নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর গুলশানে পুলিশ সদস্য ও চলাচলরত যানবাহন লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছেন আন্দোলনরত ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে গুলশান-১ নম্বর গোল চত্বর থেকে পুলিশ আন্দোলনরত ব্যবসায়ীদের সরিয়ে সড়ক খুলে দিলে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে বেশ কয়েকটি যানবাহনের গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। সড়কে চলাচলরত পথচারীদেরও দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। এরআগে দুপুর ১২টার দিকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হওয়ায় ওই মার্কেটটি সিলগালা করে দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এরপরেই ব্যবসায়ীরা গুলশান -১ চত্বর সিগন্যাল অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে গুলশান-বনানীসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুরের পর থেকে পুলিশ সদস্যরা আন্দোলনকারীদের বারবার অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানালেও তারা সেটি শোনেননি। তারা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে চান।
পরে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ অবরোধকারীদের জোর করে সরিয়ে দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ জোর করে অবরোধকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল চালু করলে আন্দোলনরত ব্যবসায়ীরা তাদের ও যানবাহন লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ির কাচ ভেঙে যায় এবং পথচারীদেরও দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। পরে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে আন্দোলনকারীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। পরে গুলশান-১ গোল চত্বর দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। বিপুল পরিমাণ পুলিশ সদস্য সেখানে অবস্থান করছিল বিকেলে।
এ বিষয়ে গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ বলেন, গুলশান-১ নম্বর গোলচত্বরের সিটি করপোরেশনের একটি মার্কেট সিলগালা করার কারণে ব্যবসায়ীরা এখানে অবস্থান নিয়ে সড়ক দখল করে রেখেছিল। আমরা তাদেরকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিজেদের দাবি জানানো ও বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বলেছি। এজন্য আমরা তাদের সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা এই সময়ের মধ্যে কথা বলেও বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি। তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে রাস্তায় অবস্থান করছিল। যেহেতু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, তাই আমরা তাদের বেশিক্ষণ রাস্তা বন্ধ রাখতে না দিয়ে কিছুটা প্রেশার দিয়ে সরিয়ে দিয়েছি। আন্দোলনকারীদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। তবে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে।
এদিকে শপিং সেন্টার সিলগালা করার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়, ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ থেকে মার্কেট তালাবদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু কী জন্য করা হয়েছে, তা পরে বিস্তারিত জানানো হবে। ডিএনসিসির এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট একটি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে ঢাকা উত্তর উত্তর সিটি করপোরেশনের পাঁচটি মার্কেট অনিরাপদ। যেকোনো সময় মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে। তার মধ্যে গুলশানের এই মার্কেট অন্যতম। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় আইন মেনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ থেকে গত রোজার আগে থেকে মার্কেটের দোকানদারদের চলে যেতে বলা হয়েছিল। তারা এক মাস সময়ও চেয়েছিলেন। কিন্তু মার্কেট থেকে তারা সরেননি। সম্প্রতি বুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিমও মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে। তারা বলেছে, যেকোনো সময় এই মার্কেটে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে; ঘটতে পারে মানবিক বিপর্যয়। এ কারণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নিয়ম মেনে তালাবদ্ধ করেছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি