September 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, November 7th, 2023, 8:04 pm

লালমনিরহাটে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে ২০ হাজার মানুষ

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতুলি মালদাহা নদীতে সেতু না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের।

নদীটি পারাপারে নৌকা ব্যবহার করতে হয় স্থানীয়দের। সেতু না থাকায় শিক্ষার্থীসহ ৩ ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা নৌকা। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে মালদাহা নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের।

প্রতিয়িত ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হচ্ছেন স্কুল-কলেজ, মাদরাসার কয়েক শত শিক্ষার্থী, ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও।

এলাকাবাসীরা জানান, গত কয়েক বছরে একাধিকবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলীরা এসে মাপযোগ ও মাটি পরীক্ষার কাজ করলেও বাস্তবে কোনো ফল পাচ্ছেন না গ্রামবাসীরা।

তারা দাবি জানান, মহিষতুলির মালদাহা নদীর উপর সেতু নির্মাণ হলে চলাচলে সুবিধার পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।

স্থানীয় বাসিন্দা মুরাদ মিয়া বলেন, ‘সেতু না থাকায় আমরা ব্যাপক ভোগান্তিতে আছি। আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতুলি, ফলিমারী, দুলালী ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর, উত্তর গোবধা, শঠিবাড়ী এবং পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের লোহাকুচি এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ নিয়মিত চলাচল করেন।’

তিনি আরও বলেন, সেতু না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কৃষকের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে যাওয়ার সমস্যা হয়, তাই তারা ন্যায্য মূল্য পান না। শিক্ষার্থীসহ এই পথে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। সেতু নির্মাণ হলে চলাচলে দুর্ভোগ কমার পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।

লোহাকুচি থেকে শঠিবাড়ী নিয়মিত যাতায়াত কারী মোসলেম উদ্দিনের সঙ্গে প্রতিদেকের দেখা হলে তিনি বলেন, লোহাকুচি থেকে শঠিবাড়ী যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি, আমাকে এ রাস্তা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজে নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু মালদাহা নদীতে সেতু না থাকায় অনেক কষ্ট হয়। বিশেষ করে বর্ষাকালে দুর্ভোগের শেষ থাকে না।

তিনি আরও বলেন, ‘মালামাল পরিবহন করতে হলে ২৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। এতে আমাদের সময় ও অর্থের ক্ষতি হচ্ছে। এই নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে ৩ ইউনিয়নের ২০ হাজারের অধিক মানুষের শ্রম ও অর্থ বেঁচে যাবে।’

দুলালী এলাকার বয়োঃবৃদ্ধ আমজাদ আলী বলেন, কয়েক বছর থেকে শুনছি, সেতু হবে, বুড়ো হয়ে গেলাম সেতুটি আর দেখে যেতে পারব কি না জানি না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একাধিকবার বলছেন যে সেতু হবে, কিন্তু সেতু হবে হবে করে আর হচ্ছে না। আমরা ফসল এক স্থান থেকে অন্য স্থানের বাজারে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তি হয়। সঠিক সময়, সঠিক দামে বিক্রি করতে পারি না।

তিনি আরও বলেন, ‘সেতু না থাকায় অনেক কষ্টে চলাচল করতে হয়। আমাদের এলাকাবাসীর দাবি আমরা এই মালদাহা নদীর উপর একটি ব্রিজ চাই। তাহলে আমাদের আর ২৫ কিলোমিটার ঘুরে চলাচলে করতে হবে না।’

আদিতমারী উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণের ভোগান্তি নিরসনে স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিষতুলি মালদাহা নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য সুপারিশপত্র দিয়েছেন। সেতু নির্মাণের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’

—-ইউএনবি