জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ (শাহজাদপুর):
১৩ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে মার্কেটার্স ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ (এমআইবি) এর উদ্যোগে দুই দিনের সম্মেলনের সমাপনী পর্বে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, মার্কেটিং পেশাজীবী এবং শিক্ষার্থীগণ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। সভাপতিত্ব করেন মার্কেটার্স ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক মীজানুর রহমান।
মার্কেটিং ডে’র আলোচনা অনুষ্ঠানে টেকসই মার্কেটিং এবং একাডেমিয়া- ইন্ডাস্ট্রি সংযোগ সাধনের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। সম্মেলনের সনাপনী প্যানেল আলোচনা সভায় মডারেটর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহ্ আজম।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও ইন্ডাস্ট্রিগুলোর মধ্যে সমন্বয়সাধন জরুরি। শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন, নূতন কারিকুলাম প্রবর্তনসহ আমাদের যে বিষয়ে পাঠদান চলছে সেগুলোর কনটেন্টে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। নতুন কনটেন্ট এডপ্টের ক্ষেত্রে, যুগচাহিদা, দেশ ও বিদেশের বাজার ব্যবস্থা প্রভৃতির প্রতি লক্ষ্য রাখা দরকার। এই কাজটি করা গেলে, শিক্ষিত বেকারের হার অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে এবং কোম্পানিগুলোর যে হতাশা, তাও কমবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন
। যে মৌলিক বিষয়গুলো পেশাগত কাজের জন্য প্রথমিকভাবে প্রয়োজন হয়, যেমন, কমিউনিকেশন ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা এবং এনালিটিক্যাল স্কিলসহ সফ্ট স্কিল, তা কিভাবে গ্রাজুয়েটগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন থেকে আয়ত্ব করতে পারে সেবিষয়গুলোর প্রতি সম্মিলিতভাবে মনোযোগ দেয়া দরকার। ব্যবহারিক শিক্ষা রয়েছে এমন ধরনের কোর্সের প্রবর্তন ও চর্চা এবং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কিত একাধিক কোর্স ক্যারিকুলামে যুক্ত করাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষাদান পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
এই প্যানেল আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের বাস্তব জ্ঞান অর্জনের প্রতি। প্রথাগত মুখস্থ নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে দক্ষতা অর্জন ও বাস্তব প্রশিক্ষণ এবং ইনটার্নশিপ এর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যে ইন্টার্নশিপ প্রদান করে তার গুণগত মানের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে একটি মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি সুযোগ তৈরি করা উচিত। সে ক্ষেত্রে মার্কেটারস ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশ এবং সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তিনি মনে করেন। জাতীয়ভাবে ইন্টার্নশিপ প্রদান এবং ইন্টার্নশিপ ব্যবস্থাপনার সহায়ক নীতিমালাসহ এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা তিনি উল্লেখ করেন। এটি সম্ভব হলে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা যে স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্প করেছেন সেই স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট নাগরিক, বাংলাদেশের সুযোগ্য জনসম্পদ, তৈরীর যে সংকটটি অনুমিত হচ্ছে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, ১২ অক্টোবর মার্কেটিং ডে উপলক্ষে বাংলাদেশের সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকমণ্ডলী আনন্দ উদযাপন, কেক কর্তন ও শোভাযাত্রা করে উদযাপন করেন। এছাড়াও সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর সমন্বয়ে চারটি আঞ্চলিক, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চল, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চল, এবং ঢাকা ও ময়মনসিংহ অঞ্চল, অনলাইন সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে এই ওয়েবিনারসমূহ আধুনিক জ্ঞান, প্রজ্ঞা, প্রযুক্তিগত ও শিক্ষাদানের পদ্ধতিগত ধারনা বিনিময়ে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মার্কেটারস ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশ (এমআইবি)-এর পক্ষে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে মার্কেটিং ডে’র উৎসব ও সেমিনার আয়োজনে সমন্বকের দায়িত্ব পালন করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম। মার্কেটারস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ -এর সভাপতি ও সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন যথাক্রমে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ মিজানুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম দুলু।
আরও পড়ুন
এইচএসসির ফল প্রকাশ শিগগিরই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে: বেরোবি উপাচার্য
তিন মাস পর ক্লাসে ফিরলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা