অনলাইন ডেস্ক :
হাইড্রোজেনকে ভবিষ্যৎ জ্বালানির কেন্দ্রে রাখছে জার্মানির সরকার। শিল্প থেকে শুরু করে গৃহস্থালী সব ক্ষেত্রেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেনের ব্যবহার নিশ্চিত করার পরিকল্পনা তাদের। হাইড্রোজেন ব্যবহারের জাতীয় কৌশলপত্র পরিবর্তন করেছে জার্মানির সরকার। ভবিষ্যতের জন্য যে বিপুল হাইড্রোজেনের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে তার দুই তৃতীয়াংশই পূরণ করা হবে বিদেশ থেকে আমদানি করে। কার্বন নিঃসরণ পুরোমাত্রায় কমিয়ে আনতে ২০৪০ সালের মধ্যে জীবাষ্ম জ্বালানির ব্যবহারের ইতি টানতে চায় জার্মানি। সেই জায়গাটি পূরণ করবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি।
এ ক্ষেত্রে সরকারের পরিকল্পনায় সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে হাইড্রোজেন। কিন্তু পানি থেকে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন আলাদা করার প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজন বিপুল শক্তি। তার যোগান নিশ্চিত করতেও চাই নবায়নযোগ্য জ্বালানি। তবেই হাইড্রোজেনকে পুরোপুরি সবুজ জ¦ালানি হিসেবে বিবেচনা করা যাবে। কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাইড্রোজেনের উৎপাদন প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। ২০২০ সালে আঙ্গেলা ম্যার্কেল সরকারের অধীনে হাইড্রোজেন ব্যবহারের জাতীয় কৌশলপত্রের খসড়া প্রণয়ন করে জার্মানি। বর্তমান জোট সরকার পরিবহণ ও গৃহ উষ্ণ রাখার ক্ষেত্রে হাইড্রোজেনের ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত করে পরিকল্পনা হালনাগাদ করেছে।
এতে হাইড্রোজেনের চাহিদা আগের হিসাবের চেয়েও বেড়ে যাবে। জ্বালানির গবেষণা প্রতিষ্ঠান এজিইবি বলছে, ২০৩০ সাল নাগাদ জার্মানিতে হাইড্রোজেনের চাহিদা ১৩০ টেরাওয়াট ঘণ্টায় পৌঁছাবে, যা ২০২১ সালের বিদ্যুৎ ব্যবহারের পাঁচ ভাগের এক ভাগ। অন্যদিকে জার্মান মেরিটাইম সেন্টার জানিয়েছে, শুধু জাহাজ শিল্পেই চাহিদা ১২০ টেরাওয়াট ঘণ্টা ছাড়াবে।
জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইয়োখেন ফ্লাসবার্থ জানিয়েছেন, যে পরিমাণ হাইড্রোজেনের চাহিদা দেশটিতে রয়েছে তার ৫০ থেকে ৭০ শতাংশই আমদানি করে মেটাতে হবে। আর এজন্য তাদেরকে নির্ভর করতে হবে উদীয়মান দেশগুলোর ওপর। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় (বিএমজেড) এরইমধ্যে মরক্কো, ব্রাজিল, টিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, নামিবিয়া ও সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে প্রকল্প নিয়েছে।
এসব দেশের স্থানীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কাজ করছে জার্মান ও ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো। সব মিলিয়ে বিএমজেড প্রায় ২৭ কোটি ইউরোর বিনিয়োগ করেছে এই দেশগুলোতে। বেসরকারি খাত জড়িত হলে তা ১৩০ কোটি ইউরোতে পৌঁছাবে। কিন্তু এর সঙ্গে মানবাধিকার ও পরিবেশ ইস্যুটিও সামনে আসছে। তবে ফ্লাসবার্থ জানিয়েছেন, জীবাষ্ম জ্বালানি ওপর নির্ভরশীল ও জ্বালানি আহরণের ক্ষেত্রে মরিয়া দেশগুলোকে বিএমজেড তাদের প্রকল্পের বাইরে রাখার পরিকল্পনা তৈরি করছে। তারপরও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষরা পরিস্থিতির অবনতির কারণে হাইড্রোজেন নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ