October 7, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, July 30th, 2023, 8:45 pm

সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের ইট বিক্রির অভিযোগ 

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের উত্তর শাহপুর এলাকায় সম্প্রতি একটি পাকার সেতুসহ এটির দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়। অথচ, উদ্বোধনের আগেই সংযোগ সড়ক ধসে পড়েছে। এ দিকে সড়কে বিছানো বেশ কিছু ইট তুলে স্থানীয় এক ব্যক্তি বিক্রিও করে ফেলেছেন। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ১৭ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-‘২২ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় উত্তর শাহপুর গ্রামের সংযোগ রাস্তায় মালেক মিয়ার বাড়ির সামনে ঘুঙ্গিজুড়ী খালের ওপর ১৫ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ফ্রেন্ডস এন্টারপ্রাইজ’ নামের পাশের কুলাউড়া উপজেলার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ পায়।  চলতি বছরের (২০২৩) গত জুন মাসের শেষ দিকে কাজ সম্পন্ন হয়। এ সময় সেতুর দুই পাশে মাটিভরাট করে তাতে ইট বিছিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় মৌলভীবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সেতুটি উদ্বোধনের কথা। এ দিকে কাজ শেষ হওয়ার কয়েক দিন পর বৃষ্টিতে সংযোগ সড়কে ধ্বস দেখা দেয়। গত জুন মাসে ঠিকাদার কাজের চূড়ান্ত বিলও তুলে নেন। ওই সেতু দিয়ে উত্তর ও পশ্চিম শাহপুরের অন্তত তিন হাজার লোক প্রতিদিন চলাচল করেন।

এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে শাহপুর এলাকার বাসিন্দা জুনেদ আহমদের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ার পর মাহতাব মিয়া নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা প্রায় ১০ হাজার ইট তুলে আশপাশের কয়েক জন লোকের কাছে বিক্রি করে ফেলেন। অভিযোগে বিষয়টি তদন্ত করে এ কাজে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। সেখানে কোনো প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়নি।  সড়কের মাঝখানে সামান্য ইট বিছানো। সেতুর এক পাশে উদ্বোধনের জন্য ফলক স্থাপন করা।

স্থানীয় বাসিন্দা জুবেল আহমদ বলেন,  সংযোগ সড়ক ধসে পড়ায় স্থানীয় স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ লোকজন চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছেন। দুই পাশে প্রতিরক্ষা দেয়াল থাকলে সড়কটির এ দশা হতো না। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মাহতাব মিয়া বলেন, সংযোগ সড়ক ধসে পড়ার পর কিছু লোক ইট চুরি করে নিচ্ছিলেন। তাই, তিনি প্রায় তিন হাজার ইট সংগ্রহ করেন। পরে প্রতি হাজার ইট সাড়ে ১৩ হাজার টাকা করে বিক্রি করেন। বিক্রির টাকা দিয়ে ধসে পড়া অংশে মাটিভরাট করা হবে। এ কাজের দায়িত্ব কে দিয়েছেন এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা জনস্বার্থে করেছেন।

সড়ক ধসে পড়ার কারণ সম্পর্কে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ফ্রেন্ডস এন্টারপ্রাইজের’ মালিক মোক্তাদীরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, নকশায় প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণের কথা উল্লেখ ছিল না। সংযোগ সড়কে পর্যাপ্ত মাটি ফেলা হয়েছিল। কিন্তু, মাটি শক্তভাবে বসেনি। এর আগেই বৃষ্টিতে ধসে গেছে।

পিআইও মিজানুর রহমান বলেন, সংযোগ সড়ক ধসে পড়ার কারণ খতিয়ে দেখা হবে। ঠিকাদারের জামানতের টাকা জমা রয়েছে। প্রয়োজনে তাঁকে দিয়ে সড়ক মেরামত করে দেওয়া হবে। আর ইট চুরি করে বিক্রির বিষয়টিও খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

ইউএনও রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, সেতুর সংযোগ সড়কের ইট চুরি করে বিক্রির অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া  সরেজমিনে গিয়ে সেতুটি দেখবেন। সেতুর সুফল যাতে এলাকার লোকজন ভোগ করতে পারেন, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।