ফরিদপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইন্টার্ন ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টায় জেলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহতরা হলেন- মৃতের স্ত্রী হালিমা বেগম (৮৫); নাতি আলমগীর বিশ্বাস (২৮), তৌহিদ বিশ্বাস (২৫), আলিফ খান (১৪) ও হামজা খান (১২) এবং মেয়ে জেসমিন (৪২), সাবিনা ইয়াসমিন (৫০) ও রেবেকা সুলতানা মনি (৩৫)।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে ফরিদপুর সদর উপজেলার কমলাপুরের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা নয়ন খান নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং এর কিছুক্ষণ পরে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে ডাক্তার ও স্বজনদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
নয়ন খানের নাতি আলমগীর বিশ্বাস বলেন, রাত ১২টার দিকে তার নানার শ্বাসকষ্ট হলে নার্সদের জানাই। তারা ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসককে জানাতে বলেন। এরপর ইমার্জেন্সিতে কর্তব্যরত চিকিৎসককে রোগীকে ওয়ার্ডে গিয়ে একটু দেখার জন্য এবং পরে ন্যূনতম একটু অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থাই নেননি। কিছুক্ষণ পর এসে দেখি আমার নানা মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, এসময় ডাক্তারদের সঙ্গে আমাদের কথাকাটাকাটি হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আমার মা আমাকে সেখান থেকে সরিয়ে একটি বাথরুমে আটকে রাখেন। এরপর প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জনের মতো এসে বাথরুম থেকে বের করে আমার উপর হামলা চালায়।
পরে হামলায় তৌহিদ বিশ্বাস, আলিফ খান, হামজা খান, জেসমিন, সাবিনা ও রেবেকা সুলতানা মনিসহ কয়েকজন আহত হন।
এমনকি, মুক্তিযোদ্ধার বিছানার কাছে বসা তার ৮৫ বছর বয়সী স্ত্রীকেও ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন চিকিৎসকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইন্টার্ন বলেন, ‘রোগীর স্বজনেরা আমাদের কাছে অক্সিজেন চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের কাছে সরবরাহ করার মতো অক্সিজেন না থাকায় আমরা তাদের বাইরে থেকে অক্সিজেন এনে রোগীকে দেওয়ার জন্য একটি স্লিপও লিখে দেই। কিন্তু এতে তারা রাজি না হলে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা আমাদের উপর হামলা করে। এতে হাসপাতালের একজন স্টাফসহ ১২জন ইন্টার্ন আহত হয়।’
এব্যাপারে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।
তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনদেরকে থানায় নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতরা আশঙ্কামুক্ত।
ওসি আরও বলেন, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধিন।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এনামুল হক বলেন, তিনি গতরাতের মারামারির কথা শুনেছেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক