October 8, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, August 9th, 2023, 3:19 pm

বিয়ানীবাজারে বর্ষায় মাছ শিকারের ধুম

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :

চলছে শ্রাবণ মাস। ভরা বর্ষায় কয়েক দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে বৃষ্টি। খাল-বিল ও জলাশয় পানিতে পরিপূর্ণ। বর্ষার নতুন পানি পেয়ে মাছের ঝাঁকের বিচরণ শুরু হয়েছে। আর তাইতো বিয়ানীবাজারের জেলে ও শৌখিন মানুষদের পাল্লা দিয়ে চলছে মাছ শিকার।

বিয়ানীবাজারের খাল-বিল ও জলাশয়গুলোতে গেলে দেখা মিলছে মাছ শিকারিদের এ উৎসব। বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে মাছ শিকার করা হচ্ছে। ঝাঁকি জাল, টানা জাল, ঠেলা জাল, বেল, পেতে রাখা জাল, চাঁই, বড়শিসহ আরও নাম না জানা অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করে মাছ শিকার করছেন স্থানীয় জেলেরা। এই মাছ স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চমূল্যে। এছাড়াও সিলেট-বিয়ানীবাজার সড়কের গাছতলা, তিলপাড়া, চারখাই, জলঢুপ বাজারের আশপাশসহ আরো একাধিক জায়গায় এসব মাছ বিক্রি করা হয়।

সাধারণত জালে ধরা পড়ে ট্যাংরা, টাকি, চান্দা, তারা চিকরা, পুঁটি, গুতুম, বাইম মাছ। চাঁইয়ে ধরা পড়ে চিংড়ি, বইচা এবং ছোট প্রজাতির মাছ। বড়শিতে ধরা পড়ে রুই, কারফু, ছোট কাতল, শোল মাছসহ বিভিন্ন মাঝারি ও বড় প্রজাতির মাছ।

শৌখিন মাছ শিকারি খাসা গ্রামের সরওয়ার হোসেন প্রায় নিয়মিত নিজের ফেসবুকে মাছ শিকারের ছবি ছড়িয়ে দেন।তিনি বলেন, তাঁর শখ মাছ শিকার। প্রায় প্রতিদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি বড়শিতে মাছ শিকার করেন।

বড়শিতে মাছ শিকারের জন্য প্রয়োজন হয় বিশেষ কিছু খাবার। যে খাবারের লোভে মাছেরা বড়শির কাছে আসে খাবারের আশায়। প্রতিদিনই তিনি এক-দুটি করে বড় মাছ শিকার করেন। তবে এতে কষ্টও হয় অনেক। তিনি আরো বলেন, বড়শিতে মাছ ধরার প্রধান শর্ত হলো ধৈর্য ধরতে শেখা। সারা দিন চলে যাবে মাছ আসবে না, কিন্তু হঠাৎ করেই শেষ বেলায় এসে ধরা দেবে বড় আকারের মাছ।

এদিকে পেশাদার মৎস্যজীবি বৈরাগীবাজারের মো. মোক্তার হোসেন বলেন, মাছ বেছিয়া সংসার চালাই। বারিষা (বর্ষাকাল) আইলে বিলে যখন পানি আয়, তখন মাছ মাারিয়া বাজারে নিয়া বেচি। বছরের বাকি দিনগুলা কমবেশ মাছ ধরি-বেচি।

মুড়িয়া ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের জেলে মাখন মিয়া জানান, তিনি শুকনো মৌসুমে দেশি মাছ সংগ্রহ করেন আর বাকি সময় বড়শি ও বেল জালের মাধ্যমে মাছ শিকার করে থাকেন। নতুন পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে আধিক্য বেড়ে যায়, ফলে মাছ শিকারই হয়ে পড়ে প্রধান কাজ।

বিয়ানীবাজার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসিবুল হাসান বলেন, ‘স্থানীয় জলাশয়-বিলে ইতিমধ্যে পানি আসতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে জলাশয়গুলো ভরে উঠেছে দেশীয় জাতের ছোট-বড় মাছে। জেলেরা এর ওপর নির্ভর করে তাঁদের সংসার চালিয়ে থাকেন। কিন্তু কিছু কিছু অসৎ জেলে চায়না দুয়ারী জাল ব্যবহার করায় দেশীয় মাছের বংশ হুমকির মুখে। বহুবার অভিযান পরিচালনা করেছি। তার পরেও তাঁরা তা ব্যবহার করছেন, যা আইনত দণ্ডনীয়।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা তাসলিম বলেন, ‘জলাধার প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ উপহার। এর রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের দায়িত্ব। সুতরাং প্রকৃতিকে রক্ষা করে এর থেকে সর্বোচ্চ সম্পদ আহরণই হোক আমাদের অঙ্গীকার।