অনলাইন ডেস্ক :
সংঘাতময় সুদানের রাজধানী সংলগ্ন শহর ওমদুরমানে দেশটির সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ২২ জন নিহত এবং আরও অনেকের আহত হওয়ার খবর এসেছে। গত শনিবার দেশটির খার্তুম প্রদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতাহতের এ খবর দিয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। রাজধানী খার্তুম ও এর পার্শ্ববর্তী তিন শহরের অন্যতম ওমদুরমানের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আধা সামরিক বাহিনী আরএসএফের (র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস) কাছে। পাশের আরেক শহর বাহরির নিয়ন্ত্রণও তাদের হাতে। সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় সেখানে বিমান হামলা চালাচ্ছে; গোলাবর্ষণও করছে। ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী ও এই আধা সামরিক বাহিনীর লড়াই থেকে শুরু হওয়া বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এখন সশস্ত্র লড়াইয়ে রূপ নিয়েছে, যা ১২ সপ্তাহ ধরে চলছে।
রয়টার্স লিখেছে, গত ১৫ এপ্রিল সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতের পর আরএসএফ রাজধানীসহ আশেপাশের শহরে দ্রুত আধিপত্য বিস্তার করে। এরপর থেকে নিয়মিত বিমান হামলা করছে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী (এসএএফ)। রয়টার্স জানিয়েছে, এরই ধারাবাহিকতায় ওমদুরমান গত কয়েক দিন ধরে সশস্ত্র সংঘাতের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এর কারণ দারফুর থেকে নগরীটির পশ্চিমাংশ দিয়ে আরএসএফের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের পথ রয়েছে।
গত শুক্রবার ওমদুরমানের পূর্ব অংশে রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কমপ্লেক্সে রাতভর হামলা হয়েছে। ওই রাতে রাজধানী খার্তুমের দক্ষিণ ও পূর্ব অংশেও বিমান হামলা চালানো হয়। সিরিয়ার সেনাবাহিনী এসএএফের এক ফেইসবুক পোস্টে ২০ বিদ্রোহী সেনাকে হত্যা করার কথাও জানানো হয়। এতে আরএসএফের অস্ত্র ধ্বংস করে দেওয়ার দাবিও করা হয়। দুই বাহিনীর মধ্যে সংঘাত থামিয়ে রক্তক্ষয় বন্ধে কয়েকদফা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও তা কাজে আসছে না। এতে করে পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিন মাস ধরে চলা এসএএফ ও আরএসএফের লড়াইয়ে রাজধানী খার্তুম ও আশপাশের আবাসিক এলাকাগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে নাগরিক পরিষেবা। সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, পশ্চিম দারফুরে জাতিগত সহিংসতার পাশাপাশি দুই বাহিনীর সংঘর্ষ খার্তুম, করদোফান ও দারফুরে ছড়িয়ে পড়ায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে এক হাজার ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিন মাসের এ লড়াই এরইমধ্যে আনুমানিক ২৯ লাখ লোককে বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য করেছে। বিদেশিরা দেশটি ছেড়ে চলে গেছে। সাত লাখের মতো নাগরিক প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সশস্ত্র এ সংঘাতে দেশটিতে নারী ও কিশোরীদের ধর্ষণ-অপহরণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। দুই পক্ষের এ সংঘাত সুদানের পশ্চিমাঞ্চল দারফুরে দুই দশক পুরনো সংঘাতকেও পুনরুজ্জীবিত করেছে। দেশটির অনেক হাসপাতাল রোগীর পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ আহতের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২