September 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, August 21st, 2023, 7:28 pm

কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে

কুড়িগ্রামে সবক’টি নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। বিশেষ করে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীর ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এছাড়া, হুমকিতে রয়েছে খিতাব খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুল থেকে ৩০ থেকে ৩৫ মিটার দূরে অবস্থান করছে নদী। মাঝে একটি আঁকাবাঁকা রাস্তা, রাস্তার ধারে কিছু গাছপালা।

যে কোনো মুহূর্তে তিস্তা হিংস্র হয়ে উঠলে বিদ্যালয়টির অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। একই অবস্থা ওই ইউনিয়নের গতিয়াশাম কমিউনিটি ক্লিনিকের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তা নদীতে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন তীব্র হয়ে উঠেছে। গত ৩ মাস ধরে দফায় দফায় ভাঙছে তিস্তা।

এরমধ্যে শুধু খিতাবখাঁ গ্রামেই ইসমাইল হোসেন, রসুল, মোস্তাক, কদিমল, হাসেন আলী, ইউসুফ, দুলাল, আব্দুর রহিম, বালো, কছো মামুদ মমিন, হারুন, আবুল, আ. ছাত্তার, রফিকুল, অতুর আলী, রুস্তম, রফিকুল, আবুল হোসেন, মসুল, নুর ইসলাম, ফয়েজ, মাহাম্মদ, আবেদ, শফিকুল ইসলামসহ ৩০টি পরিবারের ভিটে মাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অন্যান্য ৪টি গ্রামসহ এর সংখ্যা ৫০-এর উপরে।

উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ, গতিয়াশাম ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা, রামহরি এবং কালিরহাট গ্রামে শত শত একর ফসলি জমি ও গাছপালা গিলে খাচ্ছে তিস্তা নদী। বাড়িঘর হারিয়ে তাদের অনেকেই খোলা আকাশের নীচে মানবেতর দিনাতিপাত করছেন। এই গ্রামের অনেকে আবার মাঝেরচর নামক স্থানে নতুন বসতি স্থাপনের কাজ করছেন।

এদিকে অব্যাহত নদী ভাঙনে উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের সহস্রাধিক বসতভিটাসহ কালিরহাট বাজার, বুড়িরহাট বাজার, কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গতিয়াশাম কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ২টি ইউনিয়নের ৪টি মসজিদ, ২টি মন্দির, বিভিন্ন স্থাপনা ও শতশত একর ফসলি জমি হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।

এর মধ্যে খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তিস্তা নদী এখন একেবারে মুখোমুখী অবস্থানে। এলাকাবাসী সবার্ধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখছেন, খিতাবখাঁ ও চর খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গতিয়াশাম কমিউনিটি ক্লিনিককে।

খিতাবখাঁ গ্রামের নদী ভাঙনে গৃহহারা আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘ত্রাণের আশা করি না। সরকারের কাছে দাবি নদী ভাঙন বন্ধে তিস্তা মহাপরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন করা হোক।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মামুন মন্ডল বলেন, ‘ভাঙন রোধে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা অত্র এলাকার হাজার হাজার মানুষের প্রাণের দাবি। খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে গেলে এই বিদ্যালয়ের ৩ থেকে ৪ শত শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নিবার্হী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘ভাঙন প্রতিরোধে ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ অব্যাহত রয়েছে এবং যথাযথ কাজ চলায় এখন পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো টিকে আছে।’

—–ইউএনবি