেরার পর শেষ দিকে ৩ ছক্কা ও ১ চারে ১২ বলে ২৭ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন মাহফুজুর রাব্বি। জাকারিয়া অপরাজিত থাকেন ১ চারে ২৮ রান করে। গিলবার্ট প্রিটোরিয়াসকে বোল্ড করে দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে তৃতীয় ওভারে ছোবল দেন রোহানাত বর্ষণ। আরেক ওপেনার জোনাথান ফন জিলকে ফিরিয়ে সফরকারীদের চাপে রাখেন রাফিউজ্জামান রাফি। রিচার্ড সেলেৎসোয়ানকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি আরিফুল।
রাফি পরে দ্রুত বিদায় করেন জেমসকে। ১০৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া দলের হাল ধরেন টিজার ও মারায়াস। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে একমাত্র পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি (ঠিক ৫০ রান) আসে তাদের ব্যাটে। সরাসরি থ্রোয়ে নন-স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভেঙে টিজারের লড়াই থামিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান আহরার আমিন। মারায়াস ও রোমাশান পিল্লাইয়ের ৩১ রানের জুটিতে তখন জয়ের আশায় ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। পিল্লাইকে এলবিডব্লিউ করে তাদের প্রতিরোধ ভেঙে দেন বর্ষণ। শেষ দিকে কিছুটা জমে ওঠে ম্যাচ। ৩ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ১৮ বলে ২৮ রান লাগত দক্ষিণ আফ্রিকার। কিন্তু মাহফুজুর রাব্বি ও আরিফুলের বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত ৬ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় দলটির ইনিংস। এই জয়ে রাফির অবদান কম নয়। ২৯ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি এই স্পিনার। পেসার বর্ষণের শিকার দুটি। একই মাঠে আগামী মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৫০ ওভারে ২৬৮/৭ (আদিল ৪১, রিজওয়ান ২৫, আশিকুর ১৪, আরিফুল ৪৮, আহরার ০, শিহাব ৬৯, জাকারিয়া ২৮, মাহফুজুর ২৭, রাফি ০*; হোয়াইটহেড ৬-০-৪৩-১, মাফাকা ১০-০-৫৯-২, অ্যাল্ডার ১০-০-২৫-১, পিল্লাই ৮-০-৬৩-০, পোস্টেন ১০-১-৪২-২, জেমস ৬-০-৩৪-১)
দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৪৯ ওভারে ২৫৪ (প্রিটোরিয়াস ১, ফন জিল ২০, টিজার ৭৫, সেলেৎসোয়ান ২৪, জেমস ৭, মারায়াস ২৫*, পিল্লাই ৫*; বর্ষণ ৬-১-২৭-১, ইকবাল ৫-০-৪৩-০, রাফি ৭-১-২২-২, রাব্বি ৭-০-২৩-০, আরিফুল ৫-০-২৮-১, রিজওয়ান ১-০-৯-০, শিহাব ১-০-৮-০, আহরার ১-০-৪-০)
ফল: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ১৪ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: আরিফুল ইসলাম
সিরিজ: ৫ ওয়ানডের সিরিজে প্রথম দুটির পর ১-১ সমতা
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা