October 6, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, July 13th, 2023, 8:27 pm

টি-টোয়েন্টি নিয়ে সাকিবের স্পষ্ট বার্তা

অনলাইন ডেস্ক :

বাংলাদেশ দলের নেটে লেগ স্পিনার দেখা গেল চারজন! মূল স্কোয়াডে থাকা রিশাদ হোসেন তো আছেনই। রিশাদ ও রশিদ খান, দুজনের নাম কাছাকাছি আর দুজনেই লেগ স্পিনার, এ ছাড়া বোলিংয়ের ধরন, মান, ওজনে কোনো কিছুতেই আর মিল নেই তাদের। তবে রিশাদ ও অন্য লেগ স্পিনাররা যে নেট সেশনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টানা বোলিং করে গেলেন, এটির মূল কারণ নিশ্চয়ই বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয় কারও। সবই রশিদকে সামলানোর প্রস্তুতি। শুধু ওই লেগ স্পিনাররাই নন, অনুশীলনের শুরু থেকেই নিয়মিত স্পিনারদের পাশপাশি বল হাতে দেখা গেল আফিফ হোসেন, শামীম হোসেনের মতো অনিয়মিত স্পিনারদেরও। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের নেট সেশনে ব্যাটসম্যানদের স্পিন খেলার এত আয়োজন যে আফগান স্পিনারদের ভাবনায় রেখে, তা আলাদা করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সাকিব আল হাসান অবশ্য এই প্রশ্নে তেমন কিছুই বললেন না। রশিদ বা মুজিব উর রহমান কিংবা আফগান স্পিনারদের কারও নামই মুখে আনলেন না তিনি।

বাংলাদেশ অধিনায়ক হয়তো মনস্তাত্ত্বিকভাবে ভারাক্রান্ত করতে চাইলেন না দলকে। প্রতিপক্ষের কোনো ক্রিকেটারকে নিয়েই বাড়তি ভাবনা নেই বলে সাফ জানিয়ে দিলেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। পাশাপাশি তিনি দাবি করলেন, তামিম ইকবালের অবসরকে ঘিরে নানা ঘটনাপ্রবাহও দলে কোনো প্রভাব ফেলেনি। যে সংস্করণে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো খেলে এবং ধারাবাহিক, সেই ওয়ানডেতেই এবার আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হেরে গেছে দল। যে সংস্করণে বিশ্ব ক্রিকেটেই আফগানরা সমীহ জাগানিয়া শক্তি।

দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে বাংলাদেশের ৩ জয়ের বিপরীতে আফগানদের জয় ৬টি! যদিও টি-টোয়েন্টিদে গত মার্চে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ, পরের সিরিজে জিতেছে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে। তবে রশিদ-মুজিবদের সামনে এবারের ভীষণ কঠিন হওয়ার কথা। তবে দুই ম্যাচের এই সিরিজ শুরুর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বললেন, প্রতিপপক্ষের এক-দুজনকে নিয়ে যেমন তাদের ভাবনা নেই, তেমনি নিজেদের দু-একজনের ওপরও বাড়তি নির্ভরতা নেই। “কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি বা কাউকে নিয়ে আমরা চিন্তা করছি না। আমাদের দলও কোনো একজন ব্যাটসম্যান বা বোলারের ওপর ভরসা করে নেই। আমরা চাই যেন আমরা দলীয়ভাবে পারফর্ম করি, যেটার মাধ্যমে যেন জয়লাভ করতে পারি। আমাদের তাড়না একইরকম রাখার চেষ্টা করব আমরা।” “আমরা কোনো একজন ক্রিকেটারকে নিয়ে কথা বলিনি, চিন্তাও করিনি। যে ব্যাটিং বা বোলিং করবে, সে তার জায়গা থেকে কী কী পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে, সেগুলো নিয়ে আমি নিশ্চিত যে তারা ব্যক্তিগতভাবে কাজ করবে। এটা আসলে কাউকে বলার বিষয় নয় এবং করারও বিষয় নয়। যে পরিস্থিতিতে যে আসবে, তার দায়িত্ব কীভাবে সে দলের জন্য ভালো পারফর্ম করতে পারে।” সাকিবের মতে, শুরুর সময়টুকুই শেষ পর্যন্ত বড় ভূমিকা রাখতে পারে ম্যাচের গতিপথ নির্ধারণে। “টি-টোয়েন্টিতে মোমেন্টাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আমরা কীভাবে খেলাটা শুরু করি, সেটা আমার কাছে মনে হয়, ম্যাচের ফলের দিকে বা ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে অনেক বেশি। ব্যাটিং করি বা বোলিং, শুরুটা ভালো করা গুরুত্বপূর্ণ।” ভালো শুরু করা কিংবা ভালো শেষ, সবকিছুতেই সাকিবের ভাবনাজুড়ে কেবল দল। শুধু এই সিরিজ বা প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান বলেই নয়, বাংলাদেশের ক্রিকেটে সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতায় তার উপলব্ধি, দলীয় রসায়ন জমে উঠলেই কেবর এই দল জয়ের পথে এগিয়ে যায়। “আমার কাছে মনে হয়, আমরা দল হিসেবে তখনই ভালো খেলি, যখন অন্য দল নিয়ে চিন্তা না করি। আমরা যখন খোলা মন নিয়ে থাকি, নিজেদের খেলাটায় কীভাবে উন্নতি করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবি এবং নিজেদের জায়গা থেকে সবাই ১০ বা ২০ শতাংশ উন্নতি করা যায়, সেই চিন্তা করি, আমার কাছে মনে হয় দলটা তখনই পারফর্ম বেশি করে।”

“আমরা তখনই একটু নার্ভাস থাকি বা অত ভালো পারফর্ম করতে পারি না, যখন আমরা কন্ডিশন নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করি এবং অনেক বেশি প্রতিপক্ষ নিয়ে চিন্তা করি। আমার কাছে মনে হয়, ওই জিনিসটা আমরা যত কম করতে পারব, ততই আমাদের জন্য ভালো।” ওয়ানডে সিরিজে অবশ্য অনেকের মতে, দলের মনোসংযোগ ব্যাহত হয়েছিল তামিম ইকবালের অবসরের নানা নাটকীয়তায়। প্রথম ওয়ানডেতে হেরে যাওয়ার পর দিনই আচমকা অবসরের ঘোষণা দেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবসরের ঘোষণা তিনি প্রত্যাহার করে নেন পরদিনই। কিন্তু সিরিজের মাঝে ওই দুটি দিন বাংলাদেশের ক্রিকেট থেকে যেন মাঠের ক্রিকেটই হারিয়ে গিয়েছিল। তামিমের অবসর ঘিরেই ছিল সব আলোচনা। পরে দ্বিতীয় ম্যাচেও হেরে আফগানদের বিপক্ষে প্রথমবার ওয়ানডে সিরিজ হেরে বসে বাংলাদেশ।

তৃতীয় ম্যাচে দাপুটে জয়ে অবশ্য শেষ পর্যন্ত হোয়াইটওয়াশ এড়ানো গেছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে দলের ভেতরের আবহাওয়া নিয়ে প্রশ্ন যেন অনেকটা অনুমিতই ছিল। সাকিব অবশ্য জোর দিয়েই বললেন, দলের ভেতরের আবহ তামিমের ঘটনার সময়ও ঠিকঠাক ছিল, এখনও সমস্যা নেই। “আসলে দেখুন, বাইরে থেকে অনেক সময় অনেক কিছু মনে হতে পারে। ড্রেসিং রুম আমার কাছে কখনোই মনে হয়নি যে আমরা আনসেটেলড ছিলাম কিংবা এখন আছি। আবহ তো আমি সবসময়ই মনে করি ভালো আছে।” “অবশ্যই ফলাফলে কারণেই আপনারা সবসময় চিন্তা করবেন যে ড্রেসিং রুমের অবস্থা ভালো নাকি খারাপ। তবে আমার কাছে মনে হয় না যে, ড্রেসিং রুমের আবহ খুব একটা পরিবর্তন হয় আমরা জিতি বা হারি, সেটার ওপর। আমাদের এখন চেষ্টা থাকে সবসময় প্রতিদিন কীভাবে নিজেদের উন্নতি করতে পারি এবং সেই হিসেবে দলের হয়ে পারফর্ম করতে পারি ও দলে অবদান রাখতে পারি।”